shono
Advertisement

Breaking News

Investing

বিনিয়োগের গোড়ার কথা: প্রোটেকশন ফার্স্ট

কিছু বিষয়ের দিকে কড়া নজর থাকলে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মোটের উপর যথাযথ হতে পারে।
Published By: Biswadip DeyPosted: 02:03 PM Nov 25, 2025Updated: 02:03 PM Nov 25, 2025

ইনভেস্টর তাঁর গোটা বিনিয়োগ সময়কালে যা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তার সবক’টিই সেরা কিংবা ত্রুটিহীন হবে, এ কথা জোর দিয়ে বলা মুশকিল। কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ের দিকে কড়া নজর থাকলে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মোটের উপর যথাযথ হতে পারে। কীভাবে? সেই সন্ধানই সঞ্চয়-এর জন‌্য তাঁর প্রথম লেখায় দিলেন সুব্রত পাল

Advertisement

দোষ-গুণ মিলিয়ে ইনভেস্টর। তিনি টাকা পয়সা সংক্রান্ত যা-ই করেন না কেন, তার রেশ অনেক দিন পর্যন্ত থাকে। তঁার কিছু পদক্ষেপ একেবারে যথাযথ হতে পারে, আবার কিছু সিদ্ধান্ত ভুল পথে তঁাকে চালিত করতে পারে। আমার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আজকের লেখায়, আপনাদের জন্য প্রথম বার, আমি সাধারণ কিন্তু প্রয়োজনীয় কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরছি এই প্রসঙ্গে। গোড়াতেই বলি আমি কয়েকটি সম্ভাব্য ভুলের তালিকা তৈরি করেছি, আর এই নিয়েই আলোচনা করতে চাই।

দেখুন, সাধারণ মানুষ যখন বিনিয়োগ করেন, তখন তিনি নানা ধরনের প্রকল্প বেছে নেন। স্টক, ডেট, কমোডিটি ইত্যাদির মধ্যেই সেগুলি থাকে। তিনি শেয়ার মার্কেট (বা ইকু‌্যইটি ফান্ড) নিয়ে ভাবতেই পারেন, কিন্তু তার আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটা ভুলে গেলে চলবে না। আর তা হল ‘Protection First’। তার মানে, নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে তঁাকে গোড়াতেই ভাবতে হবে।

যদি হঠাৎ আজ ইনকাম বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বিনা উপার্জনে আপনার পরিবার কয় মাস টিকে থাকতে পারবে? দুই মাস? তিন মাস? না কি তার কম? আর যদি হঠাৎ আচমকা হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, তখন কী করবেন? আসলে, এটাই ভারতের কোটি কোটি পরিবারের সত্যিকারের ‘Pain Point’। হঁ‌্যা, তঁারা অবশ্যই বিনিয়োগ করতে চান। কিন্তু প্রথমে তার Financial Foundation, মানে আর্থিক ভিত্তি, গড়ে তুলতে পারেন না। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি যে হেলথ ইনসিওরেন্স কেবলমাত্র হাসপাতালের বিল মেটানো নয়, এটা এক ধরনের মানসিক শান্তি।

বাস্তব বড়ই রূঢ়। আজকের দিনে একটা বড় গোছের অসুখের খরচ ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকার বেশি। তাই, দ্বিধা না করে, একটা ভাল হেলথ পলিসি নিন। মনে রাখবেন, এখানে সংশ্লিষ্ট বিমা কোম্পানিরও দায় থাকবে, তা শুধুমাত্র আপনি বহন করবেন না।

এ কথা নিশ্চিত জানেন যে, আজ অনেক হেলথ ইন্সিওরেন্স কোম্পানি খুব সামান্য প্রিমিয়ামের বিনিময় ৫ বা ১০ লক্ষ টাকার কভারেজ দিয়ে থাকে। আমার মতে এই ব্যাপারটা খুব জরুরি, এবং কল্যাণমূলকও বটে। তার কারণ, স্বাস্থ্য বিমা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য একটা ঢাল। ঝড়ের মোকাবিলা করার জন্য ভালো ভাবে ব্যবহার করা যায়।

আর টার্ম ইনসিওরেন্স? এটা আপনার পরিবারের আর্থিক ছাতা হিসাবে দেখুন। এমন ছাতা থাকার তাৎপর্য যথেষ্ট। আপনি না থাকলেও আপনার সন্তান পড়াশোনা করবে, আপনার পার্টনার বা বাবা-মা অর্থকষ্টে পড়বেন না।

এবার এই নিয়ে আর একটা কথা বলি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনার বর্তমান আয়ের কুড়ি গুণ জীবন বিমা থাকা প্রয়োজন। হঠাৎ পরিবারের প্রিয়জন বিয়োগের ব্যথাটা থেকে যায় কিন্তু সব থেকে বড় সমস্যা এসে দাঁড়ায় নিয়মিত অর্থের জোগান বন্ধ হয়ে যাওয়া। এটা নিশ্চয় মানবেন?

অন্য প্রসঙ্গে যাই, এমার্জেন্সি ফান্ড নিয়ে জানাই। জীবনে সব কিছুই পরিকল্পনা মতো চলে না। চাকরি হারানো, গাড়ির অ্যাকসিডেন্ট, হঠাৎ চিকিৎসা–এ সব তো জলভাত, যখন তখন হতে পারে। তাই অন্তত ৬ মাসের খরচ সমান একটি জরুরি তহবিল (Emergency Fund) রাখুন।

উদাহরণ দিই। যদি আপনার মাসিক খরচ ২৫,০০০ টাকা হয়, তাহলে অন্তত ১.৫ লক্ষ টাকা রাখুন আলাদা ভাবে। লিকুইড ফান্ড এই বিষয়ে খুব কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। এই ধরনের ফান্ড আপনাকে রক্ষা করবে সেই সময়, যখন সবাই পাশ ফিরিয়ে নেবে কিন্তু টাকাই হবে আপনার একমাত্র সহায়। কথাটা সোজাসুজি পাড়লাম, তর্ক বিতর্ক হবে জেনেও। এই প্রসঙ্গটা এড়িয়ে গেলে, আপনি আর্থিক ভাবে সবসময় ভয়ে থাকবেন। কিন্তু একবার এমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করলে, আপনার আত্মবিশ্বাস অন্য মাত্রায় চলে যাবে।

ইনসিওরেন্স আর এমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি হওয়ার পরই শুরু করুন নিজের সম্পদ গঠনের যাত্রা। সিপ করুন ভালো মিউচুয়াল ফান্ডে। নিয়মিত চলুক, টপ আপ করুন, দীর্ঘ মেয়াদের উপর জোর দিন। এখানে কিন্তু মনে রাখতে হবে যে ইনভেস্টিং মানে অন্ধ বিশ্বাসে মার্কেটে ঢুকে পড়া নয়। বরং প্ল্যান করে গোলস অনুযায়ী বিনিয়োগ করা। এই ধরনের নিয়ম মানলে আপনি শুধু অর্থবান হবেন না। শান্তি, সুরক্ষা ও স্বাধীনতা–এই তিন পরম সত্য আপনার হাতের নাগালে আসবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ইনভেস্টর তাঁর গোটা বিনিয়োগ সময়কালে যা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তার সবক’টিই সেরা কিংবা ত্রুটিহীন হবে, এ কথা জোর দিয়ে বলা মুশকিল।
  • কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ের দিকে কড়া নজর থাকলে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মোটের উপর যথাযথ হতে পারে।
  • জীবনে সব কিছুই পরিকল্পনা মতো চলে না। এমার্জেন্সি ফান্ডের দিকে তাই খেয়াল রাখতে হবে।
Advertisement