এক নয়। একাধিক কারণ রয়েছে ইদানীং ক্যাপিটাল মার্কেট ইনফ্রাস্ট্রাকচার নিয়ে ইনভেস্টমেন্ট মহলে আগ্রহ বৃদ্ধির নেপথ্যে। একদিকে যেমন লেনদেনে বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে নানা সংস্থার যে সমস্ত শেয়ার তালিকাভুক্ত হচ্ছে, তাদের ট্রেডিং ভল্যুম ঊর্ধ্বগামী। পাশাপাশি মিলছে লাভের সূত্রও। এই নিয়ে আলোকপাত করলেন লগ্নি পরামর্শদাতা নীলাঞ্জন দে
ক্যাপিটাল মার্কেট ইনফ্রাস্ট্রাকচার। বিষয়টা খুব নতুন না হলেও, ইদানীং ইনভেস্টররা এই নিয়ে নড়েচড়ে বসছেন। কারণটা অবশ্যই ন্যায্য। ক্যাপিটাল মার্কেটে লেনদেন বাড়ছে তো বটেই। বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার লিস্টেড হয়ে চলেছে। সেগুলোর ট্রেডিং ভল্যুম বেশ উঁচুর দিকে। ক্যাপিটাল মার্কেটকে পরিষেবা দিচ্ছে, এমন সংস্থার সংখ্যাও চোখে পড়ার মতো ইদানীং। আর ভ্যালুয়েশনের নিরিখে ইনভেস্টররা লাভবানও হচ্ছেন। সঙ্গের চার্টে কয়েকটি বিশেষ ক্ষেত্রের তালিকা দিলাম। পরের চার্টগুলোতে নির্দিষ্ট স্টকের সূত্র পাবেন, অবশ্যই কোনওরকম পক্ষপাতদুষ্ট থাকার প্রশ্নই ওঠে না আমাদের ক্ষেত্রে।
এবার একগুচ্ছ ছোটবড় সংস্থার নাম তালিকাভুক্ত করা যাক। বিশেষভাবে চিহ্নিত করার উদ্দেশ্য একটাই – পাঠকদের এই শ্রেণীর স্টকগুলোর সঙ্গে পরিচিতি বাড়ানো। বলা বাহুল্য, লগ্নি সম্বন্ধীয় সব সিদ্ধান্ত তাঁদেরই স্বতন্ত্রভাবে নিতে হবে। সার্বিক ভাবে বলা চলে যে সম্প্রতি হাতে পাওয়া পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে, বিনিয়োগ এইসব স্টকের ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং এক শ্রেণির ইনভেস্টর এইসব ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। দেশে ফিনান্সিয়ালাইজেশন বাড়ছে, ক্যাপিটাল মার্কেটে অ্যালোকেশনও ক্রমবর্ধমান, সাধারণ মানুষ ডিপোজিটে জমা না রেখে মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করতে চাইছেন। ব্যবসার পরিধি বাড়ছে বিভিন্ন ব্রোকিং ফার্মের, এছাড়াও নানা এক্সচেঞ্জ তথা ডিপোজিটরির পরিষেবার উন্নতি হচ্ছে দ্রুত।
CHART
এখানে চলে আসে সম্প্রতি ঘোষিত ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিজস্ব Nifty Capital Markets Index। এর লক্ষ্য পরিষ্কার। নিফটি ৫০০ থেকে বিশেষভাবে ক্যাপিটাল মার্কেটের সম্পর্কিত সংস্থার স্টক বেছে নিয়ে একটি সূচক তৈরি করা। ঘটনাচক্রে পুরনো টাইমলাইনের নিরিখে, এই সূচকের গ্রোথ দেখলে বোঝা যাবে কিভাবে ভ্যালুয়েশনের উন্নতি হয়েছে। নিচের পয়েন্টগুলো দেখুন :
১. গত পাঁচ বছরেরর প্রাইস রিটার্ন : ৩৩%
২. গত এক বছরের প্রাইস রিটার্ন : ১০২%
এর অর্থ খুব সরল। গত একবছরে যদি কেউ ওই ইনডেক্সটি কিনে হোল্ড করে থাকেন, তাঁর টাকা দ্বিগুণ হয়েছে। মনে রাখা উচিত এখানে “historical performance’’ নিয়ে কথা হচ্ছে– তার মানেই যে ভবিষ্যৎ একই ভাবে উন্নতমানের হবে তা কখনই নয়।
৩. সূচকে কতগুলো স্টক: ১৫
৪. কবে থেকে শুরু: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪
৫. রিব্যালেন্সিং: বছরে দুবার
৬. ইনডেক্সের প্রাইস-আর্নিংস রেশিও : 45.93
৭. ইনডেক্সের প্রাইস-বুক ভ্যালু রেশিও : 12.91
কোনও পক্ষপাত ছাড়াই তিনটি (কেবল উদাহরণ হিসাবে দেখবেন) আলাদা-আলাদা রকমের স্টক বেছে নিলাম আমরা।
CDSL (Central Depository Services (India) Ltd)
HDFC AMC
360 One Wam
CDSL: এক বছর (৪ অক্টোবর)
দাম : Rs 1399.15
গ্রোথ : 53.85% ইয়ার টু ডেট
৫২ সপ্তাহের হাই এবং লো : Rs 1664.40/Rs. 631.00
দেশের সবথেকে বড় ডিপোজিটরি, সর্বাধিক ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে CDSL পরিষেবার মাধ্যমে।
HDFC AMC
দাম : Rs 4,230.55
গ্রোথ : 31.38% ইয়ার টু ডেট
৫২ সপ্তাহের হাই এবং লো : Rs 4,546.20/Rs. 2618.00
দেশের অন্যতম বড় এবং লাভজনক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা, ১৯৯৯ থেকে ব্যবসায় বিশাল পরিমাণে অ্যাসেট এই সংস্থার পরিচালনায় রয়েছে।
360 ONE WAM
দাম : Rs. 1,000
গ্রোথ : 42.38% ইয়ার টু ডেট
৫২ সপ্তাহের হাই এবং লো : Rs 1,215.00/Rs. 487.55
দেশের অগ্রণী ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট প্লেয়ার হিসাবে পরিচিত, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পরিষেবা দিচ্ছে বহু ইনভেস্টরদের।
এখানে বলে রাখা ভাল যে ক্যাপিটাল মার্কেট সম্বন্ধীয় স্টক অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু মিউচুয়াল ফান্ডের পোর্টফোলিওর মধ্যেও উপস্থিত আছে বলে দেখা যাচ্ছে। কয়েক সময় ব্যাঙ্কিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস ফান্ডগুলোতে এই জাতীয় স্টক বেশ কিছু আছে, এমনও পরিষ্কার। উদাহরণ হিসাবে আমরা কোটাক মিউচুয়াল ফান্ডের পরিচালিত Kotak Banking & Financial Services Fund-এর দৃষ্টান্ত দেখতে পারি। সাম্প্রতিক ফ্যাক্টশিট অনুযায়ী, যে স্টকগুলো এই ফান্ডের মধ্যে উপস্থিত, সেগুলো হল :
১.360 One WAM (2.19%)
২. Nippon India Asset Management (2.06%)
৩. Aditya Birla Sunlife AMC (1.56%)
৪. Motilal Oswal Financial Services (0.95%)
এছাড়াও, সরাসরি না হলেও লিস্টেড ইনসিওরেন্স সংস্থার স্টক নিয়েও উৎসাহী হয়েছেন ইনভেস্টরদের একাংশ। তিনটি নাম ঘুরেফিরে উঠে আসছে, যদিও ইনসিওরেন্স সেক্টর থেকে একাধিক নতুন প্লেয়ার জনপ্রিয়তা লাভ করছে। এই তিনটি নাম হল :
SBI Life Insurance, ICICI Lombard General Insurance এবং HDFC Life Insurance.
উপরোক্ত দৃষ্টান্তে (কোটাকের ফান্ডটি) এই তিন বিমা সংস্থার স্টকও উপস্থিত আছে। তবে মূলত ব্যাঙ্ক স্টকই প্রধান, এবং ক্যাপিটাল মার্কেট সংস্থার তালিকায় স্বাভাবিক ভাবেই ব্যাঙ্কের উপস্থিতি নেই। সঙ্গের তালিকায় রিটার্নের কয়েকটি তথ্য দেওয়া হল: