সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আয় করছেন। প্রত্যেক মুহূর্তে খরচও করছেন। কিন্তু সংসার খরচ, নিজের চাহিদা পূরণে ব্যস্ত থাকতে থাকতে ভুলে গিয়েছেন ভবিষ্যতের কথা! ভাবার সময়ও পাননি কীভাবে চলবে আগামী দিন! আপনার বৃদ্ধ বয়সে সঙ্গ দেবে কে? টাকা না থাকলে কী করবেন আপনি! সরকারি চাকরি ছাড়ুন, বেসরকারি অথবা যেকোনও কাজ না থাকলে বেজায় বিপদে পড়েন বহু। আর্থিক অনটনের মধ্যেই প্রশ্ন ওঠে আপনার আচমকা না থাকার পরে কী হবে? সন্তান-সন্ততি অথবা প্রিয়জনদের কী হবে তারপর!
ঠিক এখানেই রয়েছে মুশকিল আসান! রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উদ্যোগে রাজ্য সরকারের তরফে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (Lakshmir Bhandar) , স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi), কৃষকবন্ধু, যুবশ্রী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজসাথী, বৃদ্ধভাতা, বিধবাভাতা, লোকপ্রসার প্রকল্প, জয় জোহর, মানবিক, সমব্যথী -সহ একাধিক প্রকল্প তো আছেই, এর সঙ্গেই কেন্দ্রের তরফেও রয়েছে একাধিক প্রকল্প বা বিমার (Policy) ব্যবস্থা। যা আপনার ভবিষ্যতের চিন্তা কমিয়ে দিতে পারে খুব কম খরচেই! একাধিক বিমা, যা অতি সহজেই খানিকটা চিন্তামুক্ত করতে পারে আপনাকেও।
[আরও পড়ুন: কমছে স্বাদ, বাড়ছে বিপদ! ভোজনরসিকদের ‘তাণ্ডবে’ সংকটে ইলিশের ভবিষ্যৎ]
প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা (Pradhan Mantri Jan Dhan Yojana – PMJDY)- এই প্রকল্পে মূলত সব স্তরের মানুষকে ব্যাংকিং পরিষেবার আওতায় আনা হয়। ‘জিরো ব্যালান্সে’র (Zero Balance Bank Account) ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সমস্ত লেনদেনের ক্ষেত্র হিসেবে এই প্রকল্প চালু করা হয়। যেখানে ন্যূনতম ব্যাংক ব্যালান্সের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলেই যেকোনও ভারতীয় নাগরিক দেশের সব ব্যাংকের সব শাখায় এই প্রকল্পে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী জীবনজ্যোতি যোজনা (Pradhan Mantri Jeevan Jyoti Bima Yojana – PMJJBY)- এই বিমার মাধ্যমে দুর্ঘটনা অথবা যেকোনও কারণে মৃত্যুর পরে ২ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়। বিমা গ্রহীতার মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারকে এই টাকা দেওয়া হয়। ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সি যে কেউ, যে কোনও ব্যাংকের শাখায় গিয়ে এই বিমা করাতে পারেন। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী জীবনজ্যোতি যোজনার জন্য বার্ষিক ৩৩০ টাকা দিতে হলেও এখন তার পরিমাণ হয়েছে ৪৩৬ টাকা। বছরে নামমাত্র এই টাকায় মেলে বিরাট সুবিধা।
[আরও পড়ুন: ভাঙছে মিথ, কার্বলিকে ভয় পায় না সাপ! বাঁধনেই বাড়ে মৃত্যুর সম্ভাবনা, কী করলে বাঁচবে জীবন?]
প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা (Pradhan Mantri Suraksha Bima Yojana -PMSBY) – এই বিমা করাতে পারবেন ১৮ থেকে ৭০ বছর বয়সের যে কেউ। বছরে মাত্র ২০ টাকা প্রিমিয়ামের বিনিময়ে পাওয়া যাবে ২ লক্ষ টাকার সুবিধা। বিমাকারীর দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু হলে তাঁর নমিনিকে ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয় এই বিমায়। যা করা যায় একই ভাবে, যে ব্যাংকে আপনার অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেই শাখায় গিয়ে সহজেই করে ফেলা যায় এই বিমা।
অটল পেনশন যোজনা (Atal Pension Yojana -APY) – ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে এই প্রকল্পের আওতায় আসা সম্ভব। বয়স এবং ৬০ বছর বয়সের পর থেকে মাসিক প্রাপ্য অনুয়ায়ী ইন্সটলমেন্টের তারতম্য হয়। এর জন্য। ৬০ বছর বয়সের পর থেকে মাসিক ১, ২, ৩, ৪, ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে। যোজনার অন্তর্ভূক্ত কারওর আকস্মিক মৃত্যু হলেও তাঁর নমিনি চালাতে পারেন এই যোজনা। না চালালে জমানো টাকা ফেরৎ পাবেন তিনি। অ্যাকাউন্ট রয়েছে এমন ব্যাংকের শাখায় গিয়ে করা যায় এই যোজনা। ধরা যাক, আপনার বয়স এখন ৩০ বছর। এই সময় আপনি যদি মাসিক পেনশন (৬০ বছর বয়সের পরে) ২০০০ টাকার জন্য এই প্রকল্প করান, তাহলে আপনার মাসিক ইন্সটলমেন্ট হবে ২৩১ টাকা! এভাবেই চলে এই যোজনা।
স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া স্কিম (Stand Up India Scheme) – এই প্রকল্পে তপশিলি জাতি, উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য থাকে ঋণের ব্যবস্থা। যা স্বনির্ভর অথবা যে কোনও ব্যবসায়িক কাজে লাগানো যায়।
প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা (Pradhan Mantri Mudra Yojana) – মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য কম সুদে ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া যায় এই প্রকল্পের আওতায়।
প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা (Pradhan Mantri Kaushal Vikas Yojana – PMKVY) – এই প্রকল্পে কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণের জন্য পাওয়া যায় ঋণ-সাহায্য।
এছাড়াও রয়েছে আয়ুষ্মান ভারত (Ayushman Bharat) , প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা-সহ একাধিক প্রকল্প যা রাজ্যের তরফে দেওয়া একাধিক সুযোগের সঙ্গেই কাজে লাগাতে পারেন আপনিও।