shono
Advertisement

Breaking News

AIF Investment

বিনিয়োগে নতুন ভাবনা, দরকার সুযোগ্য সারথিরও

এআইএফ-এ সব সময় যে ঝুঁকি প্রবল ভাবে বেশি হবে তা সত্য নয়।
Published By: Subhodeep MullickPosted: 06:42 PM Dec 01, 2025Updated: 07:20 PM Dec 01, 2025

এআইএফ কী, জানেন? এর পুরো নাম হল অল্টারনেটিভইনভেস্টমেন্ট ফান্ড। ঝুঁকির পরিমাণ বেশি হলেও এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীকে বিনিয়োগও করতে হয় বেশি, আর মুনাফা লাভের সম্ভাবনাও থাকে বেশির দিকে। শুধু এগোতে হলে পাশে দরকার সঠিক পরামর্শদাতা। লিখছেন পার্থ প্রতীম চট্টোপাধ্যায়

Advertisement

দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীরা মিউচুয়াল ফান্ড বা সরাসরি শেয়ারে বিনিয়োগ করার পরও চান বিনিয়োগে কিছুটা বৈচিত্র্য। আবার তেমন বৈচিত্র্য আনতে গিয়ে ভুল জায়গায় বিনিয়োগ করাটা বিনিয়োগকারীর কাছে মোটেই সুখকর নয়। কিন্তু ইনভেস্টমেন্টের মনস্তত্ত্ব অনুযায়ী বিনিয়োগকারীও চান মিউচুয়াল ফান্ডে দীর্ঘদিন ধরে লগ্নি করে যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ তৈরি করার পর কিছুটা সংগতিপূর্ণ ঝুঁকি নিয়ে তাঁর নিজের বিনিয়োগকে ডাইভারসিফাইড করে মুনাফা বাড়াতে।

এই দুইয়ের মন্থনেই উঠে আসে AIF। পুরোটা বলতে হলে, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড। এখানে একদিকে যেমন ঝুঁকির পরিমাণ একটু বেশি থাকে তেমনি বিনিয়োগকারীকে বিনিয়োগও করতে হয় অনেকটা। আবার মুনাফা লাভের সম্ভাবনাও থাকে অনেকটা উঁচুর দিকে।

সব দিক দিয়ে দেখতে গেলে এই ধরনের প্রোডাক্ট উপযোগী HNI-দের (অথবা হাই নেটওয়ার্থ ইন্ডিভিজুয়াল) জন্য। কারণ এখানে সাধারণ মিউচুয়াল ফান্ডের তুলনায় ঝুঁকির পরিমাণও যেমন থাকে অনেকটা বেশি তেমনি এককালীন অনেকটা পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগকারীকে বিনিয়োগ করতে হয়। বর্তমানে এর পরিমাণ এক কোটি টাকা।

অবশ্য অনেক এআইএফ আছে যেখানে এককালীন এই এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হয় না। সে ক্ষেত্রে ফান্ড ম্যানেজার তাঁর ফান্ড ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়া এবং বিনিয়োগের সুযোগ পাওয়ার উপর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগকারীর থেকে সংগ্রহ করার জন্য কল করেন। এক্ষেত্রে কত দিন ছাড়া ছাড়া ফান্ড ম্যানেজার বিনিয়োগকারী থেকে বাকি টাকা নেবেন তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে ফান্ড ম্যানেজারের উপর।

বলে রাখা ভাল যে AIF-এ সব সময় যে ঝুঁকি প্রবল ভাবে বেশি হবে তা সত্য নয়। এটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে যে ফান্ডে বিনিয়োগ করা হচ্ছে তার প্রকৃতির উপর। কিছু কিছু AIF আছে যেখানে ঝুঁকির পরিমাণ থাকে তুলনায় নগণ্য। অর্থাৎ ফান্ডের ‘ডাউন সাইড রিস্ক’ কিছুটা সীমিত। তার মানে বাজারের পতন সেই ভাবে প্রভাবিত করে না ফান্ডের রিটার্নকে। তেমনি এই ধরনের ফান্ড আবার বাজারের উত্থানকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে মুনাফা ঘরে তোলার চেষ্টা করে। ফলে দুই দিক থেকেই এই ফান্ডগুলি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

মিউচুয়াল ফান্ডের পরিভাষায় এই ধরনের ফান্ড কিছুটা ব্যালেন্সড অ্যাডভান্টেজ ধরনের। এই ধরনের AIF-এ ফান্ড ম্যানেজাররা একদিকে যেমন বাজারের ভাল সময়ে লিভারেজের মাধ্যমে বেশি মুনাফা বানানোর চেষ্টা করে আবার অন্যদিকে বাজারের পতনের সময় ডেরিভেটিভের মাধ্যমে ফান্ডের ন্যাভের পতন রোধ করার চেষ্টা করে। ফলে এই ধরনের প্রোডাক্টের মাধ্যমে আপনি ইকু‌্যইটি এবং ডেরিভেটিভ এই দুইয়ের সমন্বয় পেয়ে যাবেন। ফান্ড ম্যানেজাররা তাদের দক্ষতার মাধ্যমে এই দুইয়ের যথাযথ সমন্বয় এনে বিনিয়োগকারীর কাছে উপযোগী করে তুলেছেন এই জাতীয় প্রয়াসকে।

অনেকে প্রশ্ন করেন, কে বিনিয়োগ করবেন এই ধরনের প্রকল্পে? এর উত্তরে বলা যায়, যিনি ঝুঁকি নিতে সক্ষম তিনিই আসতে চাইবেন। মনে রাখবেন, বিনিয়োগের পরিমাণ এককালীন এক কোটি টাকা। অর্থাৎ বাজারের ভাষা অনুযায়ী HNI ক্লায়েন্টরা বিনিয়োগ করতে পারেন। এখানে আর একটা কথা বলি। আপনার বিনিয়োগকে রাখতে হবে দীর্ঘকাল ধরে -- তাহলেই আপনি একটু ঝুঁকি নিয়ে, ভালো রিটার্নের প্রত্যাশা করতে পারেন।

AIF সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে, ক্যাটাগরি ওয়ান, ক্যাটাগরি টু এবং ক্যাটাগরি থ্রি। সাধারণত স্টার্টআপ কোম্পানিগুলিতে বিনিয়োগ করে ক্যাটেগরি ওয়ান এআইএফ। ক্যাটাগরি টু হল বন্ড এবং ইকু‌্যইটির মেলবন্ধন। সাধারণভাবে মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগকারীরা যেটিকে হাইব্রিড ফান্ড বলে জানে। কিছু কিছু ক্যাটাগরি টু আইএফ এখানে তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যও বজায় রাখে। ক্যাটাগরি থ্রি বর্তমানকালে জনপ্রিয় হয়েছে বিনিয়োগকারীদের কাছে, দেখতে পাই। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঝুঁকির পরিমাণ কমাতে কিংবা ভাল বাজারের সুযোগ নিয়ে রিটার্ন বাড়াতে এই ধরনের এআইএফ ডেরিভেটিভকে ব্যবহার করে।

এখন প্রশ্ন কীভাবে চিনবেন কোন AIF আপনার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে? এ ব্যাপারে অবশ্যই সাহায্য নিন আপনার বিনিয়োগ পরামর্শদাতার। AIF-এ বিনিয়োগের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। তবে প্রোডাক্ট যথেষ্ট প্রগতিশীল। তাছাড়া ঝুঁকি নেওয়ার সঙ্গে মুনাফার সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকে বলে বিনিয়োগের এই সফরে আপনার দরকার সুযোগ্য সারথীর। AIF-এর ক্ষেত্রে, বিনিয়োগ পরামর্শদাতাই হল আপনার যাত্রার সেই বিশেষ সঙ্গী।

লেখক: ডিরেক্টর, পেরেন্টস ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীরা মিউচুয়াল ফান্ড বা সরাসরি শেয়ারে বিনিয়োগ করার পরও চান বিনিয়োগে কিছুটা বৈচিত্র্য।
  • আবার তেমন বৈচিত্র্য আনতে গিয়ে ভুল জায়গায় বিনিয়োগ করাটা বিনিয়োগকারীর কাছে মোটেই সুখকর নয়।
  • কিন্তু ইনভেস্টমেন্টের মনস্তত্ত্ব অনুযায়ী বিনিয়োগকারীও চান মিউচুয়াল ফান্ডে দীর্ঘদিন ধরে লগ্নি করে যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ তৈরি করার পর কিছুটা সংগতিপূর্ণ ঝুঁকি নিয়ে তাঁর নিজের বিনিয়োগকে ডাইভারসিফাইড করে মুনাফা বাড়াতে।
Advertisement