বহুমুখিতার নিদর্শন মার্কেট ইকোনমিতেও আছে। মাল্টি অ্যাসেট ফান্ডের নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই? এই ধরনের ফান্ডে একইসঙ্গে ইকুইটি, ডেট, গোল্ড-সহ একাধিক ক্ষেত্রে অ্যালোকেশন করা হয়।একের বেশি অ্যাসেট ক্লাসে লগ্নি মানেই সমৃদ্ধির আশাও ‘ডবল’। তাই এই ধরনের ফান্ড নিয়ে আগ্রহও বর্তমানে বেড়েই চলেছে। তথ্য সংকলনে টিম সঞ্চয়
এক সঙ্গে ইকুইটি, ডেট এবং গোল্ড অ্যালোকেশন করতে চাইলে, একটি বিশেষ গোত্রের মিউচুয়াল ফান্ডের সাহায্য নিতেই পারেন আপনি। মাল্টি অ্যাসেট। নাম শুনেই এই ফান্ডের চরিত্র আন্দাজ করা যাচ্ছে, এই নিয়ে যথেষ্ট কৌতুহল আছে লগ্নিকারীদের মধ্যে। আজ অনেকেই এমন বিনিয়োগ করতে রাজি বলে মনে করেন পেশাদার উপদেষ্টারা। ‘সঞ্চয়’-এর পক্ষ থেকে আমরা খোঁজ নিয়ে তাই-ই দেখতে পেলাম। এই প্রসঙ্গে কিছু জরুরি কথা আগেভাগেই জানিয়ে রাখি।
#সহজ পদ্ধতি মেনে একাধিক অ্যাসেট ক্লাসে লগ্নি করা যাবে। ‘মাল্টি’ বলতে যে ছবি মনের মধ্যে ফুটে ওঠে তা একেবারে পরিষ্কার এই ক্ষেত্রে।
#সংশ্লিষ্ট ফান্ড ম্যানেজার ঠিক করে দেন কত শতাংশ অ্যাসেট কোথায় বিনিয়োগ করবেন তিনি। বাজারের পরিস্থিতি বুঝে তার অনুপাতে বদলাবে।
#ইদানীং উচ্চ হারে মুদ্রাস্ফীতির জমানায় এই জাতীয় ফান্ডের জনপ্রিয়তা অস্বীকার করা যায় না – বিশেষত যেখানে সোনায় বিনিয়োগ করবে সুযোগ খুঁজছেন ইনভেস্টররা। ইনফ্লেশনের জমানায় গোল্ড একটি ভাল ‘হেজ’ (hedge) বলে গণ্য।
#বাজারে বেশ কিছু মাল্টি অ্যাসেট ফান্ড ইদানীং উপস্থিত – সন্তর্পণে ঝাড়াই বাছাই করে নিতে হবে আপনাকে যখন লগ্নির সিদ্ধান্ত নেবেন। এই বিষয়ে আপনার পরামর্শদাতা বিশদ জানাতে পারবেন, তাই তাঁর সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করুন।
[আরও পড়ুন: পাশে আছে ‘Loan-মিত্র’, লগ্নির গাঙে এবার নির্ভয়ে ভাসান তরী]
‘সঞ্চয়’-এর পক্ষ থেকে আমরা বিভিন্ন মাল্টি অ্যাসেট ফান্ডের সাম্প্রতিক পোর্টফোলিও পরীক্ষা করে দেখলাম। এই মুহূর্তে প্রধানত ইকুইটির অংশই বেশি, চোখে পড়ার মতো। তার তুলনায় ডেটের ভাগ কম, তবে কমোডিটি (এখানে মূলত গোল্ডের কথাই বলা হচ্ছে) রয়েছে তার নিজস্বতা নিয়ে। উদাহরণ হিসাবে, কোনও পক্ষপাত ছাড়া, আমরা Nippon India Multi Asset Fund-এর কথা বলতে পারি। এখানে ৭৫% ইকুইটি এবং ১৩% কমোডিটি। বাকিটুকু ডেট এবং ক্যাশ দিয়ে গঠিত। ইকুইটির মধ্যে, বলে রাখা ভাল, লার্জ ক্যাপের উপস্থিতি নজর কাড়ে। এই অ্যালোকেশন নীতি থেকে ফান্ডের রিস্ক সম্বন্ধে নির্দিষ্টভাবে ধারণা করে নিতে পারেন।
তিন বছরে প্রায় ১৯% রিটার্ন এনে দেওয়া এই ফান্ডের পোর্টফোলিও ৬০% আছে ইকুইটিতে। এখানে লার্জ ক্যাপের ভূমিকা খুব উল্লেখযোগ্য। এই ধরনের ফান্ডে ১% এক্সিট লোডের শর্ত থাকে এক বছরের কম সময় যদি লগ্নি করে ইউনিট বিক্রি করেন ইনভেস্টর। এর ব্যতিক্রম এখানেও নেই।
মাল্টি অ্যাসেট ফান্ডের তালিকায় সর্বশেষ যোগ হয়েছে শ্রীরাম মিউচুয়াল ফান্ডের NFO, যা গত ১৮ই আগস্ট প্রাথমিক সাবস্ক্রিপশনের জন্য খুলেছিল। সংশ্লিষ্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সংস্থাটির নতুন ওপেন-এন্ড ফান্ডের উদ্দেশ্য ইকুইটি, ডেট, মানি মার্কেট ইনস্ট্রুমেন্টস, গোল্ড এবং সিলভার এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে বিনিয়োগ করা। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে অনগোয়িং ভিত্তিতে কেনাবেচা করা যাবে এই ফান্ডের ইউনিট। সংস্থার মতে এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর জন্য এমন বিকল্প যথেষ্ট আকর্ষণীয়। একত্রে অনেক ধরনের অ্যাসেট থাকে এই জাতীয় ফান্ড। তাই পরিকল্পিত উপায়ে ডাইভারসিফাই করা সম্ভব। সাধারণ ইনভেস্টর যদি চান, এককালীন লগ্নি করে পরে সিপের মাধ্যমে ধীরে ধীরে নতুন বিনিয়োগ করতে পারেন। লক্ষ্য, বড় মাপের তহবিল গড়ে বাজারের সম্ভাব্য উত্থানের সুবিধা নেওয়া। অবশ্য প্রত্যেকবারের মতো এখানেও রিস্ক সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার বলে জানানো হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: লগ্নির দুনিয়ায় সুযোগের সম্ভার, বাজাজ ফিনান্স দেখাচ্ছে দিশা]
আমাদের বেছে নেওয়া কয়েকটি মাল্টি অ্যাসেট ফান্ডের কথা এই চার্টে দেওয়া হল। এগুলি কোন মতেই ‘রেকমেন্ডেশন’ নয়, আমরা কখনওই তা দিই না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাই লগ্নিকারী হিসাবে নিজের উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে নেবেন।
Chart