স্টকের দাম বেড়েছে। হোল্ডিংয়ের ভ্যালুয়েশন বৃদ্ধি পাওয়ায় সন্তুষ্ট শেয়ারহোল্ডার এবং মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের মালিক, উভয়পক্ষই। করছাড়ের দিকে তাকিয়ে কীভাবে প্রফিট বুকিং করা যেতে পারে, তথ্য দিল টিম সঞ্চয়
প্রফিট বুকিং করতে ইচ্ছুক? স্টকের দাম তো ভালই বেড়েছে। শেয়ারহোল্ডার এবং মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের মালিক, দুপক্ষই খুশি, তাঁদের হোল্ডিংয়ের ভ্যালুয়েশন বাড়ছে বলে। লাভ ঘরে তুলতে চান যাঁরা, তাঁদের প্রশ্ন, ট্যাক্স কত দিতে হবে? কীভাবেই বা আয়করের অঙ্ক কষা হবে? আজ একঝলকে তার আলোচনা। মূলত ফান্ডের লগ্নির বিষয়ে আলোকপাত করা হচ্ছে এই প্রতিবেদনে।
শেয়ার ও ফান্ড, দুক্ষেত্রেই লাভের উপর ট্যাক্স বসবে সাধারণভাবে। শর্ট টার্ম গেনস এবং লং টার্ম গেনস, এই দুই মেয়াদের জন্য কত ট্যাক্স বসবে, সে বিষয়ে বুঝে নিন আগেভাগেই। বছরের শেষে অঙ্কটি কষতে গিয়ে যেন মনে না হয়, ‘ট্যাক্স সেভিংয়ের প্রসঙ্গটি যে ভুলেই গেছি!’
মিউচুয়াল ফান্ডের ট্যাক্সেশন
এখানে কেবল ইকুইটির কথা বলা হচ্ছে প্রথমে –
(১) যদি ফান্ডে ইকুইটির অংশ ৩৫%-এর থেকে কম হয়, তাহলে ডেট ট্যাক্সেশনের নীতি প্রযোজ্য হবে।
(২) ইকুইটির ভার যদি ৩৫% থেকে ৬৪% থাকে, তাহলে ডেটের সঙ্গে ইনডেক্সেশনের নিয়ম ঘাটবে।
(৩) যদি ইকুইটির অংশ ৬৫% বা বেশি হয়, তাহলে ইকু্যইটি ট্যাক্সেশনের নীতি বলবৎ হবে।
[আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিমায় ‘ক্লেম’ বাতিল হয় কেন? শর্তাবলীর জটিলতাই কি প্রধান কারণ]
ইকুইটি ট্যাক্সেশন
(ক) যদি হোল্ডিং পিরিয়ড এক বছরের কম হয়, তাহলে ক্যাপিটাল গেনসের উপর ১৫%।
(খ) যদি হোল্ডিং পিরিয়ড এক বছরের বেশি হয়। তাহলে ক্যাপিটাল গেনসের উপর ২০%।
উদাহরণ: মনে করুন আপনি আজ ১০০ টাকা লগ্নি করেছেন। তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকায়। যদি ১২ মাসের বেশি হয়, তাহলে আপনার ট্যাক্স হবে ৫০ টাকার ১০%, মানে ৫ টাকা। আর যদি ১২ মাসের কম হয় তাহলে তা হলে ৫০ টাকার ১৫%, অর্থাৎ ৭.৫০ টাকা।
ডেট ট্যাক্সেশন
এখানে আপনার নিজস্ব স্ল্যাব রেট প্রাসঙ্গিক হবে, আর ‘পিরিয়ড অফ হোল্ডিং’ গ্রাহ্য করা হবে না। তাই যদি ১০০ টাকার লগ্নি বেড়ে গিয়ে ১৫০ টাকা হয়ে যায় তাহলে ৫%, ১০%, ১৫%, ২০% আর ৩০%–যে ট্যাক্স স্ল্যাবই প্রাসঙ্গিক হোক না কেন, তাই-ই বলবৎ করা হবে। অতএব যদি আপনি সর্বোচ্চ স্ল্যাবে (মানে ৩০%) থাকেন, তাহলে আপনার জন্য ১৫ টাকা হল আয়করের পরিমাণ। পঞ্চাশ টাকার ৩০% এখানে মূল বিষয়।
ডিভিডেন্ডে কী ট্যাক্স হয়?
মনে রাখুন, মিউচুয়াল ফান্ডে পুরনো ডিভিডেন্ড প্ল্যানের নাম পরিবর্তিত হয়ে এখন ‘ইনকাম ডিস্ট্রিবিউশন কাম ক্যাপিটাল উইথড্রয়াল’ (IDCW) হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে।
ডিভিডেন্ডের ক্ষেত্রে স্ল্যাব রেট প্রাসঙ্গিক হবে। যদি আপনি সর্বোচ্চ স্তরের উপায়ী হন, তাহলে ৩০% ট্যাক্স দিতে হবে ডিভিডেন্ডের জন্য।
তার মানে, যদি আপনি দীর্ঘমেয়াদী লগ্নিকারী হয়ে থাকেন, আপনার জন্য IDCW একেবারেই কার্যকরী হবে না। আপনার দরকার গ্রোথ অপশন। ইকুইটির ক্ষেত্রে ১০% ট্যাক্স দিতে হবে লং টার্মের জন্য।
অনেক সময় ডেটের ক্ষেত্রে, লগ্নিকারীদের জন্য SWP (Systematic Withdrawal Plan) কার্যকরী বলে গণ্য হয় ডিভিডেন্ড (IDCW)-র তুলনায়।
[আরও পড়ুন: শুধু SIP নয়, SWP-ও করুন, রইল বিনিয়োগের বিস্তারিত পরিকল্পনা]
ট্যাক্স সেভিং করেছেন কি? ইকুইটি লিঙ্কড সেভিং স্কিম বেছে নিন।
- ELSS বা সাধারণভাবে ট্যাক্স সেভিং স্কিম আপনাকে সেকশন ৮০ সি’র সুবিধা দেবে। ট্যাক্স বাঁচানোর পক্ষে ELSS বেশ কার্যকরী পন্থা হিসাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এখানে যে বিষয়গুলি না জানলেই নয়, তার তালিকা করে দিলাম আমরা।
- তিন বছরের লক-ইন থাকে। তারপর ইচ্ছামতো বিনিয়োগকারী টাকা তুলতে পারবেন।
প্রয়োজন মনে করলে, তিন বছরের পরেও চালু অবস্থায় রেখে দিতে পারেন, বা আংশিকভাবে রিডেম্পশন করে নিতেও বাধা নেই।
- ELSS-এর প্রধান আকর্ষণ সেটির গ্রোথের সম্ভাবনা। ইকুইটি পোর্টফোলিও বজায় রাখেন সংশ্লিষ্ট ফান্ড ম্যানেজার। ডাইভারসিফাই করার চেষ্টা করেন তিনি। উদ্দেশ্য, ইনভেস্টরকে ভাল রকম গ্রোথ এনে দেওয়া।
- প্রতিটি ফান্ড হাউসেই ELSS পাবেন – বেছে নিতে পারেন ইচ্ছামতো। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চলুন। নিজের সামগ্রিক ট্যাক্স প্ল্যানিংয়ের কথা ভেবে বিনিয়োগ করবেন।