বড় মাপের ডিভিডেন্ড নিয়ে হালে উৎসাহ বাড়ছে লগ্নিকারীদের। এই আগ্রহের কথা মাথায় রেখেই বাজারে একগুচ্ছ ডিভিডেন্ডভিত্তিক পোর্টফোলিও তৈরি করা হয়েছে, যা ইতিমধ্যেই ইনভেস্টরদের নজরে পড়তে শুরুও করে দিয়েছে। ডিভিডেন্ড-নির্ভর ফান্ড কেন চয়ন করবেন, তারই আলোচনা টিম সঞ্চয়-এর এই লেখায়।
বড় মাপের ডিভিডেন্ড অনেক লগ্নিকারীরই প্রথম পছন্দ। নিয়মিত বিনিয়োগ করে, নিজের পোর্টফোলিওর অন্তর্গত করে, স্টক ধরে রেখে ডিভিডেন্ড কামাতে চান তাঁরা। বস্তুত, ‘ডিভিডেন্ড ইল্ড’ ভালো থাকলে ইনভেস্টররা সোয়াস্তিতে থাকেন। এহেন আকর্ষণের ভিত্তিতে বাজারে একগুচ্ছ ডিভিডেন্ডভিত্তিক পোর্টফোলিও গঠন করা হয়েছে, করেছেন বিভিন্ন ব্রোকিং এবং লগ্নি পরিচালক সংস্থা। এবার এই নিয়েই সংক্ষিপ্ত আলোচনা। প্রথমে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরা যাক আইসিআইসিআই ডিরেক্টের গঠিত ‘ডিভিডেন্ড স্টারস’, সেখানে মোট স্টকের সংখ্যা পাঁচটি। সঙ্গের চার্টে বিশদে বলা রইল।
ব্রোকিং সংস্থার কর্তৃপক্ষের মতে নূন্যতম লগ্নির পরিমাণ হতে পারে ৮,০২৫ টাকা। সব কয়টি স্টকই উচ্চ হারে ডিভিডেন্ড দিয়ে থাকে শেয়ার হোল্ডারদের। এবং এই সংক্রান্ত ট্র্যাক রেকর্ডও এগুলোর ভালো, এ-ও মানতে হবে। এক্ষেত্রে ১৯%-এর বেশি রিটার্ন পাওয়া গিয়েছে, এবং রিস্কের মাত্রা তুলনায় কম (‘লো রিস্ক’)। সবকটি স্টকই লার্জ ক্যাপ, যদিও Gujarat Pipavav Port তুলনায় ছোট সংস্থা। ইনফোসিস, আইটিসি ইত্যাদি সবই বৃহৎ কোম্পানির তালিকায় পড়বে।
[আরও পড়ুন: লগ্নির কী-কেন-কত মাপুন ক্যালকুলেটরের সাহায্যে, জেনে নিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ]
কেন খুঁজে নেবেন ‘ডিভিডেন্ড পেয়িং’ শেয়ার?
ব্রোকিং সূত্রে জানা যাচ্ছে একাধিক কারণ থাকতে পারে।
১. যাঁরা হোল্ডিং বিক্রি না করে হাতে ধরে রাখতে চান, তাঁরা অনেক ক্ষেত্রেই ভাল ডিভিডেন্ড খুঁজবেন।
২. উচ্চ প্রফিট হলে, সংস্থার কর্তৃপক্ষ লাভের অংশ ভাগ করে নিতে চাইবেন শেয়ার হোল্ডারদের সঙ্গে। বড়সড় ডিভিডেন্ড তাই বহু ক্ষেত্রে লাভজনক কোম্পানির অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রফিট বেশি মানে ডিভিডেন্ড বেশি এমনও ধারণা চালু আছে। তবে সবসময় তা নাও হতে পারে, বিশেষজ্ঞরা বলেন।
ডিভিডেন্ড ইল্ড যাঁরা বেশি পেতে চান তাঁরা নির্দিষ্ট মিউচুয়াল ফান্ড কিনতে পারেন।
এগুলো মূলত ওপেন-এন্ড ইক্যুইটি ফান্ড, যথেষ্ট ডাইভারসিফায়েড পোর্টফোলিও গঠন করেন সংশ্লিষ্ট ফান্ড ম্যানেজাররা। যে স্টকগুলো বেছে নেওয়া হয় সেগুলোর বৈশিষ্ট্য উচ্চ হারে ডিভিডেন্ড দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। একাধিক দৃষ্টান্তের মধ্যে থেকে আমরা বেছে নিলাম HDFC Dividend Yield Fund (কোনও পক্ষপাত ছাড়া)। বৈশিষ্ট্যগুলো এক ঝলকে :
১. ওপেন-এন্ড ফান্ড, যে কোনও দিন বেচা-কেনা করা যাবে
২. অন্তত তিন বছর ধরে লগ্নি করলে ভাল রিটার্ন পেতে পারবেন ইনভেস্টররা, অনেকেই ধারণা।
৩. নূন্যতম ১০০/- টাকা দিয়ে সিপ করাও যেতে পারে, এককালীন লগ্নি তো আছেই।
৪. Nifty 500 সূচকটি এই ফান্ডের ক্ষেত্রে বেঞ্চমার্ক
[আরও পড়ুন: অবসরেও ফলুক সোনা, জীবন হোক আরও রঙিন, শুধু নজর রাখুন কয়েকটি বিষয়ে]
রিস্কের শ্রেণিভাগ: ভেরি হাই
১. যে কোম্পানি ধারাবাহিকভাবে ভালো ডিভিডেন্ড দিয়েছে, সেই কোম্পানির স্টক নির্বাচিত হয় এই ফান্ডের জন্য।
২. অনেকের অভিমত, খুব রিস্ক নিতে চান, এমন ইনভেস্টররা এই জাতীয় ফান্ড এড়িয়ে চলবেন। তার কারণ ডিভিডেন্ড পাওয়ার ধারণার সঙ্গে রক্ষণশীলতার ধারণা ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। তবে এই মতামতের সঙ্গে সবাই সব সময় শতকরা একশো শতাংশ সহমত না-ও হতে পারেন। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে রিটার্ন কেমন পাওয়া যাবে, এমন মনে করেন পেশাদাররা।