রেপো রেটে পরিবর্তনের নির্দেশে সুদের হারেও প্রভাব পড়েছে। এর জেরে আমানতকারীদের অবস্থা কী? বাজারের গতিপ্রকৃতি বুঝে তাঁরা কোন দিকে পা বাড়াতে পারেন? তিনটি কর্পোরেট ডিপোজিট প্রকল্পকে সামনে রেখে তারই হদিশ দিলেন লগ্নি পরামর্শদাতা নীলাঞ্জন দে।
রেপো রেটে পরিবর্তন এবং তার ফলস্বরূপ সুদের হারে অদলবদল এই ছবিটার সঙ্গে আজ ইতিমধ্যেই পরিচিত সব মহল। আমানতের উপর নির্ভর করেন যাঁরা, তাঁরা বিশেষ করে ঘটনাক্রম দেখেছেন, বুঝেছেন কীভাবে আগামিদিনে রেট কমার জন্য তাঁরাও অসুবিধায় পড়বেন। ফিক্সড ডিপোজিট রেট নেমে এসে কততে দাঁড়াল? আজ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি। তিনটি কর্পোরেট ডিপোজিট প্রকল্পের উপর নজর রাখছি (ব্যাঙ্কের আমানতের কথ্য বলছি না একেবারেই)। এই তিন প্রকল্পই বেশ জনপ্রিয়। তাই বাজারের একটি অংশ স্বাভাবিকভাবেই এগুলির প্রতি আকৃষ্ট হবেন, এই ধারণা নিয়ে লেখা শুরু করছি।
শ্রীরাম ফিনান্স বাজাজ ফিনসার্ভ পিএনবি হাউজিং ফিনান্স
সর্বশেষ রেট দেখে বোঝা যাচ্ছে যে, কম-বেশি সব সংস্থাই সুদের হার কমিয়ে এনেছে। মোটামুটি এক-দেড় মাস হল, একাধিক প্রকল্পে নতুন হার সমেত বাজারে উপস্থিত। কয়েকটা সূক্ষ্ম পরিবর্তনও উল্লেখ করার মতো। চার্টে প্রথমে 'শ্রীরাম উন্নতি' ফিক্সড ডিপোজিট প্রকল্পের কিছু বিশেষ হার দেওয়া হল। 'নর্মাল' শ্রেণিভুক্ত ইনভেস্টর কী রেট পেতে পারেন? অর্থাৎ সিনিয়র সিটিজেন নন (অথবা মহিলা লগ্নিকারীও নন) এমন ডিপোজিটর বারো মাসের প্রকল্প বেছে নিলে ৭.৩৫ শতাংশ (অ্যানুয়াল বিকল্পে) পেতে পারেন।
ডিপোজিটর যদি ৫,০০০ টাকা বিনিয়োগ করেন, তাহলে কিউমুলেটিভ প্রকল্পে তিনি ৬০ মাস বাদে পাবেন ৭,৩৪৬ টাকা, শ্রীরাম ফিনান্সের হিসাব অনুযায়ী।
বি.দ্র. এখানে ৬০ মাসের প্রকল্পের কথা জানানো হচ্ছে। সংস্থার মতে, আলাদা ০.১৫% পাওয়া যাবে যদি রিনিউয়াল হয়। অর্থাৎ মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে যদি ফের করেন, অহলে সেই রিনিউয়ালের সুবাদে আপনার জন্য সুদের হারও বেশি ধার্য করা হবে।
পিএনবি হাউজিং ফিনান্স: ৬০ মাসের প্রকল্পে শ্রীরামের তুলনায় কম রেট দিচ্ছে বলে বোঝা যাচ্ছে সাম্প্রতিক রেট কাটের পর। কিউমুলেটিভ অপশনে এখনকার হার ৭.১০% (পাঁচ বছরের মেয়াদ), যার জন্য আনুমানিক ইল্ড টু ম্যাচুরিটি পাওয়া যাবে ৮.১৮%। সংস্থার পক্ষে থেকে যা জানানো হয়েছে-
১. কিউমুলেটিভ অপশনে রেটগুলি ৭% থেকে শুরু হয়ে ৭.১০% পর্যন্ত রয়েছে। কতদিনের মেয়াদে প্রকল্প নেবেন, তার উপর নির্ভর করবে সুদের হার।
ইল্ড যা পাওয়া যাবে তা ৭% থেকে ৮.১৮ পর্যন্ত। এখানেও কিউমুলেটিভঅপশনের কথা বলা হচ্ছে।
২. ন্যূনতম লগ্নির পরিমাণ: ১০,০০০ টাকা
৩. প্রতিবার ৩১ মার্চে কিউমুলেটিভঅপশনে সুদ "কম্পাউন্ডিং" করা হয়ে থাকে
৪. প্রয়োজন বুঝে মান্থলি, কোয়ার্টারলি, হাফ-ইয়ার্লি এবং অ্যানুয়াল এই চার ধরনের বিকল্পের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া যেতে পারে।
বাজাজ ফিনসার্ভ-ও বাজারের পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুদের হারে বদল এনেছে। শর্ত মেনে চললে, প্রবীণ নাগরিকরা পাবেন ৭.৩০% পর্যন্ত এবং তুলনায় অল্পবয়সিরা পেতে পারেন ৬.৯৫% অবধি। সংস্থার মতে, একাধিক জরুরি ব্যাপারের দিকে নজর দিতে পারেন আমানতকারীরা। সংক্ষেপে সেই তথ্য দেওয়া রইল সঙ্গের গ্রাফিক্সে।
মান্থলি ইত্যাদির ক্ষেত্রে রেট তুলনায় কম হবে।
সিনিয়রদের জন্য ০.৩৫% বেশি "অ্যাডিশনাল বেনিফিট"।
অনলাইন পদ্ধতির ব্যবহারে অনেক সুবিধা, কর্তৃপক্ষ বিশেষভাবে জানাচ্ছেন। নেট ব্যাঙ্কিংয়ের পুরো সুযোগ নিলেই ভাল হবে সাধারণ লগ্নিকারীদের জন্য। দস্তুরমতো পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিপোজিট ডিমে বিনিয়োগ করা উচিত, এমন মনে করে বিশেষজ্ঞ মহল।
সুদজনিত উপার্জনের উপর ট্যাক্স ধার্য করা হবে, তাই সর্বশেষ আয়করের নিয়ম জেনে নেওয়া উচিত।
