স্যামকো মিউচুয়াল ফান্ডের চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার, উমেশ কুমার মেহতা কর্পোরেট সেক্টরে ‘বিশেষ সুযোগ’ বেশ কিছু পাবেন বলে মনে করেন। ‘স্পেশাল অপরচুনিটিজ’ নামে স্যামকোর সর্বশেষ প্রস্তাবে না থাকবে কোনও নির্দিষ্ট মার্কেট ক্যাপের ব্যাপারে পক্ষপাত, না থাকবে কোনও নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের বিষয়ে দুর্বলতা। ‘‘আগামিদিনে আমরা অনেক ধরনের স্পেশাল অপরচুনিটিজ দেখতে পাব। মার্জার, টেকওভার, ক্যাপিটালে বড়-সড় পরিবর্তন আসবে–এ সবে সেই বিশেষ সুযোগগুলো খুঁজে বার করাই আমাদের লক্ষ্য।’’ নীলাঞ্জন দে-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন তিনি।
যে সমস্ত বিশেষ সুযোগের কথা বলছেন, তা থেকে কীভাবে সম্পদ গঠন হতে পারে?
দেখুন, নানা শ্রেণির ‘সিচুয়েশন’ তো হয়েই থাকে কর্পোরেট সেক্টরে। কোনও কারণে যদি সামগ্রিকভাবে ভ্যালুয়েশনের পরিবর্তন হয়, কৌশলী লগ্নির সুযোগ তৈরি হয়। মনে করুন, কোনও সংস্থায় বাইরে থেকে বৃহৎ প্লেয়ার টেকওভারের প্রস্তাব দিল। শেয়ারহোল্ডারদের জন্য তা নতুন সুযোগের দরজা খুলে দিতে পারে, বিশেষত যদি তাতে ভ্যালুয়েশনের অদলবদল হয়। এমন সম্ভাবনা অারও নানা কারণে হতে পারে। ধরুন, কোনও সংস্থায় বড় মাপের লিটিগেশন অথবা পাওনাদারের ক্লেম এল। আর সেই সময় বিনিয়োগকারীরা বিশেষ কিছু সিদ্ধান্ত নিলেন, তাতে ভ্যালুয়েশনের চরিত্র অন্যরকম হয়ে গেল। কিংবা মনে করুন, কোনও নিয়ন্ত্রকের নীতি পরিবর্তনের ফলে সংস্থার ব্যবসা বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিল। এই সব ক্ষেত্রেও ভ্যালুয়েশন নতুনভাবে বা অন্য রাস্তা ধরে এগিয়ে যেতে পারে। এই সব পরিস্থিতিই আমাদের প্রস্তাবিত ফান্ডের জন্য লগ্নির সুযোগ হিসাবে গণ্য হবে।
[আরও পড়ুন: বুঝেশুনে লগ্নি করুন কর্পোরেট ডিপোজিটে, জেনে নিন খুঁটিনাটি]
ইদানীং নতুন প্রযুক্তি আসার ফলে বহু সংস্থার ব্যবসা তাদের দিক পরিবর্তন করছে, দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কীভাবে বিনিয়োগ হবে?
হ্যাঁ, প্রযুক্তির আবির্ভাব এবং ‘ডিসরাপশন’ আজকাল প্রায় সমার্থক। অনেক সেক্টরেই তা দেখতে পাওয়া গেছে, ভবিষ্যতেও টেকনোলজির কারণে পরিবর্তনের হাওয়া বইবে বলে আমি মনে করি। এমনিতেই ‘ইনোভেশন’ ত্বরান্বিত হওয়ার অন্যতম বড় কারণ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। বাণিজ্যিক পণ্যের ধরণধারণ বদলে গিয়েছে শুধু এই কারণে, এমন তো অনেকবার দেখা গিয়েছে বিগত দিনে। আজও একাধিক নতুন সেক্টর ‘ইমার্জিং’ হিসাবে দেখা হচ্ছে ঠিক এই জন্যই। সব মিলিয়ে টেকনোলজির চটজলদি প্রয়োগ পুরনো অনেক ব্যবসার মান বাড়িয়েছে। আবার উল্টোটাও দেখা গিয়েছে, যেখানে সাবেকি ব্যবসা গুটিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। সাধারণ লগ্নিকারীর জন্য এইসব ঘটনা অনেকাংশে উপযোগী হতে পারে, বিশেষত যেখানে নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা প্রকট হয়ে ওঠে। ঘটনাচক্রে, এই মুহূর্তে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যা দেখছি, সেই ‘ডিজিটাইজেশন’ একটি বৃহদাকার ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে। ‘মেগাট্রেন্ড’ও বলতে পারেন।
[আরও পড়ুন: ভালো শেয়ার বেছে নেওয়ার সহজ উপায়, পথ দেখালেন বিশেষজ্ঞ]
ফান্ডের পোর্টফোলিও কীভাবে গঠন করবেন, ভাবছেন?
আর পাঁচটা ওপেন-এন্ড ইক্যুইটি ফান্ডের মতোই এখানে বেছে নেওয়া স্টকে লগ্নি করব আমরা। জেনে রাখুন, আগামী ৩১ শে মে পর্যন্ত প্রাথমিক সাবসক্রিপশনের জন্য খোলা রাখা হবে এনএফওটি। আমাদের যে থিম, সেই স্পেশাল সিচুয়েশনসের উপর চূড়ান্ত নজর থাকবে সব সময়ই। এর জন্য মার্কেট ক্যাপ সম্পর্কিত বাধা-নিষেধ থাকবে না। অথবা নির্দিষ্ট কোনও সেগমেন্টের প্রতি পক্ষপাতও দেখানো হবে না। তার বদলে ডাইভারসিফিকেশনের উপর জোর দেব, যার জন্য রিস্ক কম থাকবে বলে আমার বিশ্বাস। যে সব পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষায় থাকব, তার মধ্যে আছে মার্জার এবং অ্যাকুইজিশন। এছাড়াও স্পিন অফ বা রি-অর্গানাইজেশন হলে লগ্নির সুযোগ খুঁজে নেব। এ রকম অবস্থায় সর্বদা প্রচুর সময় হাতে থাকে না। তাই দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়াই দস্তুর।