ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: গান্ধীজির সার্ধ শতবর্ষ জন্মজয়ন্তীতে তাঁর জীবনের বিভিন্ন ঘটনাকে ভিত্তি করে “শিল্পের মাধ্যমে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শের পুনর্জীবন” শীর্ষক একটি প্রদর্শনী হচ্ছে কলাভবনের নন্দন আর্ট গ্যালারিতে। এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (এক্সিম ব্যাঙ্ক) এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই প্রদর্শনীতে গান্ধীজির উপর বিভিন্ন রাজ্যের ২৫টি শিল্পকর্ম এখানে প্রদর্শিত হবে। ১২ তারিখ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে।
গান্ধীজির জীবনে পশ্চিমবঙ্গের একটি বিশেষ গুরত্ব রয়েছে। কারণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে ‘মহাত্মা’ এবং নেতাজী সুভাষচন্দ্র তাকে ‘জাতির জনক’ উপাধিতে ভূষিত করে ছিলেন। গান্ধীজি এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মধ্যে আদর্শগত মতপার্থক্য থাকা স্বত্ত্বেও তাঁদের মধ্যে একটি সুন্দর সম্পর্ক ছিল। আর সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখে শান্তিনিকেতনকে প্রদর্শনীর জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।
[ আরও পড়ুন: দূষণমুক্ত বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে ওপার বাংলার যুবক ]
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, “শিল্পের মাধ্যমে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শের পুনর্জীবন” শীর্ষক প্রদর্শনীতে মহাত্মা গান্ধীর জীবনের অসাধারণ ঘটনাগুলি এবং একজন আইনজীবী থেকে ‘জাতির জনক’ হয়ে ওঠার পথে যাঁরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন তাঁদেরও চিত্রের মাধ্যামে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রথম প্রদর্শনীটি হয়েছিল দিল্লিতে। এক্সিম ব্যাংক সারাদেশ থেকে নির্বাচিত শিল্পীদের পাশাপাশি ১২ ধরনের ঐতিহ্যপূর্ণ গোষ্ঠী এবং চিত্রশিল্পশৈলীর কাজ এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, মহারাষ্ট্রের ওয়ার্লি চিত্রকলা, মধ্যপ্রদেশের গোন্ড, অসমের বয়ন, ওড়িশার পট চিত্রকলা, জম্মু কাশ্মীরের প্যাপিয়ার ম্যাশে, তামিলনাডু থেকে তাঞ্জোর, উত্তরপ্রদেশের সাঁজি, পশ্চিমবঙ্গের পটুয়া, অন্ধ্রপ্রদেশের কলমকারি, গুজরাটের মাতা-নি-পাছেড়ি, রাজস্থানের ফড় এবং বিহারের মধুবনী চিত্রকলা। মোট ২৫ ছবি রয়েছে এই প্রদর্শনীতে।
এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার পটুয়া মামনি চিত্রকর পটুয়া শিল্পের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি ট্রেন থেকে গান্ধীজিকে ফেলে দেওয়ার দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি ফুটিয়ে তুলেছেন। মহাত্মা এবং রবীন্দ্রনাথের পারস্পরিক সম্পর্ক মথুরার শিল্পী বিজয় কুমার ভার্মা সাঁঝি শিল্পকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। এই বিষয়ে, এক্সিম ব্যাংকের এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার স্বরূপ চক্রবর্তী বলেন, এক্সিম ব্যাংক দেশের গ্রামীণ এলাকার সমস্ত রকম কলাকুশলীদের ও কারিগর এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করার প্রচেষ্টা নিয়ে চলছে। ঐতিহ্যবাহী শিল্পকর্মগুলোকে একটি বৃহওর মঞ্চ দেওয়াই এর উদ্দেশ্য।
[ আরও পড়ুন: পণের টাকা দিতে পারেনি বাপের বাড়ি, গঞ্জনা সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী বধূ ]
The post পটুয়া-কলমকারি-মধুবনী চিত্রকলায় গান্ধীজি, শান্তিনিকেতনে দু’দিনের অভিনব প্রদর্শনী appeared first on Sangbad Pratidin.