সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্যর্থতার হারই বেশি। তা সত্ত্বেও আমেরিকায় (USA) ‘জেনোট্রান্সপ্ল্যান্টেশন’-এর সংখ্যা কমে না। ‘জেনোট্রান্সপ্ল্যান্টেশন’ অর্থাৎ মানবদেহে পশুর কোষ-কলা কিংবা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের প্রতিস্থাপন। আগেও বার দুয়েক, মানুষের শরীরে শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু মাস যেতে না যেতেই গ্রহীতাদের মৃত্যু হয়।
সেই ধারাই বজায় রইল আরও এক বার। বিশ্বে প্রথম ‘জেনেটিক্যাল মডিফায়েড’ একটি শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল ম্যাসাচুসেটসের ওয়েমাউথের এক ব্যক্তির শরীরে। চিকিৎসকরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, বাষট্টি বছরের ওই ব্যক্তি, নতুন কিডনি নিয়ে বছর দুয়েক তো বাঁচবেনই। অথচ তা হল না। কোনওরকমে দুমাস যেতে না যেতেই রিচার্ড ‘রিক’ স্লেম্যান নামে ওই ব্যক্তিও ঢলে পড়লেন মৃত্যুর কোলে। সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা এক বিবৃতিতে এই কথা জানিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: উড়ান চালানোর যোগ্যতাই নেই! ভারতীয় সেনাকে ‘বিতাড়নে’র মাশুল গুনছে মালদ্বীপ]
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে স্লেম্যানের একবার কিডনি প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিডনি ফেলিওর হওয়ায় ২০২৩ সালে তাঁর ডায়ালিসিস হয়। বার বার এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার ফলে স্লেম্যানের অন্যান্য আরও শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। এর পরই ডাক্তাররা শূকরের লিভার তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। সেইমতো চলতি বছরের মার্চ মাসে ‘জেনেটিক্যালি মডিফায়েড’ একটি শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় স্লেম্যানের শরীরে। সার্জনরা জানিয়েছিলেন, অন্তত দুবছর তো স্লেম্যান নতুন কিডনি নিয়ে বাঁচবেন।
কিন্তু তা হল না। ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের তরফে ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি এ-ও জানানো হয়েছে যে, এই ঘটনার জন্য স্লেম্যানের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালকে নিন্দা-মন্দ করেননি। বরং পাশেই দাঁড়িয়েছেন। হাসপাতাল জানিয়েছে, “জেনোট্রান্সপ্ল্যান্টেশন’-এর উদ্যোগ নেওয়ার মাধ্যমে অর্থাৎ পশুর হার্ট-কিডনি মানবদেহে প্রতিস্থাপন করে লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাঁচার আশা জোগানোর ভাবনা স্লেম্যান ও তাঁর পরিবারের ছিল। তাঁর জীবনের প্রতি এই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে আমরা সাধুবাদ জানাই।’’