বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: করোনা ভাইরাস (Corona Virus) সংক্রমণের মোকাবিলায় কঠোর সামাজিক বিধিনিষেধ তেমন কার্যকর হয় না। সেকথা ঐতিহাসিকভাবে এবং গত একবছরের অভিজ্ঞতা থেকে প্রমাণিত। তাই দরিদ্র-দুস্থ মানুষের দুর্দশার কথা ভেবে কড়া বিধিনিষেধ তুলে নিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) খোলা চিঠি দিয়ে আরজি জানালেন চিকিৎসক এবং বিশিষ্টজনরা। কড়া বিধিনিষেধের বিকল্প প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে চিঠিতে। শিল্পী, সাহিত্যিক, চিকিৎসক ছাড়াও সমাজকর্মী ও রাজনৈতিক নেতারাও চিঠি মারফৎ আবেদন জানিয়েছেন।
কোভিড (COVID-19) মোকাবিলায় কড়া বিধিনিষেধ জনস্বাস্থ্য রক্ষার পক্ষে অনুপযোগী। উপরন্তু তা জনজীবনে চরম দুর্ভোগের জন্ম দেয়। যার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয় দাবি করে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি সমাজের প্রায় ২০০ বিশিষ্টজনের। এর মধ্যে রয়েছেন ৬০ জন চিকিৎসক যাঁরা কোভিডের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়াই চালাচ্ছেন। আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দী, চিকিৎসক অমিতাভ গুপ্ত, পুণ্যব্রত গুণ, চন্দনা মিত্র। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁদের আবেদন, কার্যত লকডাউনের পক্ষে যে যুক্তি খাড়া করা হয় তা অবৈজ্ঞানিক ও মানবতা বিরোধী।
[আরও পড়ুন: জেল থেকে হাসপাতালে গিয়েই পলাতক বিচারাধীন বন্দি, SSKM-এ চিকিৎসা চলাকালীন চম্পট]
কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের শেষ অস্ত্র হিসাবে এই পথ দিশাহীন এবং ভাইরাসের থেকেও বেশি ধ্বংসাত্মক। পৃথিবীর একাধিক মহামারীবিদ, বিজ্ঞানী ও সমাজবিদ ইতিমধ্যে তথ্যপ্রমাণ-সহ তা তুলে ধরেছেন বলে চিঠিতে দাবি করেন বিশিষ্টজনেরা। তাঁদের বক্তব্য, ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যা ও দরিদ্র মানুষের দেশে এই পদ্ধতি আরও মারাত্মক। তাই প্রশাসন বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে বিকল্প পথের সন্ধান করুক। যাতে জনজীবন সচল থাকে। এর জন্য প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে আরও উন্নত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে বিভিন্ন শিবিরের মানুষজন এই চিঠিতে সই করেছেন। সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ী ছাড়াও সই করেছেন প্রাক্তন নকশাল নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়, নো ভোট টু বিজেপি আন্দোলনের সংগঠক কুশল দেবনাথ, হকার আন্দোলনের নেতা শক্তিমান ঘোষ। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, পরিচালক ও অভিনেতা কৌশিক সেন, ব্যতিক্রমী বুদ্ধিজীবী মীরাতুন নাহার।