সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ব মানচিত্রে ক্রমে প্রবলভাবে উপস্থিতি জাহির করছে চিন। মার্কিন আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে লালফৌজ। বেজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্য সংঘাতের পারদ চড়ছে লাগাতার। এই প্রেক্ষাপটে আমেরিকার নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে কোয়াড বা কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ জোট। যার অংশ ভারতও। এনিয়ে সম্প্রতি এক মার্কিন পত্রিকার সাক্ষাৎকারে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বুধবার দিল্লির বাসভবনে মার্কিন পত্রিকা নিউজউইককে সাক্ষাৎকার দেন মোদি। রামমন্দির, পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ উঠে আসে কোয়াড প্রসঙ্গও। তাঁকে প্রশ্ন করা হয় চিনকে নিশানা করেই কি কোয়াড জোট তৈরি হয়েছে? উত্তরে প্রধানমন্ত্রী সাফ বলেন, "আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভারত ও চিন। এই দেশগুলো বিভিন্ন গোষ্ঠী বা জোটে যুক্ত রয়েছে। আমরা ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীতে নিজেদের মতামত প্রদর্শন করি। কোনও দেশকে নিশানা করার জন্য কোয়াড গঠিত হয়নি। এসসিও, ব্রিকস এবং অন্য আরও জোটের মতো কোয়াডও একটা প্ল্যাটফর্ম। যেখানে সমমনস্ক দেশগুলো নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে।"
[আরও পড়ুন: চিনের সঙ্গে সমস্যা মেটানোর বার্তা, মার্কিন সাক্ষাৎকারে অরুণাচল নিয়ে ‘নীরব’ মোদি]
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গুরুত্ব উল্লেখ করে মোদি বলেন, "ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বিশ্ব বাণিজ্যের উৎস। উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রতীক। তাই ইন্দো-প্যাসিফিকের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা শুধু এই অঞ্চলের জন্যই নয় গোটা বিশ্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই এলাকায় জলবায়ু নিয়ে কাজ, বিপর্যয় মোকাবিলা, উন্নয়ন বাস্তবায়ন করার নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও কৌশলগত প্রযুক্তি, নির্ভরযোগ্য সরবরাহ শৃঙ্খল, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের জন্য কোয়াডভুক্ত দেশগুলো একটি মুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করে।"
বলে রাখা ভালো, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত বহুবার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। কোনও দেশকে নিশানা করা বা তার উপর আধিপত্য বিস্তার করা দিল্লির উদ্দেশ্য নয়। ভারত কোনওদিন অন্যদেশের অভ্যান্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। কিন্তু কোনও দেশ ভারতের অভ্যান্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে বা দেশের শান্তি নষ্ট করতে চায় তাহলে তার যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। কূটনীতিকদের মতে, এদিনও চিন প্রসঙ্গে ভারতের নীতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন মোদি। দিল্লি কখনই আগ্রাসনে বিশ্বাসী নয়। কিন্তু কেউ ভারতের দিকে আগ্রাসান দেখাতে হলে তাকে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন: রামের ছবি বুকে আঁকড়ে প্রচার অরুণ গোভিলের, শুনতে হল ‘গো ব্যাক’ স্লোগান]
উল্লেখ্য, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ভারত মিলে তৈরি হয়েছে ‘কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ’ বা কোয়াড (QUAD) জোট। বিশ্লেষকদের মতে, মূলত চিনকে নজরে রেখেই একজোট হয়েছে চারটি দেশ। কারণ বিশ্বে মার্কিন আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে চিন। উদ্বেগ উসকে ইন্দো-প্যাসিফিক বা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রমে আগ্রাসী হয়ে উঠছে ‘ড্রাগন’। কৃত্রিম দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে তারা। ফলে বিপন্ন ‘ওপেন ট্রেড রুট’ বা মুক্ত বাণিজ্যপথ।