সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের নয়া দিশা দেখিয়ে শুক্রবার দু’দিনের ঢাকা সফরে এসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। আজ অর্থাৎ শনিবারও ঠাসা প্রধানমন্ত্রীর সূচী।
[আরও পড়ুন: মোদি বিরোধিতায় উত্তাল চট্টগ্রাম, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৪ হেফাজত সদস্য]
এদিন, হেলিকপ্টারে দু’টি জেলা সফর করবেন। প্রথমেই যাবেন রাজধানী ঢাকা থেকে দেড়শো কিলোমিটার দূরের জেলা গোপালগঞ্জে। এই জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্ম ও সমাধিস্থান। সেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর ২০ কিলোমিটার দূরে কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান শ্রীধাম ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করবেন। ইতিমধ্যে সেখানেও তাকে স্বাগত জানাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ওড়াকান্দিতে উলু ও শঙ্খধ্বনি দিয়ে এবং ডঙ্কা ও কাঁসা বাজিয়ে মতুয়া ধর্মাবলম্বীরা নরেন্দ্র মোদিকে বরণ করবেন। সেখানে স্বাগত জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিসতুতো দাদা সাংসদ শেখ সেলিম। এদিন ওড়াকান্দি থেকে তিনশো কিলোমিটার দূরের জেলা সাতক্ষীরায় একটি হিন্দু মন্দিরও পরিদর্শন করবেন মোদি। এদিন দুপুরে নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় ফিরবেন। ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এ বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে অনেকগুলো চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে বিনিয়োগ, বাণিজ্য এবং পারস্পরিক সহযোগিতা অন্যতম। এছাড়া তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারত দ্রুত একটি সিদ্ধান্তে আসবে বলেও জানা গেছে।
প্রশাসন জানিয়েছে, মোদির সফর ঘিরে টুঙ্গিপাড়া ও ওড়াকান্দিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়িতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে জরুরি ভিত্তিতে চারটি হেলিপ্যাড, ঠাকুরবাড়ির অভ্যন্তরে ৫০০ মিটার এইচবিবি সড়ক, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের তিলছড়া থেকে ওড়াকান্দি পর্যন্ত আট কিলোমিটার ও রাহুথড় সড়ক থেকে ওড়াকান্দি প্রবেশের জন্য ৬০০ মিটার পাকা সড়ক সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, গণপূর্ত-সহ বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। তাছাড়া পরিষ্কার-পরিছন্নতা, ভিআইপি লাউঞ্জ নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ওড়াকান্দির সব মন্দির, গেস্ট হাউসের সৌন্দর্য বর্ধণ করা হয়েছে।ওড়াকান্দিকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। সেখানে সর্বসাধারণের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মোদির সফর ঘিরে মতুয়াদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। গোপালগঞ্জের জেলা শাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, “শনিবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির টুঙ্গিপাড়া আসবেন।বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে একটি গাছের চারা রোপণ করবেন তিনি। বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে তিনি কাশিয়ানী উপজেলার মতুয়াদের প্রধান তীর্থপীঠ ওড়াকান্দিতে যাবেন। সেখানে তিনি হরিচাঁদ মন্দিরে পুজো দেবেন।” বাংলাদেশ মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি ও মতুয়ামাতা সীমা দেবী ঠাকুর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।হরিচাঁদ ঠাকুরের লীলাভূমি ওড়াকান্দি অবহেলিত ও দলিত মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থ। প্রতিবছর ১০ লাখ মতুয়াভক্ত পুণ্যলাভের আশায় বরুণীর দিনে এ তীর্থে এসে স্নান করেন। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য আমরা অপেক্ষার প্রহর গুনছি।”