সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটেন-সহ সব দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মায়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা ঢুকে আশ্রয় নিয়েছে। যার ফলে প্রচণ্ড সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশকে। তাই ব্রিটেনের বৈদেশিক দপ্তর ও কমনওয়েলথ কার্যালয়ের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ডের সঙ্গে তেজগাঁওতে সাক্ষাত করে শেখ হাসিনা এই আহ্বান জানান।
[আরও পড়ুন- বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীর যৌন হেনস্তার অভিযোগে তোলপাড় গোপালগঞ্জ]
মার্ক ফিল্ডের সঙ্গে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের একথা জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। রোহিঙ্গাদের বিশেষ করে রোহিঙ্গা তরুণদের কাজকর্ম না থাকা এবং তাদের ফিরে যাওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় হতাশা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা ওই এলাকায় একটি বিরাট সমস্যার সৃষ্টি করেছে। কারণ সংখ্যায় ওরা স্থানীয় বাসিন্দাদেরও ছাড়িয়ে গেছে। কাজেই স্বার্থান্বেষী মহল তাদের মধ্যে বিদ্যমান হতাশাকে খারাপ উদ্দেশ্যেও ব্যবহার করতে পারে। বর্ষাকালেও রোহিঙ্গাদের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। অবশ্য সরকার তাদের অস্থায়ী আবাসনের জন্য একটি দ্বীপকে উন্নত করে গড়ে তুলছে।
[আরও পড়ুন- বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে কটূক্তি, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি খালেদার বিরুদ্ধে]
আশ্রয় নেওয়া বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জন্য বিরাট ‘বোঝা’ বলে উল্লেখ করে তাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে শেখ হাসিনার কাছে জানতে চান মার্ক। পাশাপাশি ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিপুল জয়ের জন্য তাঁকে অভিনন্দনও জানান। দু’পক্ষের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের পারস্পরিক বন্ধুত্বের স্বার্থে বাংলাদেশে আরও ব্রিটিশ বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন বলে উল্লেখ করেন। এর জন্য ব্রিটিশ শিল্পপতিদের কাছেও আবেদন রেখেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন- মাছ বাজারে চড়া দাম, বৈশাখী সকালে ইলিশ-পান্তা খাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা]
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ইস্যুর ক্ষেত্রে ব্রিটেনের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই টাকা জোগাড়ের জন্য একটি ট্রাস্ট গঠন করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যার বিষয়টি মাথায় রেখেই দেশের সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছে। পরে সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রে বিদেশি মূলধন বিনিয়োগের বিষয়টি উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে বেসরকারি মালিকানাধীন বেশকিছু টিভি চ্যানেল অনুমোদনের দেওয়ার কথাও জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যম এখন সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে।
[আরও পড়ুন- অস্ত্র উদ্ধারে বাধা, শরণার্থী শিবিরে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু ৩ রোহিঙ্গার]
শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার পর ঢাকার গুলশান এলাকার একটি হোটেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড। তিনি বলেন, ‘এটা আমার বাংলাদেশে তৃতীয় সফর। এবারের সফরে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সন্ত্রাস দমন প্রভৃতি নানা বিষয়ে আলোচনা করেছি। ব্রেক্সিটের পরও বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে কোনও ক্ষতি হবে না। রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় মর্যাদার সঙ্গে রাখাইন রাজ্যে ফিরে যাবে বলে আশা করি।’ পাশাপাশি কেউ স্বেচ্ছায় ভাসানচরে গেলে তাদের জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে বলেও উল্লেখ করেছেন ফিল্ড৷