ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: শান্তিনিকেতনে নাবালিকা গণধর্ষণ কাণ্ডে (Shantiniketan Gang Rape Case) তৎপর পুলিশ। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল ৪ অভিযুক্ত। পাড়ুই থানার বাদলো ডাঙা গ্রাম থেকে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের মধ্যে দু’জন নাবালক। বাকি দুই অভিযুক্ত সুনীল সোরেন ও লক্ষ্মীরান সোরেন। ধৃত প্রাপ্তবয়স্কদের বোলপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তাদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
রবিবার সকালে বোলপুরে যান রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়-সহ ৪ জনের একটি প্রতিনিধি দল। তাঁরা বোলপুরের সার্কিট হাউসে নির্যাতিতা আদিবাসী নাবালিকা এবং তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তাঁরা জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী-সহ আনান্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানান, তাঁরা মেডিক্যাল রিপোর্ট পেয়েছেন। সেই রিপোর্ট কমিশনের ডাক্তার পরীক্ষা করে দেখবেন। তারপরে বলা যাবে মেডিক্যাল রিপোর্টে কী আছে।
[আরও পড়ুন: প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা, কালবৈশাখীর জেরে কোচবিহারে মৃত ২]
মেয়েটি জানিয়েছে, সে তার প্রেমিকের সঙ্গে মেলায় গিয়েছিল। তারপরে সে প্রেমিকের সঙ্গে মাঠে গিয়েছিল। মেয়েটির এক বান্ধবী কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিল। সেই সময় চারজন আসে এবং ওদের ধমকায়। ওখান থেকে ওদের কিছু দূরে তাদের টেনে নিয়ে যায়। মেয়েটি জানিয়েছে, চারজনের মধ্যে তিনজন ছোট ছিল বা তারই বয়সি ছিল। তাদের সে মারধর করে সরিয়ে দেয়। কিন্তু একজনকে সে সরাতে পারেনি। সে-ই তার সঙ্গে অসভ্যতা করেছে।
নির্যাতিতা এবং রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্যের বয়ানে অসঙ্গতি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। তাহলে যে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠছিল তা কি মিথ্যা? এই ধোঁয়াশার মধ্যে বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার সভাপতি অভিযোগ করেছেন, পুলিশ পুরো ঘটনা চেপে যেতে চাইছে। ভয়ে নির্যাতিতার পরিবার কোনও কথা বলছে না। তাই পুরো ঘটনার সিবিআই তদন্ত করা হোক। তার জন্য আবেদন জানানো হবে। এদিকে, নির্যাতিতা ও তার প্রেমিকের বয়ান অনুযায়ী সিআইডির স্পেশ্যাল স্কেচ আর্টিস্টরা অভিযুক্তদের স্কেচ তৈরি করে। সেই স্কেচ চিহ্নিতকরণের পর দুই নাবালক-সহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ধৃত ২ প্রাপ্তবয়স্ককে সোমবার বোলপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তাদের দশদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।