অভিষেক চৌধুরী, কালনা: “ন্যাশনাল সেক্রেটারি, ইয়ুথ সেল, ন্যাশানাল হিউমান রাইটস এন্ড সোশ্যাল জাষ্টিস ব্যুরো, ইন্ডিয়া” নামে ভুয়ো নেমপ্লেট লাগানো গাড়ি নিয়ে বহাল তবিয়তে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে চলত গ্রহরত্নের ব্যবসা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল সেই গাড়িটি। শুধু তাই নয়, তিন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারও করল কালনা থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম আজিজ আলি, জাকির আলি, আমজাদ হোসেন। এদের সকলেরই বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলায়।
পুলিশি হয়রানি থেকে বাঁচতে এই ধরনের প্লেট লেখা গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা গ্রহরত্নের ব্যবসা চালাত বলে পুলিশকে জানায়। যদিও এই ঘটনার আড়ালে আরও বড়সড় কোনও চক্র জড়িয়ে আছে কিনা ও তাঁদের প্রকৃত পরিচয় জানতে শনিবার তাঁদের নিজেদের হেপাজতে চেয়ে কালনা মহকুমা আদালতে তোলে। কালনার এসডিপিও সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য বলেন, “ধৃতদের জেরা করে প্রাথমিকভাবে জানা যায় যে, তাঁরা গ্রহরত্নের ব্যবসা করে। টোল ট্যাক্স ও পুলিশের নাকা চেকিংয়ের হাত থেকে বাঁচতে তাঁরা এই ধরনের নেমপ্লেট ব্যবহার করত। এই ঘটনার আড়ালে আরও বড় কিছু ঘটনা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতেই ধৃতদের এদিন আদালতে তোলা হয় ও পুলিশ হেপাজতে নেওয়া হয়।”
[আরও পড়ুন: চোর সন্দেহে কিশোরকে খুনে করে পুঁতে দিল কারখানার নিরাপত্তারক্ষী! উত্তপ্ত Kharagpur]
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনার ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় জাতীয় মানবাধিকারের নাম দিয়ে ভুয়ো নেমপ্লেট লাগানো ওই সাদা চারচাকা গাড়িটিকে শুক্রবার দুপুরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ওই ব্যক্তিদের হাবভাব ও গতিবিধি দেখে বেশ কয়েকজনের সন্দেহ হয়। কারণ রাজ্য পুলিশের জালে যেভাবে একের পর এক ভুয়ো সিবিআই অফিসার, আইএএস, আইপিএস ও পুলিশ অফিসাররা ধরা পড়েছে এই ঘটনায় সেই জল্পনা আরও বাড়ে। ওই গাড়িতে থাকা তিনজন ওই এলাকার একটি হোটেলেও ঢোকেন বলে জানা যায়। স্থানীয়দের দাবি, এর আগেও ওই ব্যক্তিরা এখানে আসতেন। শুধু তাই নয়, নামীদামী পাথর নিয়ে গ্রহরত্নের ব্যবসাও নাকি তাঁরা করেন। স্বাভাবিক কারণেই এমনই এক ঘটনাতে সন্দেহের বাতাবরন তৈরী হয়। বিষয়টি কালনা পুলিশের নজরে এলে পুলিশেরও সন্দেহ তৈরি হয়। এরপরেই পুলিশ ওই গাড়ি-সহ তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপরেই জেরায় পুলিশকে তাঁরা জানায় যে এই গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন জেলায় গ্রহরত্নের ব্যবসা করত। পুলিশি হয়রানি ও টোল ট্যাক্সের হাত থেকে বাঁচতেই তারা এই ধরনের ভুয়ো নেমপ্লেট লাগায়। তাঁদের কাছ থেকে কিছু গ্রহরত্ন, পাথরও উদ্ধার হয় বলে জানা গিয়েছে। এরপরেই পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে এবং কালনা আদালতে নিয়ে যায়।