শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: চোপড়া কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। আবদুল রউফ ও তাহিরুল ইসলাম নামে ওই দুজনকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে একজন জেসিবির পরিবারের সদস্য বলেই খবর। আরও একজন জেসিবির পরিবারের 'ঘনিষ্ঠ' বলে জানা গিয়েছে। ধৃত আবদুল রউফ চোপড়া সীমান্তের লক্ষ্মীপুর পঞ্চায়েতের মুন্সিটোলার বাসিন্দা। আবদুল রউফ আলমগঞ্জের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার ধৃতদের ইসলামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। যুগলকে একগুচ্ছ কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইসলামপুরের পুলিশ সুপার জবি থমাস বলেন,"জেসিবির মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার জন্য ধৃতদের আদালতে তুলে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে।"
গত ৩০ জুন, চোপড়ার জেসিবির ‘দাদাগিরি’র ভিডিও ভাইরাল হয়। দেখা গিয়েছে, মাটিতে ফেলে এক যুবক ও যুবতীকে লাগাতার লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করছেন জেসিবি। চারিদিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন মহিলা-সহ অসংখ্য মানুষজন। অথচ কেউ রক্ষা করার জন্য এগিয়ে যেতে দেখা যায়নি। থামাননি কেউ। না। বরং যুগলকে পাশবিকভাবে মারধরের মর্মান্তিক দৃশ্য রীতিমতো তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন ওই তরুণ-তরুণী। তার পর গ্রামে সালিশি সভার আয়োজন করা হয়। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল। এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ তদন্তে নেমে জেসিবিকে গ্রেপ্তার করে।
[আরও পড়ুন: রামমন্দিরে পুরোহিতদের পোশাক বদল! মন্দিরে ফোন ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা]
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অভিযুক্ত জেসিবি চোপড়ার বিধায়ক তৃণমূলের হামিদুল রহমানের ‘ডান হাত’বলে পরিচিত। এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে চোপড়ায় বামেদের মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাতে এক সিপিএম নেতার মৃত্যুও হয়। সেই ঘটনায় নাম জড়ায় জেসিবির। গ্রেপ্তারও করা হয় তাকে। জেল থেকে কয়েকদিন আগেই জামিনে মুক্ত হয়ে গ্রামে ফেরে। ফের দৌরাত্ম্য শুরু হয় জেসিবি ওরফে তাজিমুল ইসলামের। তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চোপড়া কাণ্ডে ভিডিও ফুটেজ দেখে আমিরুল ইসলাম ওরফে বধুয়াকে গ্রেপ্তার করেছে ইসলামপুর থানার পুলিশ। ধৃত যুবক চোপড়ার লক্ষ্মীপুরের ঘির্নারগ্রামের বাসিন্দা। ওই ঘটনাতেই আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।