অর্ণব দাস, বারাকপুর: নৈহাটির (Naihati) তৃণমূল কর্মী খুনে জারি ধরপাকড়। গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত আশাবুল ওরফে বাচ্চা। এছাড়া আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। মূল অভিযুক্তের কাছ থেকে খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং বিপদে গ্রামবাসীর পাশে থাকার জন্য জনপ্রিয় ছিলেন তৃণমূল কর্মী জাকির হোসেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে জমিতে চাষ করা নিয়ে অভিযুক্ত আশাবুল ওরফে বাচ্চার বাবা শোফিয়ারের সঙ্গে জাকিরের এক আত্মীয়র ঝামেলা পরে হাতাহাতি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, আনুমানিক রাত আটটার পরে অন্যান্য দিনের মতো স্থানীয় একটি দোকানে কয়েকজনের সঙ্গে বসেছিলেন জাকির হোসেন। সেই সময় তিনটি বাইকে ৬জন দুষ্কৃতী মুখে মাস্ক পরে রাস্তার অন্য পারে বাইক রাখে। তাদের মধ্যে ছিল আশাবুল ওরফে বাচ্চা। তারা রাস্তার আলো নিভিয়ে জাকিরকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি চালায়। বাচ্চাই গুলি চালায় বলে অভিযোগ। এরপর দুষ্কৃতীরা বোমা ছুড়তে ছুড়তে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। বোমার স্প্রিন্টার হাতে লেগে আহত হন ইউসুফ নামে আরও একজন। তড়িঘড়ি স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে রাতেই জাকিরের অস্ত্রোপচার হয়।
[আরও পড়ুন: নন্দকুমারে ঘৃণাভাষণ, জামিন অযোগ্য ধারায় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মামলা]
এবিষয়ে মৃতের ভাই মহম্মদ শাহাবুদ্দিন মোল্লা বলেন, “দাদা তৃণমূল করত। চাষের জমি নিয়ে দু’জনের গন্ডগোল হয়েছিল। এই ঘটনায় ওরা মনে হয় দাদাকে সন্দেহ করেছিল। এলাকার ছেলে আশাবুল ওরফে বাচ্চা খুন করেছে। ও আগেও জেল খেটেছে।” অভিযুক্ত বাচ্চা এলাকায় নেশার দ্রব্য বিক্রি করত বলেও অভিযোগ। এই নিয়ে জাকির হোসেন প্রতিবাদ করেছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এবিষয়ে মৃতের আরেক ভাই আব্দুল হাসেম বলেন, “শোফিয়ারের ছেলে আসিবুল এলাকায় হেরোইন বিক্রি করত। সম্প্রতি শোফিয়ারও হেরোইন বিক্রি শুরু করে। এই নিয়েও জাকির প্রতিবাদ করছিল।”
ঘটনার রাত থেকেই এলাকায় চাপা উত্তেজনা ছিল। উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তর বাড়ি ভাঙচুর চালিয়ে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। অভিযুক্তর প্রতিবেশী ফজুল আলি বলেন, “আগেও বাচ্চাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। শুনলাম চাষের জমি নিয়ে একটি গন্ডগোলের পর বাচ্চা গুলি চালিয়েছে। ওদের পরিবারে কেউ বাড়িতে নেই। মনে হয় গুলি চালানোর ঘটনার পর সবাই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।”