দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: পুলিশের জালে শাহরুল। তার মুখে বারবার শোনা গিয়েছে ‘বড়ভাই’ এবং ‘নাসিরে’র কথা। কিন্তু কে দুজনে? জয়নগরে তৃণমূল নেতা এবং খুনে অভিযুক্তের মৃত্যুর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কার্যত অন্ধকারে তদন্তকারীরা। আপাতত এই দুজনকে নিয়ে ভাবছেন তদন্তকারীরা। তাদের পরিচয় এবং খুনের ঘটনায় ওই দুজনের ভূমিকা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার শুধু আদালত চত্বরেই নয়, শাহরুল জেরাতেও একাধিকবার ‘বড়ভাই’ এবং ‘নাসিরে’র নাম বলেছে। ‘বড়ভাই’ এবং ‘নাসিরে’র পরিকল্পনামাফিক সে তৃণমূল নেতাকে খুন করেছে বলেই জানিয়েছে শাহরুল। প্রশ্ন উঠছে এই ‘বড়ভাই’ এবং ‘নাসির’ কে? দুজনে আলাদা ব্যক্তি নাকি একই? তবে পুলিশ সূত্রে খবর, ‘নাসিরে’র পরিচয় জানা গিয়েছে। সে উস্থির সংগ্রামপুরের টেকপাঁজা এলাকার বাসিন্দা। প্রথম থেকেই তৃণমূল নেতা খুনে দাবি করা হচ্ছিল, বহিরাগতরা খুন করেছে। নাসিরের বাড়ির ঠিকানা পুলিশের হাতে আসার পর সেই সন্দেহ ক্রমশ জোরাল হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: তৃণমূল নেতা খুনের ২ দিন পর জয়নগরের গ্রামে ফিরছেন ‘ঘরছাড়া’রা]
যদিও টেকপাঁজা গ্রামের নাসির হালদারের পরিবারের দাবি, তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাঁসাচ্ছে শাহরুল। জয়নগরের খুনের ঘটনার সঙ্গে কোনও যোগ নেই নাসির হালদারের। সে কলকাতায় পুরনো জিনিসপত্র কেনাবেচা করত বলেই খবর। পরিবারের লোকজন অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি ঘিরে জলঘোলা। স্থানীয়দের দাবি, অঞ্চল সভাপতি সইফউদ্দিন খুনের আগের রাতে অর্থাৎ গত রবিবারই জয়নগরে চলে এসেছিল নাসির। অনেকেই এলাকায় নাকি ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন তাকে। ধৃত শাহরুলকেও ঘটনার আগের রাতে এলাকায় দেখা গিয়েছে বলেই দাবি স্থানীয়দের একাংশের।
এই খুন নিয়ে এখনও জারি জোর রাজনৈতিক তরজা। বারুইপুর পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক বিভাস সর্দারের অভিযোগ, তৃণমূলের দখলে থাকা একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত নিজেদের কবজায় আনতে চাইছিল সিপিএম। তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ান সইফউদ্দিন। সে কারণে সিপিএম নেতারাই সুপারি কিলার দিয়ে সইফউদ্দিনকে খুন করান বলেই দাবি ঘাসফুল শিবিরের। যদিও এই ঘটনাকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলেই পালটা দাবি সিপিএমের।