সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েক মাস আগে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে (Black man) নৃশংস ভাবে খুন করা হয় আমেরিকায় (US)। সেই মৃত্যুর প্রতিবাদে ঝড় উঠেছিল আমেরিকাজুড়ে। বৃহস্পতিবার আবারও এক নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে খুন করার প্রতিবাদে শামিল হল সেদেশের বড় অংশের মানুষ। অভিযোগ, এমাসে এই নিয়ে দু’জন কৃষ্ণাঙ্গকে খুন করেছে পুলিশ।
তালিকায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন বছর সাতচল্লিশের মরিস হিল। গত সোমবার তাঁকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। ঠিক কী হয়েছিল? ওইদিন রাতে বাড়ির গ্যারেজে ছিলেন তিনি। এই সময়ই তাঁকে পরপর গুলি চালিয়ে মেরে ফেলেন এক পুলিশ অফিসার। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে মরিস ওই অফিসারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর এক হাতে ধরা ছিল মোবাইল। তবে অন্য হাতে কিছু ছিল কিনা তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না। তবে পরে জানা যায়, তাঁর কাছে কোনও অস্ত্র ছিল না।
[আরও পড়ুন: বেজিংয়ের উৎকন্ঠা বাড়িয়ে জামিনে মুক্ত হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী ধনকুবের জিমি লাই]
কলম্বাস পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার অ্যাডাম কয়েরের মনে হয়েছিল মরিসের হাতে বোধহয় কোনও অস্ত্র রয়েছে। আর তাই তিনি আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়ে দেন। কলম্বাসের পুলিশ কর্তা টমাস কুইনল্যান জানিয়েছেন, ওই পুলিশ অফিসারকে বরখাস্ত করা হবে। বিনা কারণে এক নিরপরাধ মানুষের প্রাণ চলে গিয়েছে জানিয়ে তিনি দুঃখপ্রকাশও করেছেন। প্রসঙ্গত, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, এর আগেও এই ধরনের অতিরিক্ত সক্রিয়তা দেখিয়েছিলেন অভিযুক্ত অফিসার। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর কেসি গুডসন নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক স্যান্ডউইচ হাতে বাড়ি ফেরার সময় তাঁকে গুলি চালিয়ে মেরে ফেলে পুলিশ। পরে জানা যায়, তাঁর হাতের স্যান্ডউইচকে আগ্নেয়াস্ত্র ভেবে ভুল করেছিল তারা।
অবশেষে বৃহস্পতিবার এই দুই হত্যার প্রতিবাদে আমেরিকার রাস্তায় দেখা যায় মিছিল। ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ লেখা পোস্টার হাতে ছিল তাঁদের। পুলিশের এই নির্যাতন ও নৃশংসতার বিচার চেয়ে পথে নামেন প্রতিবাদীরা। এই ভাবে বিনা কারণে নিরপরাধ কৃষ্ণাঙ্গদের মেরে ফেলা যে অত্যন্ত বিপজ্জনক তা জানিয়েছেন আইনজীবী বেন ক্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘‘আবারও একজন কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে দেখে পুলিশ ধরেই নিল তিনি অপরাধী!’’ গত মে মাসে জর্জ ফ্লয়েডের গলা হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে নৃশংস ভাবে তাঁকে মেরে ফেলেন এক পুলিশ অফিসার। ভিডিওতে ওই নির্মমতা দেখে শিউরে উঠেছিল গোটা বিশ্বের মানুষ। সেই স্মৃতিই যেন আবার ফিরল বছরশেষে।