অর্ণব আইচ: মদের দোকানের লাইসেন্স করিয়ে দেওয়ার নাম করে জালিয়াতির অভিযোগ। কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের (Lalbazar) গোয়েন্দারা। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, রাকিবুল মণ্ডল নামে ওই পুলিশকর্মী কলকাতা পুলিশেরই (Kolkata Police) স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের কনস্টেবল।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ওই পুলিশকর্মী নদিয়া জেলার বাসিন্দা। কয়েক মাস আগে রাস্তার ধারের একটি ধাবায় খাওয়াদাওয়ার সময় ওই পুলিশকর্মীর সঙ্গে এক ব্যবসায়ীর পরিচয় হয়। কথায় কথায় ব্যবসায়ী জানান, তিনি একটি মদের দোকান খুলতে চান। তাই প্রয়োজন লাইসেন্সের (Alcohol shop License)। ওই পুলিশকর্মী পরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলে জানান। কিছুদিন পর ফোনে দু’জনের মধ্যে যোগাযোগ হয়। ওই পুলিশকর্মী নিজেকে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির দেহরক্ষী বলে নিজেকে দাবি করেন। তাতে বিশ্বাস করেন ব্যবসায়ী।
[আরও পড়ুন: মগরাহাট থেকে উদ্ধার হরিদেবপুরের যুবকের দেহ, প্রেমিকার পরিবারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ]
অভিযোগ, মদের দোকানের লাইসেন্সের জন্য ব্যবসায়ীকে ওই পুলিশকর্মী আগাম ১৫ লক্ষ টাকা দিতে বলেন। কয়েক দফায় কখনও নগদ, আবার কখনও বা ব্যাংকের লেনদেনের মাধ্যমে সেই টাকা দেওয়া হয়। তারই ভিত্তিতে মদের লাইসেন্সের কিছু নথি ব্যবসায়ীকে দেন পুলিশকর্মী রাকিবুল মণ্ডল। ওই লাইসেন্সে আবগারি দপ্তরের কয়েকজন কর্তার সইও ছিল। এর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ওই নথি নিয়ে ব্যবসায়ী মধ্য কলকাতার বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে আবগারি দপ্তরে যান। তখনই মাথায় হাত পড়ে ব্যবসায়ীর।
দপ্তরের আধিকারিকরা ব্যবসায়ীকে জানান, তাঁর হাতে আসা ওই মদের লাইসেন্স জাল। এর পরই ব্যবসায়ী বউবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই জালিয়াতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। তদন্তে গোয়েন্দারা রাকিবুলকে শনাক্ত করেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের অভিযোগ, এই জালিয়াতির পিছনে একটি চক্র আছে। ওই চক্রটি আবগারি কর্তাদের সই জাল করে কম্পিউটারে ভুয়ো লাইসেন্স তৈরি করেছে বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাকিবুল মণ্ডলকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাঁকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃত পুলিশকর্মীর সঙ্গে আরও কতজন যুক্ত ও এর আগে ওই চক্রটি এই ধরনের কাজ করেছে কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।