অর্ণব আইচ: মারণখেলা ‘মোমো’কে রুখতে সচেতন করতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। তাদের সতর্ক করতে হবে। ‘মোমো’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এটিই মূল পদ্ধতি বলে অভিমত সাইবার বিশেষজ্ঞদের। একই সঙ্গে ‘ব্লু হোয়েল’-এর পর ‘মোমো’কে আটকাতে এবার সচেতনতার প্রচারের পরিকল্পনা করছে পুলিশও। পুলিশের পরামর্শ, মোবাইলে ‘মোমো’ হানা দিলেই যেন সংশ্লিষ্ট থানাকে বিষয়টি জানানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে যেন ব্লক করে দেওয়া হয় ‘মোমো’কে। এই বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের সতর্ক করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পুলিশের এক কর্তার মতে, ‘ব্লু হোয়েল’ যখন হানা দিয়েছিল, তখন শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছিল পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও বাড়ানো হয়েছিল সচেতনতা। ‘মোমো’র ক্ষেত্রেও এভাবে প্রচার করলে ফল মিলতে পারে।
মারণখেলা ‘মোমো’ এবার হানা দিয়েছে এই রাজ্যেও। জলপাইগুড়িতে তার প্রমাণ মিলেছে। ‘মোমো’ যে কলকাতায় হানা দেবে না, এমন কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না শহরের সাইবার বিশেষজ্ঞ ও গোয়েন্দাকর্তারাও। সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত জানান, সরাসরি ‘মোমো’ গেমসকে আটকানোর জন্য ‘পেরেন্টাল কন্ট্রোল সফটওয়্যার’ ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের সতর্ক ও সচেতন করলে তার থেকেও বেশি কাজ হতে পারে। তাই এগিয়ে আসতে হবে শহরের স্কুলগুলিকেই। স্কুল কর্তৃপক্ষকেই ছাত্রছাত্রীদের ‘মোমো’র বিষয়ে সতর্ক করতে হবে। গোয়েন্দা পুলিশের মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় নামে অথবা বেনামে ‘ব্লু হোয়েল’-এর লিংক পাঠানো হত। ওই লিংকের মাধ্যমে ‘ব্লু হোয়েল’-এর ফাঁদে পা দিয়ে শুরু হত মারণখেলা। সেই লিংকগুলি বন্ধ করার ব্যবস্থা করে পুলিশ। ‘মোমো’র ক্ষেত্রে সাধারণত হোয়াটস অ্যাপে থাকা বালক-বালিকা বা কিশোর-কিশোরীদের বেছে নেওয়া হয়। বিদেশের কোনও মোবাইল নম্বর থেকেই তাদের সঙ্গে ‘মোমো’ যোগাযোগ করে। হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে ‘মোমো’ নিজের পরিচয় দিয়ে সেই ছাত্র বা ছাত্রীকে গেম খেলার জন্য প্রলোভন দেখায়। গোয়েন্দাদের মতে, যেহেতু ‘মোমো’র পদ্ধতি ‘ব্লু হোয়েল’-এর থেকে কিছুটা আলাদা, তাই সরাসরি তাকে রোখা শক্ত। কিন্তু ‘মোমো’কে একবার ব্লক করে দিলেই ফল পাওয়া যায়। তাই পুলিশের পরামর্শ, একবার ‘মোমো’ মোবাইলে হানা দিলেই যেন সেই ছাত্র বা ছাত্রী সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির বড়দের বিষয়টি জানায়। অভিভাবকরা যেন পুলিশকে তা জানান। ‘মোমো’র কোনও প্রশ্নের উত্তর যেন না দেয় ছাত্রছাত্রীরা। যে ছাত্র বা ছাত্রী মোবাইলে গেমস খেলে, তাদের কার্যকলাপের উপরও নজর দিতে বলা হচ্ছে অভিভাবকদের। তারা যদি অস্বাভাবিক ব্যবহার করে, তখনই যেন বিষয়টির উপর অভিভাবকরা নজর দেন।
সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানান, অন্তত পাঁচ রকমের ‘পেরেন্টাল কন্ট্রোল সফটওয়্যার’ রয়েছে। অনলাইনে বালক-বালিকা বা কিশোর কিশোরীদের কাছে অযাচিত কিছু পাঠালে তা রোধ করে এই ‘সফটওয়্যার’। এই ‘সফটওয়্যার’গুলি ডাউনলোড করে অভিভাবকরা ‘মোমো’কে আটকানোর চেষ্টা করতে পারেন বলে জানিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞ ও পুলিশ। অন্যদিকে পুলিশের তৎপরতায় মোমো অন লাইন গেমের শিকার হতে হতে বেঁচে গেল এক ছাত্র। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গ্রামাঞ্চলেও এইভাবে মোমো গেমের খবরে নড়েচড়ে বসেছেন গোয়েন্দারা। এই মারণ অন লাইন গেমের হাত থেকে বাঁচল এবার দাসপুরের দশম শ্রেণির এক ছাত্র৷ দাসপুরের চাঁইপাট হাইস্কুলের ওই ছাত্রের নাম সুর্য ধাড়া।
উড়ো চিঠিতে জারিজুরি ফাঁস, হাতের লেখাই ধরিয়ে দিল ‘ভুয়ো’ জওয়ানকে]
The post মারণ ‘মোমো’ রুখতে সচেতনতার দাওয়াই পুলিশের appeared first on Sangbad Pratidin.