আকাশ মিশ্র: দক্ষিণী ছবি এখন গোটা দেশের নজর কাড়ে। বিশেষ করে বাহুবলি, পুষ্পা, কেজিএফের দৌলতে দক্ষিণী ছবি নিয়ে বেশ মাতামাতিও রয়েছে। তাই মণিরত্নমের সদ্য মুক্তি পাওয়া ছবি ‘পোন্নিয়্যান সেলভান’ ( Ponniyin Selvan I ) নিয়ে উৎসাহ তো জন্মাবেই। তবে অন্যান্য দক্ষিণী ছবি থেকে যে ‘পোন্নিয়্যান সেলভান’ আলাদা হবে তা অবশ্য ট্রেলার দেখেই বোঝা গিয়েছে। আর তার সবচেয়ে প্রধান কারণ হল পরিচালক মণিরত্নম।
‘পোন্নিয়্যান সেলভান’ ছবি দেখার আগে কেউ যদি আশা করে থাকেন যে এই ছবি এসএস রাজা মৌলির ধাঁচের। তবে একেবারেই ভুল করবেন। কারণ, ‘পোন্নিয়্যান সেলভান’ শুধু মাত্রই দর্শনে ঝকঝকে নয়। স্পেকট্যাকুলার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শক্তপোক্ত চিত্রনাট্যকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন মণিরত্নম। এই ছবি যে দীর্ঘ রিসার্চের ফল, তা প্রতিটি ফ্রেমেই ধরা পড়ে।
[আরও পড়ুন: ইতিহাস-অ্যাডভেঞ্চারের আকর্ষণীয় প্যাকেজ ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’, পড়ুন রিভিউ]
তামিল লেখক কল্কি কৃষ্ণমূর্তির ঐতিহাসিক উপন্যাস অবলম্বনে ‘পোন্নিয়্যান সেলভান’ ছবিটি তৈরি করেছেন মণিরত্নম। এই উপন্যাসের কাহিনি চোল বংশের অরুলমোজি বর্মনের সময়কার। এই সময়টা একেবারে যেন নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছেন মণি। প্রতিটি ফ্রেমই যেন ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে এসেছে। এই ছবির সবচেয়ে স্ট্রং পয়েন্টই হল পরিচালনা। মণিরত্নমই এই ছবির আসল জাদুকর। ফের মণি প্রমাণ করলেন, ছবির পর্দায় কীভাবে গল্প বলতে হয়।
এমনিতেই পিরিয়াড ছবি, তা যদি আবার হয় ইতিহাস নির্ভর, তা সিনেপর্দায় আনা বেশ কঠিন। ‘পোন্নিয়্যান সেলভান’ এক্ষেত্রে একেবারেই ত্রুটিমুক্ত।
অভিনয়ের দিক থেকে জয়রাম রবি, কারথি, ঐশ্বর্য রাই বচ্চন, তৃষা কৃষ্ণন সবাই যেন একে অপরকে টেক্কা দিয়েছে। বহু বছর পর ঐশ্বর্যকে দেখতে বেশ ভাল লাগে।
শেষমেশ বলতে হয়, ‘পোন্নিয়্যান সেলভান’ এমন এক ছবি যা কিনা চোল বংশের ইতিহাসকে জলন্ত করে তোলে। বিশেষ করে চিত্রনাট্যে রাজনীতির মারপ্যাঁচ এই ছবিকে আরও সমৃদ্ধশালী করে তোলে। আর এর সঙ্গে সঠিক সংগত করেছে এ আর রহমানের সুর। দ্বিতীয়ভাগ দেখার জন্য সত্যিই মুখিয়ে থাকতে হবে।