সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খ্রিস্টান ধর্মের প্রচারে এবং এই ধর্মের মানুষদের সুরক্ষার স্বার্থে শনিবার ইরাকের ঐতিহাসিক নাজাফ শহরে শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু আয়াতোল্লা আলি আল-সিস্তানির সঙ্গে আলোচনায় বসেন পোপ ফ্রান্সিস।
[আরও পড়ুন: বিবেক দংশন! সেনার নির্দেশ মানতে নারাজ, ভারতের আশ্রয়প্রার্থী মায়ানমারের পুলিশকর্মীরা]
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, পোপ ফ্রান্সিস শুক্রবার বাগদাদ পৌঁছেছিলেন। এটাই কোনও পোপের প্রথম ইরাক সফর। তাছাড়া, অতিমারী করোনা পরিস্থিতির পর প্রথম আন্তর্জাতিক সফরে বেরিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। সূত্রের খবর, ইরাকে শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত দু’দশকে দেশের ভিতরে রাজনৈতিক অশান্তির কারণে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের বড় সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। নিয়মিত মুসলিম সন্ত্রাসবাদীদের হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। প্রাচীনকাল থেকেই মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র নাজাফ শহরে খ্রিস্টানদের বসবাস রয়েছে। কিন্তু জেহাদি সংগঠনগুলির হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। ইরাকে কার্যত দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা। জানা গিয়েছে, পোপের সঙ্গে আলোচনায় ইরাকে খ্রিস্টানদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা আশ্বাস দিয়েছেন আল-সিস্তানি।
উল্লেখ্য, আল-সিস্তানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পোপ হিসেবে ফের ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ করেছেন ফ্রান্সিস। তবে এর আগেও একাধিক বেনজির পদক্ষেপ করেছেন তিনি। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই খ্রিস্ট ধর্মের শুদ্ধিকরণের পথে হেঁটে, কয়েক শতক ধরে চলে আসা প্রথা ভেঙে চার্চ পরিচালন সমিতির উচ্চপদে এক মহিলাকে সদস্যপদ দেন তিনি। এর আগে সমকামিতা নিয়েও মুক্তমনের প্রমাণ দিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। কয়েক বছর আগেই খ্রিস্ট সমাজের তীব্র আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সমকামিতাকে মানুষের স্বাভাবিক অধিকার বলে স্বীকার করে নিয়েছিলেন পোপ। মুক্ত কণ্ঠে জানিয়েছিলেন, ধর্ম যা-ই বলুক, সমকামিতা অন্যায় বা পাপ- কোনওটাই নয়! শুধু তাই নয়, আরও একধাপ এগিয়ে তিনি বলেছিলেন, ”চার্চের সমকামীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত! এত দিন ধরে তাঁদের দূরে রেখে, তাঁদের জীবনযাপনকে সম্মান না দিয়ে চার্চ অত্যন্ত অন্যায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ধর্ম কখনওই পক্ষপাত দেখাতে পারে না। ধর্মের কাছে প্রত্যেকটি মানুষই সমান!” তবে, শুধুই সমকামী নয়! চার্চ যে সব প্রান্তিক মানুষকেও এত দিন পর্যন্ত সম্মান দেয়নি, তাদের কাছেও ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন পোপ।