শুভঙ্কর বসু: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) রিপোর্টে অসংগতি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজ্যের তরফে কলকাতা হাই কোর্টে এবার জোরদার সওয়াল করলেন আইনজীবী তথা রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) সুরেই উচ্চ আদালতে শুনানি চলাকালীন অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ”ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) নিয়ে NHRC-র রিপোর্টে একাধিক অসংগতি রয়েছে। যে যে ঘটনার উল্লেখ রয়েছে, তার বেশিরভাগটাই ভোটের আগেকার। সেসময় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব ছিল নির্বাচন কমিশনের হাতে। এতেই বোঝা যায়, NHRC-র রিপোর্ট পক্ষপাতদুষ্ট। আর ভোট পরবর্তী সময়ে হিংসা নিয়ে যে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তার অনেকগুলোতেই ইতিমধ্যে পুলিশ পদক্ষেপ নিয়েছে।” এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতিদের নির্দেশ, ২৬ জুলাই রাজ্যকে হলফনামা দিতে হবে। পালটা হলফনামা ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে জমা দেওয়া হোক। ওইদিনই চূড়ান্ত শুনানি হবে।
অন্যদিকে, এই রিপোর্ট তৈরির জন্য মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা যাদবপুরের পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে হেনস্তার মুখে পড়েন। হাই কোর্টে সেই রিপোর্টও জমা দিয়েছিলেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে দিন ১৫ আগে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC)বিচারপতিদের বৃহত্তর বেঞ্চ যাদবপুরের এলাকার দায়িত্বে থাকা আইপিএস আধিকারিক রশিদ মুনির খানকে শোকজ করে। এদিন তিনি শোকজের উত্তর দিয়েছেন। সূত্রের খবর, জবাবে সন্তুষ্ট বিচারপতিরা। ফলে এই মামলায় স্বস্তিতে আইপিএস রশিদ মুনির খান। এদিন হাই কোর্টে সওয়াল-জবাবের সময় অভিষেক মনু সিংভির পালটা বক্তব্য রাখেন মামলাকারীর আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি। তাঁর পালটা অভিযোগ, মানবাধিকার কমিশনে যাঁরা রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, তাঁদের অনেককেই এখন পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ধর্ষণের অভিযোগে দাদা গ্রেপ্তার হতেই পিছিয়ে এলেন তরুণী, মামলা প্রত্যাহারের আরজি]
এর আগে বারবারই ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা নিয়ে রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছিল, প্রতিটি ক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়া মাত্র পুলিশ পদক্ষেপ নিয়েছে। গুরুত্ব বুঝে SIT গঠন করে তদন্ত চলছে কোনও কোনও ঘটনায়। আর এসব যুক্তি দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তরফেই এর আগে হাই কোর্টের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল, NHRC-র রিপোর্ট নিয়ে আদালত যেন নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করে। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন খারিজ হয়। যদিও এই একই যুক্তি এবং তথ্য়প্রমাণ হাতে নিয়ে হাই কোর্টে বারবার সওয়াল করছে রাজ্য সরকার। তবে মৌখিক সওয়াল-জবাব নয়, এ নিয়ে ২৬ তারিখের মধ্যে রাজ্যের বক্তব্য হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে। ২৮ তারিখ চূড়ান্ত শুনানি।