সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকৃতির রুদ্ররোষ কতখানি ভয়ংকর হতে পারে তা টের পেল মায়ানমার (Mayanmar)। বাংলাদেশের (Bangladesh) উপকূল অঞ্চলে ক্ষয়খতি কিছুটা কম। বিধ্বংসী অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে মায়ানমারের বিস্তীর্ণ এলাকা। আবহাওয়া অফিসের পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৮২ সালের পর থেকে বঙ্গোপসাগরে জন্ম নেওয়া দ্বিতীয় তীব্রতম ঘূর্ণিঝড় এই মোকা (Mocha)। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ২৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। তাতে যেমন ধংস হয়েছে সম্পত্তি, তেমনই মৃত্যু হয়েছে মানুষের। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মারণ ঝড়ে মায়ানমারে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। আহতের সংখ্যা ৭০০-র বেশি। প্লাবিত সে দেশের বন্দর শহর সিতওয়া।
সিতওয়া-সহ মায়ানমারের বিস্তীর্ণ এলাকা কার্যত ধংসস্তূপ পরিণত হয়েছে। বিদ্যুৎ, জল, টেলি সংযোগ, ইন্টারনেট পরিষেবা বিপর্যস্ত। পথের দু’পাশে ভাঙা বাড়ি, হোটেল, অফিস। গাছ, বিদ্যুতের পোল ভেঙে পড়ে পথে পথে। ফলে সমস্যা হচ্ছে উদ্ধারকাজে। শহরে খানিকটা উঁচু এলাকায় বড় বাড়িগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ। যদিও তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য এবং পানীয় জল আছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। ঝড়ের ভয়াবহতার একাধিক ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, মোকার তাণ্ডবে বিরাট মোবাইল টাওয়ার খেলনার মতো ভেঙে পড়ছে।
[আরও পড়ুন: ‘আরও ৩০০ মাদ্রাসা বন্ধ করে দেব’, তেলেঙ্গানায় ওয়েইসিকে হুঁশিয়ারি হিমন্তের]
অন্যদিকে বাংলাদেশের কক্সবাজারেও ঝড়ের বিধ্বংসী রূপ দেখা গিয়েছে। মোকার দাপটে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। সে দেশের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাছে চাপা পড়ে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। উপড়ে গিয়েছে সেইসঙ্গে গাছ। ভেঙে পড়েছে অস্থায়ী ছাউনি। উড়ে গিয়েছে বাড়ির টিনের চাল। কয়েক হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ঠিক কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। আশার কথা, ঝড় অব্যাহত থাকলেও। তা শক্তি খুইয়ে ‘অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়’ থেকে ‘ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হয়েছে। অসমর্থিত সূত্রে খবর, ঝড়ের দাপটে মায়ানমার সমুদ্রের একটি দ্বীপ ভেসে গিয়েছে। যদিও এই বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
[আরও পড়ুন: তামিলনাড়ুতে বিষমদের বলি অন্তত ১১, আর্থিক সাহায্য ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
এদিকে রাজ্যবাসীর জন্য ভাল খবর, ঘূর্ণিঝড় মায়ানমারে চলে যাওয়ার পর জলীয় বাষ্প ঢুকতে শুরু করেছে এরাজ্যে। ফলে পশ্চিমবঙ্গে এ বার বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে আগামী বুধবার থেকে। সেই সঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া।