নব্যেন্দু হাজরা: বহু প্রতীক্ষিত জোকা-তারাতলা মেট্রো রুটের পথচলা শুরু। প্রথম মেট্রো যাত্রী হওয়ার শখ কারই বা না থাকে। ব্যতিক্রম নন পেশায় স্কুল শিক্ষক প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ও। তার জন্য অবশ্য কষ্ট কম করেননি তিনি। প্রথম যাত্রী হওয়ার জন্য রাতেই মেট্রো স্টেশনে হাজির হন প্রভাতবাবু। সোমবার নির্ধারিত সময়েই হল স্বপ্নপূরণ। শিয়ালদহ-ফুলবাগানের পর জোকা-তারাতলা মেট্রো রুটেরও প্রথম যাত্রী হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত তিনি।
সোমবার সকালে টিকিট কাউন্টার খোলার পরই টোকেন কাটেন প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁকে গোলাপ ফুল হাতে দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। দেওয়া হয় উপহারও। এরপর মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ করেন। মুখে যেন যুদ্ধ জয়ের হাসি। প্রথম যাত্রী হওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন, সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে জবাবের শুরুতে চওড়া হাসি দেখা যায় তাঁর মুখে। তারপর অবশ্য বলেন, “ভালই লাগছে।”
[আরও পড়ুন: ‘রামনামে ভয় কেন? তৃণমূল কী ভূত?’, ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান বিতর্কে কটাক্ষ দিলীপের]
এর আগে শিয়ালদহ-ফুলবাগান মেট্রো চালুর সময় প্রথম যাত্রী হয়েছিলেন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। আগের দিন রাতে এসে শিয়ালদহ প্ল্যাটফর্মে কাগজ পেতে ঘুমিয়েছিলেন। পেশায় স্কুলশিক্ষক প্রভাতবাবু এবারও রবিবার রাতেই চলে আসেন জোকা। সোমবার সকালের প্রথম ট্রেনে ওঠাই ছিল তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। আজ থেকেই যাত্রী নিয়ে ছুটবে জোকা-তারাতলা মেট্রো। জোকা থেকে প্রথম ট্রেন সকাল ১০টায়। তারাতলা থেকে সাড়ে ১০টায়। আর জোকা থেকে শেষ ট্রেন বিকেল পাঁচটা আর তারাতলা থেকে সাড়ে পাঁচটা। মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিকভাবে এক ঘণ্টা অন্তর ছুটবে মেট্রো। শনি-রবিবার তা-ও বন্ধ থাকবে।
আর এখানেই বেহালাবাসীর একাংশের প্রশ্ন, এভাবে মেট্রো চালানোর অর্থ কী? যেখানে একটা ট্রেন মিস করলে যাত্রীদের এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে থাকতে হবে। পরিষেবা শুরু আবার সকাল ১০টা থেকে। মানে অফিস টাইম তখন পার করে যাবে। আবার সন্ধের আগেই শেষ। স্বাভাবিকভাবেই মেট্রোর এই সময়সূচি নিয়ে ক্ষোভ জমতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। মেট্রো কর্তারাও জানাচ্ছেন, যে সময় ট্রেন চলছে, তা কেবল একে জয় রাইডই বলা চলে। যাত্রীও বিশেষ হবে না। তবে যদিও যাত্রী বাড়ে সেক্ষেত্রে পরিষেবাও বাড়ানো হবে। জোকা, ঠাকুরপুকুর, শখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা, বেহালা বাজার এবং তারাতলা – এই ছ’টি স্টেশন রয়েছে এই রুটে। সর্বনিম্ন ভাড়া থাকছে ৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ২০ টাকা। সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় এই লাইনে এখনই একাধিক ট্রেন চালানো সম্ভব হচ্ছে না। এখনও ওই রুটের সবক’টি স্টেশনে স্মার্ট কার্ড গেট বসানো হয়নি, তাই ট্রেন চালু হলে সেক্ষেত্রে কাগজের টিকিটেই যাত্রীরা যাতায়াত করবেন।