দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election 2021) আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক লেগেছিল। সেই সময় দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন প্রবীর ঘোষাল। আর এবার নিজের দলীয় নেতৃত্বের প্রতি অভিমানের সুর শোনা গেল তাঁর গলায়। তবে কি আবারও দলবদল করবেন তিনি, জল্পনা তুঙ্গে।
এবার ‘বেসুরো’ গত বিধানসভা নির্বাচনের উত্তরপাড়া কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী প্রবীর ঘোষাল (Prabir Ghoshal)। সম্প্রতি তাঁর মা গত হয়েছেন। অভিমানী প্রবীরবাবু জানান, বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব মাতৃবিয়োগের পর খোঁজ নিয়েছে। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্ব কেউ একবার ফোনও করেননি। অথচ আজ থেকে ৩০ বছর আগে যখন পিতৃবিয়োগ হয়েছিল তখন তপন শিকদার, বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী, সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো দাপুটে বিজেপি নেতারা তাঁর বাড়িতে এসে খবর নিয়েছিলেন। শুক্রবার শ্রীরামপুরের সাংগঠনিক সভায় যেতে না পারার জন্য রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) তাঁর মাতৃবিয়োগের কথা জানান। দিলীপবাবু তার আগে প্রবীর ঘোষালের মাতৃবিয়োগের কথাও জানতেন না। কিন্তু ব্যতিক্রমী নজির হিসেবে দেখছেন তৃণমূল নেতৃত্বকে। তিনি বলেন, “মা মারা যাওয়ার কয়েকঘন্টার মধ্যে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee), বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক ফোন করে সমাবেদনা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। তাই মনের কোণে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি একটা ‘অভিমান’ জন্মেছে বিজেপি নেতা প্রবীর ঘোষালের।
[আরও পড়ুন: ‘BJP যোগের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল’, তৃণমূলে ফেরার আরজি মালদহ জেলা পরিষদের সদস্যার]
প্রসঙ্গ বদল করে নির্বাচনে হার নিয়েও মুখ খোলেন প্রবীরবাবু। তিনি জানান, দলের উঁচু তলার সঙ্গে নিচু তলার অনেক ফাঁকফোকর রয়েছে বলে আজ বিজেপির এই বিপর্যয়। সেই বিপর্যয়ের কারণ এখনও বিশ্লেষণ করা হয়নি। তাঁর এহেন মন্তব্যের পর ফের দলবদলের জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে। তবে কি প্রবীরবাবু ফের তৃণমূলে ফিরছেন, সেই জল্পনা তুঙ্গে। জল্পনা উড়িয়ে সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এখনই সেরকম কোনও চিন্তাভাবনা নেই।” তিনি আরও বলেন, “বিরোধীদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা, বিশ্বাসযোগ্যতা, ভাবমূর্তি এতটাই যে কোনো বিরোধী নেতাই তার ধারেকাছে নেই।” এদিন তিনি রীতিমতো প্রশংসা করে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরকারকে সকলের দুয়ারে নিয়ে যাওয়ার লড়াই করেছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে যে সাংগঠনিক পরিকাঠামো তৈরি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তার অবদান নির্বাচনে তৃণমূলের (TMC) বিপুল জয়।”