দেবব্রত মণ্ডল, গঙ্গাসাগর: বিয়ের পর পুত্রসন্তানের মানত ছিল। তিন বছর আগে কপিলমুনির আশ্রমে এসে মানত করেছিলেন। পুত্রসন্তান পেয়েছেন। মানতপূরণে এবার ফের গঙ্গাসাগরে এসেছিলেন নামখানার জয়শ্রী দাস। এবার সাগর থেকে নিয়ে ফিরলেন কন্যাসন্তান। নামখানায় বাড়ি ফেরার পথে প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। মুড়িগঙ্গা নদীর মাঝে লঞ্চেই কন্যাসন্তান প্রসব গঙ্গাসাগরের তীর্থযাত্রীর। মেয়ের নাম রাখলেন জাহ্নবী।
প্রসবযন্ত্রণা শুরু হওয়ার পর রাজশ্রীকে তড়িঘড়ি মেলার মাঠ থেকে অ্যাম্বুল্য়ান্স করে সাগরের অস্থায়ী হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর পাঠানো হয় রুদ্রনগর ব্লক হাসপাতালে। জয়শ্রী দেবীকে ভরতি করানোর পর চিকিৎসকরা দেখতে পান বাচ্চার দু’টি আঙুল বেরিয়ে আছে। কিছুক্ষণ রুদ্রনগর হাসপাতালে রাখার পর চিকিৎসকরা সিজার করার পরামর্শ দেন। কিন্তু মুড়িগঙ্গা নদীতে বিকেলে ভাটা নেমে যাবে। বন্ধ হয়ে যাবে জলযান। তড়িঘড়ি তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পরিবারের লোকজন। সাগরের বেনুবন থেকে নামখানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। মুড়িগঙ্গা নদীর মাঝখানে লঞ্চের মধ্যেই সন্তান প্রসব করেন রাজশ্রী। তবে কোনও সমস্যা হয়নি। কন্যাসন্তান প্রসব করেন। মা ও মেয়ে দু’জনই এখন সুস্থ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মণ্ডহারবারের নামখানা ব্লকের নারায়ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি জয়শ্রী ও তাঁর কন্যাসন্তান। হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোনে জয়শ্রী দেবী বলেন, “কপিলমুনি মন্দিরে মানত করা ছিল, ছেলে হলে সেখানে গিয়ে পূজা দেব। দ্বিতীয় সন্তান জন্মানোর আগেই তা মিটিয়ে দেব। তাই গঙ্গাসাগরে গিয়েছিলাম। ফিরে আসার পথে অসুস্থ হয়ে পড়ি। কপিলমুনির দয়ায় আবারও একটি সন্তান পেলাম। গঙ্গার নামেই নামকরণ করেছি জাহ্নবী।”
[স্কুলের পোশাকে মদ্যপান, শিলিগুড়ির ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর]
এবিষয়ে ডায়মণ্ডহারবার জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য অধিকর্তা দেবাশিষ রায় বলেন, “আমরা বারবার বলেছিলাম রুদ্রনগর হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা করা হোক। সিজার করার পরিকল্পনা ছিল চিকিৎসকদের। কারণ বাচ্চার দু’টি আঙুল দেখা গিয়েছিল। কিন্তু পরিবারের লোকজন হাসপাতাল থেকে একরকম জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যায়। এখন মা ও বাচ্চা দু’জনই সুস্থ আছে। সরকারি সমস্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে এখনও তেমন কোনও বড় ঘটনা ঘটেনি। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের হিসাব মতো এখনও পর্যন্ত গঙ্গাসাগর মেলায় আসার পথে অসুস্থ হয়েছেন ১৪৭ জন পুণ্যার্থী। যার মধ্যে ৩৭ জন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গঙ্গাসাগর আসার পথে এখনও পর্যন্ত চারজন তীর্থযাত্রী মারা গিয়েছে।
[পুণ্যার্জনের আশায় সাগর সঙ্গমে, অসুস্থ হয়ে ২ দিনে মৃত্যু ৪ তীর্থযাত্রীর]
The post গঙ্গাবক্ষে কন্যাসন্তান প্রসব তীর্থযাত্রীর, নাম রাখলেন জাহ্নবী appeared first on Sangbad Pratidin.
