অভিষেক চৌধুরী, কালনা: গর্ভস্থ সন্তানকে স্বীকৃতি দিতে চায়নি প্রেমিক। গর্ভপাতে রাজি হননি মহিলা। পরিবর্তে নাম ভাঁড়িয়ে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। সদ্যোজাত সন্তানকে অন্য মহিলার হাতে তুলে দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন প্রসূতি। কালনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের (Kalna Super Speciality Hospital) ঘটনায় ছড়িয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য। কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম বিশ্বাস।
উত্তরপ্রদেশের এক বাসিন্দার সঙ্গে মহিলা বেশ কয়েকবছর আগে বিয়ে হয়। তাঁর তিন সন্তানও ছিল। তবে স্বামী অত্যাচার করতেন। তাই সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে মেমারিতে চলে আসেন। এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাত্র কয়েকদিনেই ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। শারীরিক সম্পর্কও তৈরি হয়। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মহিলা। তা প্রেমিককে জানান। তবে প্রেমিক সন্তানকে স্বীকার করতে চাননি। গর্ভপাতের পরামর্শ দেয় বলেই অভিযোগ। যদিও তাতে রাজি হননি মহিলা। গর্ভস্থ সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখাবেন বলেই বদ্ধপরিকর তিনি।
[আরও পড়ুন: ক্লাব ছাড়তে চান, সরকারিভাবে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কাছে আবেদন রোনাল্ডোর]
ইতিমধ্যেই সন্তান প্রসবের সময় আসে। গত শনিবার কালনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি হন। দুপুরের দিকে একটি পুত্রসন্তানের জন্মও দেন। এরপর হাসপাতালের সিস্টার ও নার্সরা তাঁর স্বামীর নাম জানতে চান। তবে ওই মহিলা সে সমস্ত উত্তর সঠিকভাবে দিতে পারেননি। বয়ানে অসঙ্গতি থাকায় সন্দেহ দানা বাঁধে। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ঘিরে ধরে। শুরু হয় জোর জিজ্ঞাসাবাদ।
ওই মহিলা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, প্রেমিক গর্ভস্থ সন্তানকে অস্বীকার করায় দিশাহারা হয়ে গিয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে মেমারি থানার বাসিন্দা সুমিতা যাদব নাম দিয়ে হাসপাতালে ভরতি হন। কারণ, তিনি সুমিতার শাশুড়ি সাবিত্রী যাদবের পূর্ব পরিচিত। সুমিতার সন্তান নেই। তাই কথা হয়েছিল, সদ্যোজাতকে ওই মহিলার হাতে তুলে দেবেন। টাকার বিনিময়ে সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কিনা, সে বিষয়ে যদিও প্রসূতি স্পষ্টভাবে কিছুই বলেননি। এই ঘটনায় কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কালনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম বিশ্বাস। তিনি বলেন, “এক প্রসূতি অন্য মহিলার নাম দিয়ে হাসপাতালে ভরতি হন। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।”