রিঙ্কি দাস ভট্টাচার্য: হিন্দু হস্টেল ফিরিয়ে দেওয়া দাবিতে শুক্রবার থেকেই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে শনিবার রাজারহাটের হস্টেল কার্যত খালি করে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অবস্থান শুরু করলেন বোর্ডাররা। অবস্থানকারীরা জানিয়েছে, যতদিন না হিন্দু হস্টেল খোলা হচ্ছে, ততদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিল্ডিংয়ে অবস্থান করবেন তাঁরা। শুধু বোর্ডাররা নন, হস্টেলে থাকেন না এমন পড়ুয়ারাও বাড়ি থেকে ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে এসে অবস্থানে বসেছেন। রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে গণ কনভেনশনেরও ডাক দিয়েছে পড়ুয়ারা৷ যেখানে হাজির হতে আরজি জানান হয়েছে বর্তমান পড়ুয়া থেকে শুরু করে প্রাক্তনদের৷
প্রসঙ্গত, সংস্কারের জন্য ২০১৫ সালের জুলাই মাসে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম ইডেন হিন্দু হস্টেল খালি করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত বছর লিখিতভাবে পড়ুয়াদের এই বছরের ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে হস্টেল ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। কিন্তু ১৫ জুলাই পার হয়ে গেলেও হস্টেল ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। উলটে, সময়ের মধ্যে সংস্কারের কাজ করতে না পারার ব্যাখ্যা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন অনুরাধা লোহিয়া। এই বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাখ্যার পাশাপাশি হিন্দু হস্টেলের সংস্কারের কাজ পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমিটিও গঠন করার কথা বলা হয়েছে। এই কমিটিতে ছয়জন পড়ুয়াকে রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, ব্যাখ্যা ও কমিটিতে মানতে নারাজ প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা।
[প্রতাপচন্দ্র হোমিওপ্যাথি কলেজে অচলাবস্থা, বহু ডাক্তারের ডিগ্রি নিয়ে অনিশ্চয়তা]
স্টুডেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার রাজ্য কমিটির সদস্য শুভজিৎ সরকার শনিবার বলেন, “হিন্দু হস্টেলের এক নম্বর দু’নম্বর ওয়ার্ডের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করলেই তিন-চারদিনে কাজ শেষ করে পড়ুয়াদের হিন্দু হস্টেলে থাকার অনুমতি দিতে পারে। তাঁর দাবি, হিন্দু হস্টেলে যতদূর কাজ হয়েছে তাতে ১০০ জন আবাসিক রাখা যাবে। অবিলম্বে সেই জায়গায় যে সব পড়ুয়ারা রাজারহাট নিউটাউনের হস্টেলে থাকছেন তাঁদের হিন্দু হস্টেলে জায়গা দিতে হবে। পাশাপাশি, তাড়াতাড়ি সংস্কারের কাজ শেষ করতে হবে।” এদিকে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য জানিয়েছেন, “ইডেন হিন্দু হস্টেলে বর্তমানে সংস্কারের কাজ চলছে। ২০১৬ সালে এই ১৩২ বছর বয়সি হস্টেলের সংস্কারের কাজ শুরু করতে গিয়ে দেখা যায়, যা ভাবা হয়েছিল তার তুলনায় আরও অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এই হস্টেলটি। রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের কনসালটেন্ট আর্কিটেক্টের পরামর্শ অনুযায়ী রাজ্য সরকারের কাছে সংশোধিত বাজেট পেশ করি। ইতিমধ্যেই বর্তমান সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী আগে যে সংস্থা সরকারের কাজ করছিল তাদের বদল করে পূর্ত দপ্তরের হাতে সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়।”
[ব্রিগেডে পিছলো মোদির সভা, বাংলায় রথযাত্রায় বিজেপির সব মুখ্যমন্ত্রীরা]
এদিন অবস্থানকারীরা জানিয়েছেন, “উপাচার্য আমাদের বলেছিলেন, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে হিন্দু হস্টেল ফেরত পেয়ে যাবে। সেই ১৫ জুলাই পেরিয়ে আজ আগস্টের ৪ তারিখ। তাই অবিলম্বে হস্টেল ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আমরা অবস্থান বিক্ষোভে বসেছি।” দাবি না মানা হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
The post হিন্দু হস্টেলের দাবিতে উত্তপ্ত প্রেসিডেন্সি, অবস্থান বিক্ষোভে পড়ুয়ারা appeared first on Sangbad Pratidin.