সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নোট বাতিলেই শেষ নয়৷ কালো টাকা ও দুর্নীতিকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতে আসছে নয়া কেন্দ্রীয় আইন৷ ভবিষ্যতে সমস্ত সরকারি পণ্য, পরিষেবা বা সম্পত্তি কেনাবেচাকে অনলাইনে এক ছাতার নিচে আনতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ অনেকটা ই-কমার্স সাইট আমাজন-এর মতো হবে নতুন ওয়েবসাইট৷ যেখানে অনলাইনে এক জায়গায় মিলবে সমস্ত সরকারি পণ্য, পরিষেবা বা সম্পত্তির নিখুঁত বিবরণ, ছবি ও দাম৷ সেফিটিপিন থেকে পাওয়ার প্ল্যান্ট, সরকারের ঘর থেকে যে কোনও পণ্য কিনতে হলে ওই ই-কমার্স সাইটে ভিজিট করে, নাম-পরিচয় নথিভুক্ত করে কিনতে হবে৷ এর ফলে সরকারি লেনদেনে স্বচ্ছতা আসবে, সরকারি সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের হিসেবে লুকোছাপা থাকার অভিযোগ উঠবে না৷
গত ৮ নভেম্বর আচমকাই দেশের ৮৬ শতাংশ বড় নোট বাতিল বলে ঘোষণা করেন মোদি৷ নগদে নয়, দেশবাসীকে ‘ক্যাশলেস’ লেনদেনে উৎসাহ দিচ্ছে কেন্দ্র৷ খোদ প্রধানমন্ত্রী বিলক্ষণ জানেন, সরকারি স্তরেও লেনদেনে আর্থিক অস্বচ্ছতা রয়েছে৷ দুর্নীতিকে একেবারে গোড়া থেকে নির্মূল করতে তাই এবার সরকারের ভিতরেও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন মোদি৷ বাণিজ্যমন্ত্রকের এক শীর্ষ আমলা রীতা তিওতিয়া বলেন, এক অভূতপূর্ব পরিবর্তনের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে দেশ৷
(পাক ও বাংলাদেশ সীমান্তে ‘স্মার্ট ফেন্স’ বসাবে ভারত)
সূত্রের খবর, দেশের জিডিপি-র মোট ২০ শতাংশ আয় ইন্টারনেট মারফত করতে চায় কেন্দ্র৷ তাই দ্রুতই রেল, রাষ্ট্রীয় সংস্থা, রাজ্য সরকারি সংস্থা, প্রতিরক্ষা, সরকারি পরিষেবা-র লেনদেনকে অনলাইনে এক ছাতার তলায় আনতে চলেছে কেন্দ্র৷ যে কোনও সরকারি পরিষেবা, পণ্য কিনতে ওই ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে৷ সেখানেই দাম নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা থাকবে৷
এখন প্রশ্ন হল, যে দেশের মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহারের সুযোগ পায়, সেখানে এই পরিকল্পনা আদৌ সফল হবে তো? যদিও কেন্দ্র মনে করছে, নোট বাতিল হওয়ায় মানুষ যেভাবে ‘প্লাস্টিক মানি’ লেনদেনের দিকে ঝুঁকেছেন, সরকারি পরিষেবা পেতেও একইভাবে মানুষ অনলাইনকে বেছে নেবেন৷ তবে আম জনতা নয়, কেন্দ্রের কাছে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তাঁদের কর্মীদের প্রশিক্ষিত করে তোলা৷ কারণ, দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তরের সরকারি কর্মীরা ‘পাওয়ার কাট’-এর মতো একাধিক সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন কাজ করে চলেন৷ পরিকাঠামোয় আমূল পরিবর্তন না এনে এত বড় প্রকল্পকে যে বাস্তবায়িত করা সম্ভব নয়, সে কথা বিলক্ষণ জানেন প্রধানমন্ত্রী৷ তাই ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অধীনে দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও ইন্টারনেটের সুফল পৌঁছে দিতে চান মোদি৷ নয়া ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ হবে, দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে, আশা কেন্দ্রীয় সরকারের৷