সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে শিক্ষা হল। একাধিক দুর্ঘটনার পর শতবর্ষ ছুঁই ছুঁই বয়সে স্টিয়ারিং ছাড়লেন ব্রিটেনের প্রিন্স ফিলিপ। জমা দিয়ে দিলেন ড্রাইভিং লাইসেন্স। গত মাসে ব্রিটেনের কুইন্সে স্যান্ড্রিংহামে ডিউক অফ এডিনবরার দামি ল্যান্ড রোভার গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কিয়া হ্যাচব্যাক গাড়িতে ধাক্কা দেয়। বিন্দুমাত্র সৌজন্য না দেখিয়ে প্রিন্স ফিলিপ দুর্ঘটনাস্থল ছাড়েন বলে অভিযোগ জানান গাড়ির সওয়ারি এমা ফেয়ারওয়েদার। এনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় হয়। বহু সমালোচনার মুখে পড়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত মহিলার কাছে ক্ষমা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয় ডিউক অফ এডিনবরার কার্যালয় থেকে। আর এবার, পরিস্থিতি বুঝে প্রিন্স ফিলিপ সিদ্ধান্ত নিলেন, আর গাড়ি চালাবেন না। নরফোক পুলিশের কাছে জমা দিলেন গাড়ি চালানোর লাইসেন্স।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদে রাজকন্যা! বাধা সহোদরের
৯৭ বছরের প্রিন্স ফিলিপ ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্যতম সম্মানীয় সদস্য। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্বামী তিনি। আনুষ্ঠানিকভাবে ডিউক অফ এডিনবরা। বয়স অনেকটা হলেও, দ্রুত এবং মসৃণগতিতে গাড়ি চালানোয় বিশেষ দক্ষতার জন্য তিনি চালকের আসন ছাড়েননি। নিজে তো বটেই, এমনকি অতিথি আপ্যায়ণেও অনেক সময়েই প্রিন্স ফিলিপকে দেখা গিয়েছে গাড়ি চালাতে। বছর চার,পাঁচ আগেও লন্ডন সফররত তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাকে আমন্ত্রণ করে গাড়ি চালিয়ে নিজের প্রাসাদে নিয়ে গিয়েছিলেন নবতিপর প্রিন্স। তারপর থেকে নানা স্যান্ড্রিংহামের আশেপাশে তো বটেই, দেশের নানা জায়গায় গাড়ি চালিয়ে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে স্যান্ড্রিংহামে ল্যান্ড রোভার দুর্ঘটনার পর ব্রিটিশ রাজপরিবারের এই সদস্যের চালকের আসনে বসা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা শুরু হয়। ব্রিটেনের ট্রাফিক নিয়ম অনুযায়ী, একটা বয়সের পর আর কাউকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয় না। নব্বইয়ের ওপর বয়স হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে প্রিন্স ফিলিপের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের অনুমতি পায়, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমনকী রাজপরিবারের সদস্য বলে তাঁর জন্য নিয়ম শিথিল হয়নি। ট্রাফিক পুলিশের কাছে ‘ব্রিদ টেস্ট’ দিতে হয় তাঁকে। যদিও তাতে কোনও ত্রুটি ধরা পড়েনি। পুলিশের মতে, ওই সামনে এসে পড়া কিয়া হ্যাচব্যাকটিকে দেখতে না পেয়েই ধাক্কা দিয়েছে তাঁর ল্যান্ড রোভার।
যন্ত্রের মাধ্যমে ‘কার্বন শোষণ’, পরিবেশ রক্ষায় বড় পদক্ষেপ ব্রিটেনের
এসবের পরও বিতর্কের জল আরও গড়ায়। বাকিংহাম প্যালেস সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙে পড়েছিলেন প্রিন্স ফিলিপ। গাড়ি চালানোয় তাঁর দক্ষতা ধাক্কা খেয়েছে বলে ভাবতে শুরু করেছিলেন। এরপরই তাঁকে রাজপরিবারের তরফে পরামর্শ দেওয়া হয়, তিনি নিজে চালকের আসন থেকে যেন সরে আসেন। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছেড়ে দেন। সেইমতো ডিউক অফ এডিনবরার এই সিদ্ধান্ত। খবর ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই বলছেন, এতদিনে সুমতি ফিরল রাজকুমারের!
The post দুর্ঘটনার পর স্টিয়ারিং থেকে সরার সিদ্ধান্ত, লাইসেন্স জমা প্রিন্স ফিলিপের appeared first on Sangbad Pratidin.