ধীমান রায়, কাটোয়া: দীর্ঘ লকডাউনে স্কুল, কলেজের পাশাপাশি বন্ধ প্রাইভেট টিউশনও। তবে একটা সময় পর ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন চালু রাখতে এখন বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই অনলাইন ক্লাস চালু হয়েছে। গৃহশিক্ষকরাও অনেকে অনলাইনে ক্লাস করাতে শুরু করেছেন। তবে বাড়িতে বসে এভাবে পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ। কারণ, বাড়িতে স্মার্টফোন নেই, এমন সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের এক গৃহশিক্ষক তাই বিকল্প পথ খুঁজেছেন। ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে শুরু করেছেন খেলার মাঠে। সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখতেই তিনি মাঠ বেছে নিয়েছেন পড়ানোর জায়গা হিসেবে।
আউশগ্রামের ধনকুড়া গ্রামে বাড়ি হলেও বিশ্বজিৎবাবু বননবগ্রামে সপরিবারে থাকেন। গৃহশিক্ষকতাই তাঁর পেশা। ধনকুড়া ও বননবগ্রাম – দু’জায়গা মিলিয়ে তাঁর ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা শতাধিক। তবে লকডাউনের কারণে প্রায় দু’মাস বন্ধ ছিল টিউশন। দিন দুই আগে তিনি ফের টিউশন শুরু করেছেন। বদ্ধ ঘরে বিঘ্নিত হবে সামাজিক দূরত্ব। তাই বিশ্বজিৎবাবু স্কুলের মাঠে পড়ুয়াদের নির্দিষ্ট দূরত্বে বসিয়ে পড়াচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: ওড়িশা থেকে কষ্ট করে ঘরে ফেরাই সার, বাড়ির পরিবর্তে আমবাগানে ঠাঁই পরিযায়ী শ্রমিকদের]
বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ” আমাদের এলাকায় অধিকাংশ নিম্ন মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষের বসবাস। অনেক পরিবারের স্মার্টফোন নেই। তারা অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। তাছাড়া অভিভাবকরাও আমার কাছে বারবার নালিশ করছিলেন, তাঁদের ছেলেমেয়েরা বাড়িতে পড়াশোনা করছে না, দুষ্টুমি করছে। তাই বিকল্প উপায়ে টিউশন শুরু করে দিয়েছি।”
জানা গিয়েছে, বননবগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ও ধনকুড়া গ্রামের একটি ফাঁকা মাঠে টিউশন শুরু করেছেন বিশ্বজিৎবাবু। তিনি জানান, সরকারি নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং পড়ুয়াদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করিয়ে তবেই সতর্কতার সঙ্গে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা শুরু হওয়াতে খুশি অভিভাবকরাও। আর খোলা মাঠে পড়তে বসে আনন্দিত পডুয়ারা।
[আরও পড়ুন: মরদেহ গ্রামে এলেও মিলল না স্নেহের পরশ, করোনা আতঙ্কে দূরেই রইলেন পরিজনরা]
ছবি: জয়ন্ত দাস।
The post ঘরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সমস্যা, লকডাউনে পর মাঠেই পড়ানো শুরু গৃহশিক্ষকের appeared first on Sangbad Pratidin.