সুমনা আদক: শারদ উৎসবের আবহে আত্মহারা বাঙালি। এই উৎসবের কথা শোনেননি তেমন কেউ নেই। আনন্দে শামিল প্রবাসীরাও। লন্ডনের হান্সলোর বাঙালিরা বেজায় ব্যাস্ত উমার আরাধনায়(Probashe Durga Puja)। 'আদিশক্তি' নামটা বেশ জনপ্রিয় লন্ডনবাসী বাঙালির কাছে। অষ্টম বর্ষে পা দিল তাদের মাতৃ আরাধনা। পঞ্জিকা, শাস্ত্র, আচার মেনে প্রতি বছরের পুজোর দিনগুলো এখানকার বাঙালি এবং অবাঙালি ভারতীয়দের কাছে বড্ড প্রিয়। সুদূর কলকাতার ঘনঘটা আর সাবেক আটচালার উমায় আলোকিত ক্যামেফোর্ড কলেজ প্রাঙ্গন।
ব্রিটেনের ৬৪টি পুজোর মধ্যে আদিশক্তির পুজোর আকর্ষণ এখানকার আড্ডা, ঠিক যেন বাঙালির বৈঠকখানা। আট বছর ধরে দুর্গা পুজোর আনন্দে হাত পাকিয়েছে অবাঙালিরাও। সেই নবরাত্রি থেকে শুরু হয়ে ডান্ডিয়া উৎসব পার করে উৎসব শেষ হয় সিঁদুর খেলে মিষ্টিমুখে। ষষ্ঠীর বোধনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে উমার আগমন হয় হান্সলোর বাঙালির ঘরে। উইকেন্ডে সমাপ্ত হবে এবারের পুজো।
পুজোর আয়োজনে প্রবাসীরা।
সপ্তমীর পুজো হয়ে অষ্টমীর অঞ্জলি, সন্ধি পুজো, প্রসাদ বিতরণ, সবেতেই থাকে আদিশক্তির ভালোবাসার ছোঁয়া। পুজো উদ্যোক্তাদের সৌজন্য বিনিময়ে ক্লান্তি নেই। এক এক করে লন্ডনের বিভিন্ন শহরের বাঙালিরা পাড়ি জমায় ক্যামফোর্ড কলেজ হলের মণ্ডপে। উইক ডেস কিংবা উইকেন্ডে। পাঁচ দিনের আড্ডার পাশাপাশি সংস্কৃতিক সন্ধ্যাগুলোও জমজমাট। নাচ, গান, নাটকে টেক্কা দিচ্ছে একে অপরকে। আদিশক্তির পুজো কমিটির মেম্বাররা দাবি করেন, এবছরও তার ব্যাতিক্রম হবে না। কিন্তু হাজার আনন্দের মাঝেও এবারে বিষাদের ছায়া আদিশক্তির উমার ঘরে।
অভয়ার বেদনায় বেদনাহত হান্সলোর পরিবার। কণ্ঠে কণ্ঠে গর্জে উঠছে বিচারের ডাক। নির্ভয়া থেকে অভয়া, যাঁদের আর্তনাদে অশ্রুবর্ষণ করে দেশবাসী, সেই অভয়ারা বিচার চাইছেন সকলে। তাই এবারের লন্ডনের শারদৎসবে জৌলুস কম। সবার প্রার্থনা---রক্ত মাংসের উমারা যেন নির্ভয়ে বাঁচে, দুচোখ ভোরে রঙিন স্বপ্ন নিয়ে। অসুস্থ সমাজের নাশ হোক, জেগে উঠুক সুস্থ সমাজ।