অভিরূপ দাস: ১৪৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম। জাতীয় সঙ্গীত নয়। বাংলার রাজ্য সঙ্গীত গেয়ে শুরু হল কলকাতা পুরসভার অধিবেশন। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার। জানিয়ে দিয়েছে সমস্ত অনুষ্ঠান, কর্মসূচির শুরুতে গাইতে হবে রাজ্য সঙ্গীত। এদিন সেই নির্দেশিকা মেনেই ‘জনগণমন’ নয়, ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ দিয়ে শুরু হল কলকাতা পুরসভার অধিবেশন। দাঁড়িয়ে গলা মেলালেন বাম-বিজেপি কাউন্সিলররাও। টানা এক মিনিট ৫৯ সেকেন্ড ধরে গাওয়া হয় রাজ্য সঙ্গীত। নিয়মও তাই। রাজ্য সরকারের সমস্ত অনুষ্ঠান, কর্মসূচির শুরুতে ১ মিনিট ৫৯ সেকেন্ড ধরে গাইতে হবে ‘রাজ্য সঙ্গীত’।
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের স্মৃতি বিজরিত পুরসভায় প্রথম রাজ্য সঙ্গীত গেয়ে অধিবেশন শুরু। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ”আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের নিজস্ব রাজ্য সঙ্গীত ঠিক করে দিয়েছেন।” তবে এদিন অধিবেশনের শেষে যদিও জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়। ফিরহাদের কথায়, ”জনগণমন অধিনায়ক গেয়ে আমরা গর্ব অনুভব করি। বাংলার মাটি বাংলার জল গেয়েও একই রকম গৌরব হয়।”
২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন। তার আগে এদিন অধিবেশন শেষে মেয়র বলেছেন, ‘‘আজকের মতো অবস্থা হয়েছিল যখন বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন হয়েছিল। এখন রামমন্দির উদ্বোধনের ছুতোয় ধর্মের নামে দেশকে ভাগ করার পরিকল্পনা করছে কেউ। লক্ষ করুন এই গানে রবীন্দ্রনাথ লিখছেন, ‘..বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন, এক হউক হউক এক হউক…’।’’
[আরও পড়ুন: সিদ্দারামাইয়ার সামনেই ‘মোদি মোদি’ শব্দব্রহ্ম কর্নাটকে, মুখ্যমন্ত্রীর ‘জ্বালা’ বাড়িয়ে কী বললেন প্রধানমন্ত্রী]
মেয়রের কথায়, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ধর্মের নামে ভেদাভেদের বিরুদ্ধে গান লিখেছেন। সময়ের দাবিতে আজ সেই গান একইরকম প্রাসঙ্গিক। সঙ্ঘবদ্ধভাবে আমরা এক থাকব। এটাই আমাদের গর্ব।’’ ঠিক হয়েছে, এবার থেকে প্রতিটি অধিবেশনের শুরুতেই হবে এই রাজ্য সঙ্গীত।
সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রতি বছর পয়লা বৈশাখে শ্রদ্ধা এবং মর্যাদার সঙ্গে ‘রাজ্য দিবস’ পালন করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দে্যাপাধ্যায় আগেই জানিয়েছেন, রাজ্যের গরিমা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে দীর্ঘদিন ধরেই ‘রাজ্য দিবস’ এবং ‘রাজ্য সঙ্গীত’-এর প্রয়োজন অনুভূত হয়। পয়লা বৈখাখকে সেই ‘রাজ্য দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। যাকে বলা হবে ‘বাংলা দিবস’।