সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশেও নূপুর শর্মা বিতর্কের আঁচ। কয়েকদিন আগে ওই বিজেপি নেত্রীকে নিয়ে এক ছাত্রের করা পোস্টে উত্তাল হয়ে ওঠে নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজ। জুতোর মালা পরিয়ে চরম হেনস্তা করা হয় কলেজের অধ্যক্ষকে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই দলীয় নেতার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল শাসকদল আওয়ামি লিগ।
জানা গিয়েছে, মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপনকুমার বিশ্বাসকে অপদস্থ করার ঘটনায় বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামি লিগের সভাপতি এবং ওই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আকতার হোসেনকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নড়াইল সদর উপজেলা আওয়ামি লিগের সভাপতি অচিনকুমার চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ ওমর ফারুকের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে আকতার হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। আকতার হোসেনের নাম ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে উঠে আসছে বলে জানিয়েছেন নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়ও।
[আরও পড়ুন: হজ করতে গিয়ে ভিক্ষা! সৌদি আরবে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি ‘ডাকাত’]
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৭ জুন ওই কলেজের একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিজের ফেসবুকে নূপুর শর্মাকে (Nupur Sharma) প্রণাম জানিয়ে ছবি-সহ একটি পোস্ট দেয়। এ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হলে অধ্যক্ষ স্বপনকুমার বিশ্বাস কলেজের শিক্ষক, ওই শিক্ষার্থীর বাবা ও কলেজ পরিচালনা পরিষদের কয়েকজন সদস্যকে ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকে শিক্ষার্থীকে তাঁদের কাছে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ সদস্যরা ওই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে নিয়ে যেতে চাইলে উত্তেজিত ছাত্র ও বহিরাগত কয়েকজন বাধা দেন। তখন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু কেউই কোনও ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ। পুলিশের সামনেই কলেজের অধ্যক্ষকে জুতোর মালা পরানো হয়। ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য, পয়গম্বর বিতর্কে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি বাংলাদেশ। দুই দেশের বন্ধুত্বের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তবুও বিত্রকের আঁচ সে দেশে লেগেছে। এর আগে নূপুর শর্মার মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব হয়েছিল বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। তবে, মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে সাময়িক বরখাস্ত এবং নবীন কুমার জিন্দালকে বহিষ্কার করায় ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায় বিএনপি। উভয় দেশের জনগণের মধ্যে কয়েক দশক থেকে চলে আসা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বরাবরের মতোই অক্ষুণ্ণ থাকবে বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছিল খালেদা জিয়ার দল।