সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট বিলকিস বানোর ধর্ষণে (Bilkis Bano Gang Rape Case) দোষী সাব্যস্তদের জামিন পাওয়া ছিল দেশ তোলপাড় করা ঘটনা। ধর্ষণে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে গুজরাট সরকার মুক্তি দেয়। আর তারপরই সমালোচনায় মুখর হয় নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলি। তবে চাপের মুখেও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল প্রশাসন। এই সিদ্ধান্ত সঠিক না বেঠিক, নারীর অধিকার রক্ষার পক্ষে তা কতটা বিপজ্জনক, কী দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হল– এসব বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, আলোচনা এখনও চলছে। এবারই এই বিষয়ে এক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, গণ বিক্ষোভে বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হবে না।
বানোর ধর্ষকদের মুক্তির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে দায়ের হয়েছে মামলা। মঙ্গলবার ছিল সেই মামলারই শুনানি। এদিন বিচারপতি বিভি নাগারত্ন ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, বিক্ষোভ-প্রতিবাদের প্রভাব আইনি সিদ্ধান্তে কোনও প্রভাব ফেলবে না। আইন আইনের পথেই চলবে।
[আরও পড়ুন: শাহরুখের বদলে ‘ডন ৩’ ছবিতে রণবীর সিং! ফারহানের ঘোষণায় চাঞ্চল্য, ক্ষিপ্ত নেটিজেনরা]
বানোর আইনজীবী শোভা গুপ্তা সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিলেন, দোষীদের মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে জনবিক্ষোভের মতো একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরকেও বিচার করা উচিত। তিনি দাবি করেন, বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তির পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হয়েছে।
তাঁর এই বক্তব্যের জবাবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ”গণ বিক্ষোভ আমাদের বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে না। আমরা কেবল আইনি প্রক্রিয়াকেই দেখব, ওটা (বিক্ষোভ-প্রতিবাদ) দেখে এগোব না। ধরা যাক, কোনও বিক্ষোভ হল না। সেক্ষেত্রে আমরা কি নির্দেশ বহাল রেখে দেব? গণ বিক্ষোভ মানেই সিদ্ধান্ত ভুল ছিল?”
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গোধরা হিংসার সময়ে অন্ত্বসত্ত্বা বিলকিসকে (Bilkis Bano) গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুনের অভিযোগে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু গত ১৫ আগস্ট গুজরাট সরকারের নির্দেশে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়। ধর্ষকদের কার্যত বীরের সম্মান দিয়ে বরণ করা হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে। তারপরই দেশজুড়ে অসন্তোষের হাওয়া বইতে শুরু করে। সেই সঙ্গে গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনেকে।