সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলার ব্রত কথায় লিখেছিলেন, ‘মেয়েরা বছরে আরও কয়েকবার লক্ষ্মীব্রত করেন, যেমন ভাদ্রে, কার্তিকে, চৈত্রে। কিন্তু সেগুলো ঐ তিন লক্ষ্মীব্রতরই ছাঁচে চালা।’ ‘তিন লক্ষ্মীব্রতরই’ বলতে হরিতা দেবী, কোজাগরী লক্ষ্মী ও অঘ্রাণ মাসে অরুণা লক্ষ্মীর কথা লিখেছেন তিনি। কার্তিক মাসে যে লক্ষ্মীর আরাধনার কথা অবনীন্দ্রনাথ লিখেছেন তা দীপান্বিতা লক্ষ্মী। এককালে মূলত পশ্চিম ও মধ্যবঙ্গে এই পুজো হত। দিনেকালে তা ছড়িয়েছে বাংলার ঘরে ঘরে। ঘর থেকে অলক্ষ্মী দূর করতে এই পুজো হয়।
দীপান্বিতা শব্দের অর্থ দীপের আলো। আলোর রোশানাইয়ে বাড়ি সাজিয়ে বাঙালির ঘরে ঘরে দীপান্বিতা লক্ষ্মীর পুজো হয়। বহু অবাঙালি বাড়িতেও লক্ষ্মীপুজো হয়। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে দীপান্বিতা অমাবস্যা পড়েছে আগামী সোমবার অর্থাৎ ২০ অক্টোবর। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুযায়ী দুপুর ৩টে ৪৬ মিনিট থেকে অমাবস্যা আরম্ভ। অমাবস্যা শেষ পরদিন সন্ধ্যা ৫টা ৫৫ মিনিটে। আবার গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে, অমাবস্যা শুরু সোমবার দুপুর ২টো ৫৫ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডে। অমাবস্যা শেষ পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার বিকেল ৪টে ২৫ মিনিট ২৩ সেকেন্ডে।
এবার জেনে নেওয়া যাক পুজো করার আগে কী করবেন?
* ভালো করে ঘর ধুয়ে পরিষ্কার করুন। লক্ষ্মী অপরিছন্নতা পছন্দ করেন না। গঙ্গাজল দিয়ে ঘর পরিশুদ্ধ করে নিন।
* ঘরের সেরা জায়গাটি পুজো করার স্থান হিসাবে বেছে নিন। পুজোয় দেবীর আসনে লাল কাপড় ব্যবহার করুন। কয়েকটি দানা শস্য ছড়িয়ে দিন। চেষ্টা করুন প্রতিমা যেন পূর্ব দিকে মুখ করে বসানো হয়।
* দেবীর সামনে রুপো বা পিতলের কলস স্থাপন করুন। তার মধ্যে সুপারি, গাঁদাফুল, কয়েকদানা চাল দিয়ে কলসের উপর আম্রপল্লব দিয়ে দেবেন।
* হলুদ গাঁদা বা সাদা ফুল, মালা ব্যবহার করুন পুজোয়। ভুলেও তুলসী পাতা ব্যবহার করবেন না।
* মায়ের সামনে অবশ্যই সর্বদা প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখুন। ঘট না নাড়ানো পর্যন্ত প্রদীপটি যাতে জ্বলে, সেদিকে নজর রাখবেন। ঘরের কোনও কোণ যেন অন্ধকার না থাকে, তা সুনিশ্চিত করবেন।
