সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় সেনাবাহিনীতে (Indian Army) যোগ দিলেন ২০১৯ সালের পুলওয়ামা (Pulwama Attack 2019) হামলার অন্যতম শহিদ মেজর বিভূতিশঙ্কর ধোন্দিয়ালের স্ত্রী নিকিতা কউল। ২০১৯ সালে দেশের প্রতি তাঁর আত্মত্যাগের জন্য শৌর্য চক্র পুরস্কার দেওয়া হয় মেজরকে। স্বামীর প্রয়াণের ৬ মাসের মধ্যেই নিকিতা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনিও সেনাবাহিনীতেই যোগ দেবেন। অবশেষে পূরণ হল সেই স্বপ্ন।
২৮ বছরের নিকিতা ২০২০ সালে শর্ট সার্ভিস কমিশন (SSC) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর পেরিয়ে যান সাক্ষাৎকারের গণ্ডিও। অবশেষে গত ২৬ মে ‘অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাদেমি’ থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে শনিবার যোগ দিলেন সেনাবাহিনীতে। স্বাভাবিক ভাবেই জীবনের এমন এক মুহূর্তে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে তাঁকে। নিজের সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে নিকিতা জানিয়েছেন, প্রয়াত স্বামীর প্রতি এভাবেই তিনি শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছেন। পাশাপাশি সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে তিনি যেন স্বামীর আরও কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারলেন বলেই জানান নিকিতা।
[আরও পড়ুন: ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই করোনার টিকা পাবেন প্রত্যেক দেশবাসী, ফের দাবি কেন্দ্রের]
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলা হয়, সেই সময় নিকিতা ও মেজর বিভূতিশঙ্করের বিয়ের বয়স মাত্র ৯ মাস। স্বামীর মৃত্যুর পরে নিকিতা তাঁর উদ্দেশে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘তুমি বলেছিলে তুমি আমাকে ভালবাস। কিন্তু সত্যিটা হল, দেশকে তুমি চার চেয়েও বেশি ভালবাসো। আমি সত্যিই গর্বিত। আমরা সবাই তোমাকে ভালবাসি। তুমি যেভাবে সকলকে ভালবেসেছিলে তা বাকিদের থেকে আলাদা। কেননা তুমি এমন মানুষদের জন্য জীবন উৎসর্গ করলে যাদের সঙ্গে তোমার পরিচয়ও নেই। তুমি এত সাহসী! তোমাকে আমার স্বামী হিসেবে পেয়ে আমি গর্বিত। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তোমাকে ভালবাসব। আমার জীবন তোমাকেই উৎসর্গ করেছি।’’
স্বামীর উদ্দেশে জীবন উৎসর্গ করতে সেনাবাহিনীতে যোগদানের স্বপ্নকেই বেছে নিয়েছিলেন নিকিতা। অতর্কিতে জীবনের উপরে নেমে আসা ভয়াবহ আঘাতেও নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন তিনি। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, কেবল চোখের জল ফেলে ও স্বামীর রেখে যাওয়া স্মৃতি নিয়েই জীবন অতিবাহিত করবেন না তিনি। বরং সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে পূরণ করবেন স্বামীর অসমাপ্ত কাজ। অবশেষে স্বপ্নপূরণ হল তাঁর।