সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'আষাঢ়-বর্ষা-রথ-জগন্নাথ-পুরী/ বাঙালির মন করবেই চুরি'। সবার জানা। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। যদিও ঐতিহ্যময় মাহেশ রয়েছে, কলকাতার ইসকনের রথও ধুমধাম করে হয়, তথাপি সকালে উঠেই পুরীর (Puri) রথযাত্রার (Rath Yatra) ডাইরেক্ট টেলিকাস্ট দেখতে টিভি খুলে বসে যায় গোটা বাংলা মানুষ। তবে কিনা বাঙালির সঙ্গে বিশেষ যোগ থাকলেও জন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা ঠাকুর এবং পুরীর রথযাত্রা বহুকাল থেকেই প্যান ইন্ডিয়া উৎসব। ফলে বছর বছর সেখনে ভিড় উপচে পড়ছে। জলসমুদ্র সাক্ষী হচ্ছে জনসমুদ্দুরের। এবারও রশিটানা রথ আর লাখো ভক্তের মাথা, এমন ছবিই সংবাদমাধ্যম এবং সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে আসছে।
জগন্নাথধামে জনসমুদ্র।
প্রতিবারের মতো পুরীর মন্দিরের সামনে প্রস্তুত ছিল সুসজ্জিত তিনটি রথ। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা তিন দেবতাকেও সাজিয়ে তোলা হয়েছিল নবযৌবন বেশে। তবে সকালে নয়, ৫৩ বছর পর বিরল যোগের কারণে আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথির দিন বিকেলে রথের রশিতে টান পড়ল এবার। একই কারণে এবারে দুই দিন ব্যাপি রথযাত্রা। আজ কিছু দূর গড়িয়েই থেমে গেল রথের চাকা। ফের কাল শুরু হবে যাত্রা। নিয়ম মতো জগন্নাথ, বলরাম বা বলভদ্র এবং সুভদ্রাদেবী মাসির বাড়ি গুণ্ডিচার উদ্দেশে রওনা হলেন।
রথের মহাযাত্রা।
[আরও পড়ুন: নাচেই জগন্নাথ বন্দনা ডোনার, ইন্দ্রাণী হালদারের ভোগে থাকে রকমারি পদ]
যাত্রা শুরুর আগে রথ পুজো হল প্রথা মেনে। এর পর শ্রীশ্রী 'গজপতি মহারাজা' পবিত্র রথের সামনের অংশ ঝাট দিয়ে মহাযাত্রার সূচনা করেন। রাজত্ব না থাকলেও পুরীর রাজার ভগবানকে বরণের এই রেওয়াজ আজও অব্যাহত। এর পরই রথ গড়াতে থাকে গন্তব্যের দিকে। জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাদেবী মাসির বাড়ি যাত্রার প্রতিটি মূহূর্তের ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের এক্স অ্যাকাউন্ট থেকেও উৎসবের ছবি প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে।
জয় জগন্নাথ!
[আরও পড়ুন: হার্দিক-নাতাশার বিচ্ছেদের জল্পনায় সিলমোহর! অভিনেত্রীর ভিডিও ঘিরে চাঞ্চল্য]
প্রতিবার রথযাত্রায় যেমন আমজনতার ঢল নামে তেমনই ভিভিআইপি সমাগমও কম হয় না। তার মধ্যে থাকেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল প্রমুখ। ওড়িশায় এখন 'ডাবল ইঞ্জিন সরকার'। নবীন পট্টনায়কের বিজেডিকে সরিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। যথারীতি ওড়িশার নতুন মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি এবং রাজ্যপাল রঘুবর দাস উপস্থিত ছিলেন বচ্ছরকার জগন্নাথ পুজোয়। তার উপর রাষ্ট্রপতী দ্রৌপদী মুর্মুও (Draupadi Murmu) এবার হাজির হয়েছেন বঙ্গোপসাগর তীরের শহরে। চারদিনের ওড়িশা সফরের মধ্যে রবিবারটি তিনি দেবভূমেই কাটাচ্ছেন, জগন্নাথদেবের আশীর্বাদ পেতে। এর ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কয়েক গুণ বাড়াতে হয়েছে। ঘুম ছুটেছে ওড়িশা পুলিশেরও। সব মিলিয়ে নীলাচলে 'রথযাত্রা লোকারণ্য মহা ধুমধাম'।
উৎসবে শামিল ওড়িশার প্রাক্তন ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী।