অমিতলাল সিং দেও, মানবাজার: ‘রাখে হরি মারে কে?’ – এই প্রবাদই যেন সত্যি হল পুরুলিয়ার (Purulia) কেন্দায়। টইটম্বুর কংসাবতী নদীর জলে স্নান করতে নেমে পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত ভেসে গিয়েছিল যুবক। তার পরেও প্রাণে বেঁচে ফিরলেন দিবাকর মাহাতো নামে এক যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, দিবাকর মাহাতোর বাড়ি কেন্দা (Kenda) থানার কোনোপাড়া গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে কোনোপাড়া ঘাটে কংসাবতী নদীতে (Kangsabati River) স্নান করতে নেমেছিলেন বছর ছত্রিশের দিবাকর। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে উত্তাল কংসাবতীর জলে আচমকাই ভেসে যান তিনি। আশপাশের লোকজন সেখানে ছুটে গেলেও ততক্ষণে ওই যুবক মাঝনদীতে হাবুডুবু খাচ্ছেন। তড়িঘড়ি প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনাটি ওই যুবকের গ্রামে জানান। খবর যায় কেন্দা থানার পুলিশের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, নদীর সামনা সামনি গ্রামের সব সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের (Civic Volunteers) নদীতীরে পাঠিয়ে ওই যুবকের খোঁজ নিতে বলা হয়।
[আরও পড়ুন: সাতপাক ছাড়া হিন্দু বিবাহ অবৈধ, মন্তব্য এলাহাবাদ হাই কোর্টের]
পুলিশ জানতে পারে, দ্রুতগতিতে বানের জলে ওই যুবক ভেসে যাচ্ছেন। ঘোলা জলে শুধু মাত্র তার মাথাটুকুই দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল। এর পরেই বামুনডিহা গ্রামের আমবাগানের কাছে কয়েকজন স্থানীয় সিভিক ভলান্টিয়ার্স (Civic volunteers) দেখেন, নদীর বাঁকে আটকে পড়েছেন দিবাকর। ওই সময় স্থানীয় দুই যুবক নদীতে নেমে দিবাকরকে উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পায়ে হেঁটে নিয়ে আসার পর পুলিশ গাড়িতে চাপিয়ে তাঁকে চাকলতোড় গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এরপর ওই যুবক সুস্থ হওয়ার পরে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ‘দেখা করতে হলে উত্তরবঙ্গে আসুন’, তৃণমূলকে প্রস্তাব রাজ্যপালের, ‘জমিদারি’তে তোপ শাসকদলের]
এক পুলিশ আধিকারিক জানান, যে জায়গা থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে সেখানে পৌঁছতে মাঝপথে একটি ছোট নদী পড়ে। উদ্ধারকাজে যাতে কোনও দেরি না হয় তাই ওই পরিস্থিতিতে স্থানীয় লোকজনদের আগাম সেখানে পৌঁছে ওই যুবককে নদী থেকে পাড়ে তুলে আনতে বলেছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার্সরা। কারণ, নদীর যে বাঁকে দিবাকর আটকে পড়েছিলেন জলের গতি বাড়লে সেখান থেকে ভেসে গেলে আর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যেত না। কাজেই ‘পুনর্জন্ম’ পেয়ে খুশি দিবাকর মাহাতো।
অন্যদিকে, হড়পা বানে (Flash Flood) ভেসে যাওয়ার দু’দিন পর এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করল মানবাজার থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ভাগবত মাহাতোর (৩৭) বাড়ি বরাবাজার থানার ডুমুরডি গ্রামে। বুধবার দুপুরে মানবাজার (Manbazar) থানার জনাড়া গ্রামের অদূরে কুমারী নদী থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।