shono
Advertisement

খাদ্যশস্য ও বস্ত্রের মিশেলে তৈরি এক ফুটের লক্ষ্মী, সূক্ষ্ম কারুকাজে তাক লাগালেন শিক্ষক

গত ১৪ বছর ধরে নিজের হাতে লক্ষ্মী তৈরি করে আরাধনা করেন শিক্ষক।
Posted: 12:03 PM Oct 29, 2020Updated: 12:03 PM Oct 29, 2020

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: অতিমারির থাবায় এখনও অভাব ঘোচেনি। টান রয়েছে অন্ন ও বস্ত্রে। সে কথা মাথায় রেখে মাটির সঙ্গে খাদ্যশস্য ও বস্ত্র হিসাবে রেশম, তুলা, পাটকে ব্যবহার করে ধনের দেবী লক্ষ্মী গড়লেন পুরুলিয়ার শিক্ষক। সূক্ষ্ম কারুকাজে মাটির প্রতিমা যেন সাক্ষাৎ লক্ষ্মী রূপে ফুটে উঠছে! ফি বছরই তিনি নিজের হাতে লক্ষ্মী গড়ে আরাধনা করেন। প্রতি বছরেই প্রতিমা গড়ার কাজে কোন না কোন থিমকে ব্যবহার করে থাকেন তিনি। এইভাবেই গত ১৪ বছর ধরে তিনি নিজের হাতে লক্ষ্মী তৈরি করে পুজো করে আসছেন। এবারও তাঁর হাতের তৈরি লক্ষ্মী প্রতিমা তাক লাগাল শহরে। প্রায় এক ফুটের লক্ষ্মী প্রতিমা আজ বৃহস্পতিবার পুজোর একদিন আগেই সোনার অলঙ্কারে সেজে উঠবে। তার আগে বুধবার বিকেলে পুরুলিয়ার (Purulia) রাঁচি রোড বাই লেনে নিজের বাড়িতে ওই প্রতিমার সম্পূর্ণ কাজ শেষ করেন শিক্ষক শংকর মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

এবারও তিনি লক্ষ্মী (Laxmi) প্রতিমা তৈরিতে ১১ রকমের মাটি ব্যবহার করেন। শিক্ষকের কথায়, “ধনের দেবীর কাছে প্রার্থনা এই অতিমারি থেকে রক্ষা করে অভাব অনটন ঘুচিয়ে দাও। অন্ন ও বস্ত্রে আমাদের পরিপূর্ণ করো। সমৃদ্ধ করো।”  একেবারে ছেলেবেলা থেকেই তাঁর হাতের কাজ সকলের চোখ টানে। হাতেকলমে কখনও মূর্তি তৈরির কাজ শেখেননি। তবে মাতৃপ্রতিমার টানে কুমোর পাড়ায় বসে থাকা আজও তাঁর অভ্যাস। আর সেই কুমোরদের দেখেই গত ১৪ বছর ধরে নিজ হাতে লক্ষ্মী গড়ে বাড়িতে আরাধনা করে আসছেন পুরুলিয়া মফস্বলের বেলকুঁড়ির রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশনের এই সংস্কৃত শিক্ষক। শুধু মূর্তি গড়াই নয়। তাঁর হাতে বাহারি আলপনা যেন ঝিলিক দেয়। শিক্ষকতার ফাঁকেই অবসরে এই শিল্পকর্ম চলে তাঁর।

[আরও পড়ুন: জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি চান? লক্ষ্মীপুজোয় এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না]

লক্ষ্মী প্রতিমায় এবারও ব্যবহৃত হয়েছে যজ্ঞশালা, সমুদ্র, গোষ্ঠ, চতুষ্পদ, বল্মীকি, তীর্থ দেবদ্বার, পুষ্করিনী, কুশমূল, রাজদ্বার, গঙ্গা ও বেশ্যাদ্বার থেকে নিয়ে আসা মৃত্তিকা। গত বছর তিনি টানা ১২ মাস ধরে এই মাটিগুলি সংগ্রহ করেছিলেন। এবারও সেই মাটিকেই ব্যবহার করে খাদ্যশস্য ও রেশম, পাট, তুলোর সাহায্যে প্রতিমা ও তার আলয় তৈরি করলেন। মূলত ধান, যব, তিল, কলাই, মুগ, কালো ও সাদা সরষে দিয়েই চার ফুট উচ্চতা ও পাঁচ ফুট চওড়ার বৃহৎ লক্ষ্মী আলয় তৈরি করেন। লক্ষ্মীর মেরুন শিফন জরির শাড়িও নিজ হাতে সেলাই করেন শিক্ষক। থার্মোকল, পাথর, জরি, পুঁথি নিয়ে তৈরি করেন লক্ষ্মীর ঝাঁপি। সেই সঙ্গে পাথরের সাহায্যে লক্ষ্মীর কোমরবন্ধনী, রানিহার, চিক, কানের দুল, আংটি, মুকুট, নথ, চু়ড়ি, নুপূর-সহ নানা অলংকারও গড়েছেন নিজে। মহালয়ার প্রায় সপ্তাহতিনেক আগে থেকেই শুরু তাঁর এই কাজ।

[আরও পড়ুন: বড় সিদ্ধান্ত, দুর্গাপুজোর মতোই চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোয় দর্শনার্থীদের মণ্ডপে প্রবেশ নিষিদ্ধ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement