সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ন্যাটো সামরিক জোটে সদস্যপদ পাকা করে ফেলেছে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। ইউক্রেনে রুশ হামলার পরই নিরপেক্ষ অবস্থানে ইতি টেনেছিল দুই ইউরোপীয় দেশ। পালটা, পরমাণু অস্ত্রের আস্ফালন করে হুমকি দিয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু এবার ভোলবদলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বললেন, দুই দেশের ন্যাটো সদস্যপদ প্রাপ্তি নিয়ে তাঁর কোনও সমস্যা নেই। তবে আগ্রাসী সামরিক পরিকাঠামো তৈরি করলে প্রত্যাঘাত করা হবে।
ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই ন্যাটোর (NATO) সদস্য হতে আগ্রহ প্রকাশ করে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। কিন্তু তাদের যোগদান নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছিল তুরস্ক (Turkey)। অবশেষে বুধবার মাদ্রিদে ন্যাটোর বৈঠক শুরু হওয়ার আগেই নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে তুরস্ক। লিখিত ভাবে আঙ্কারা জানিয়ে দেয়, নতুন দুই দেশের সদস্যপদ গ্রহণে কোনও আপত্তি নেই তাদের। তারপরই ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাকা। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পুতিন বলেন, “ওরা ন্যাটোয় যোগ দিচ্ছে, নো প্রবলেম। ইউক্রেনের সঙ্গে আমাদের যে সমস্যা রয়েছে তা সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সঙ্গে নেই। ভৌগলিক অবস্থান বা সীমানা নিয়ে আমাদের কোনও সংঘাত নেই। ওরা যে কোনও জোটে যোগ দিতেই পারে। কিন্তু যদি সেখানে সামরিক পরিকাঠামো তৈরি বা সেনা মোতায়েন করা হয়, তাহলে আমরা সেইমতো প্রত্যাঘাত করব।”
[আরও পড়ুন: পুতিনের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ করলেও রাশিয়ান স্যালাডেই মজে ন্যাটো কর্তারা]
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। তারপর থেকেই সরাসরি যুদ্ধে না জড়ালেও কিয়েভকে অস্ত্র, রসদ জোগান দিচ্ছে ন্যাটো। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রুষ্ঠ রাশিয়া (Russia)। বুধবার, ন্যাটোর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, “ইউক্রেন বা দেশটির জনতার কল্যাণ সাধন করা ন্যাটো বা পশ্চিমের উদ্দেশ্য নয়। তারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পদক্ষেপ করছে। নিজেদের সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্খা পূরণ করছে আমেরিকা ও ন্যাটো দেশগুলি। বহুদিন ধরেই একটি শত্রু খুঁজে নিয়ে মিত্র দেশগুলিকে একসুতোয় বাঁধতে চাইছিল আমেরিকা। ইরানকে দিয়ে সেই উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি। আমরা সেই সুযোগ করে দিয়েছি।”
উল্লেখ্য, কয়েক দশক ধরে, এমনকি সোভিয়েত ইউনিয়ন ও আমেরিকার মধ্যে ‘ঠান্ডা লড়াই’ চলাকালীনও নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখেছিল সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। কিন্তু ইউক্রেনে রুশ হামলার পরই নিরপেক্ষ অবস্থানে ইতি টানে দুই ইউরোপীয় দেশ। ফলে স্বভাবিকভাবেই চাপের মুখে পড়েছে রাশিয়া। বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধে আশানুরূপ ফল পাচ্ছে না রাশিয়া। তাছাড়া, আমেরিকা ও পশ্চিমের আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে বিপাকে পড়েছে মস্কো। একইসঙ্গে, চিন ও ভারতের মতো ‘বন্ধু’ দেশগুলিও চাইছে যুদ্ধ বন্ধ হোক। তাই আপাতত নতুন কোনও ফ্রন্ট খুলতে চাইছে না পুতিন বাহিনী। ফলে কিছুটা সুর নরম করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।