সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজেদের জেদ বজায় রেখে ঠাকুমাকে বোঝাতে সক্ষম হলেও বাবার কাছে বেশ বকা খেলেন ব্রিটেনের ছোট রাজপুত্র-পুত্রবধূ। সোমবার স্যান্ড্রিংহাম এস্টেটে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ডাকা জরুরি বৈঠকে হ্যারি বুঝিয়ে দিলেন, তাঁরা স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে রাজকীয় তকমা ঝেড়ে ফেলতে চান। জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বুঝে নিতে চান, জীবনের প্রকৃত অর্থ। আর রানিও জানিয়ে দিলেন, তিনি ছোট নাতি-নাতবউকে তাঁদের পছন্দমতো জীবন বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেবেন না। তবে কয়েকটি শর্তও দিয়েছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
স্যান্ড্রিংহামে পরিবারের সকলকে নিয়ে রানির বৈঠকে কানাডা থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিয়েছেন প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান, যাঁকে ঘিরে মূলত সংসারে অশান্তির সূত্রপাত। বৈঠকে মত বিনিময়ের পর রানি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ”আমি এবং আমার গোটা পরিবার হ্যারি-মেগানের এই নতুন করে জীবন শুরু করার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাচ্ছি। যদিও আমরা ওদের রাজপরিবারের পূ্র্ণ সদস্য হিসেবে চাই। তবে ওদের আরও আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ভাবনাকে সম্মান জানাচ্ছি। ওরা আমাদের পরিবারের গুরুত্বপূ্র্ণ সদস্য। তাই ওদের জীবনের এই সন্ধিক্ষণে আমরা পাশে আছি। সাসেক্স এবং কানাডায় সুবিধামতো থাকুক হ্যারি-মেগান। এরপরও আমি বলছি, ওদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমাকে জানাতে।”
[আরও পড়ুন: ‘মোল্লাতন্ত্র নিপাত যাক’, সর্বশক্তিমান খামেনেইর বিরুদ্ধে গর্জে উঠল ইরানি জনতা]
যদিও এই বৈঠকে হ্যারি-মেগানের রাজকীয় উপাধি থাকবে কি না, সেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়নি বলে সূত্রের খবর। এই মুহূর্তে প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মর্কেল ‘ডিউক অ্যান্ড ডাচেস অফ সাসেক্স’ বলে পরিচিত। এর দৌলতে পাবলিক ফান্ডের ৫ শতাংশ তাঁদের প্রাপ্য। উপাধি এবং সেই প্রাপ্যও কি ছাড়তে হবে ব্রিটেনের ছোট রাজকুমারকে? এনিয়ে এখনও সম্ভবত রানি কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছননি। সূত্রের আরও খবর, ঠাকুমার দরদ দিয়ে নাতির যুক্তি বুঝলেও, বাবা প্রিন্স চার্লস খেপে লাল ছোট ছেলের উপর। কাউকে না জানিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া এবং এতদিন পারিবারিক আয়ে জীবনযাপন করার পর আচমকা পরিবার ত্যাগ কেন? এই প্রশ্নও ছেলের দিকে ছুঁড়ে দেন তিনি।
সত্যিই কি আত্মনির্ভরশীল হওয়ার লক্ষ্যে রাজ-পরিবার ত্যাগ নাকি দাদা-বৌদির সঙ্গে তীব্র ঝগড়াতেই এই বিচ্ছেদ? এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এক সংবাদমাধ্যমের দাবি, দাদা উইলিয়ামের সর্বক্ষণ কটাক্ষ নাকি হ্যারি-মেগানকে দূরে ঠেলে দিয়েছে। দাদাই নাকি ভাইকে পরিবার থেকে ছেঁটে ফেলতে চেয়েছে। যদিও এদিনের বৈঠকের এই তত্বকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন দুই ভাইই। তাহলে কি আপাত বিচ্ছেদ? নাকি তা স্থায়ী? এর এখনও কোনও মীমাংসা নেই।
[আরও পড়ুন: বড়সড় স্বস্তি পারভেজ মুশারফের, মৃত্যুদণ্ড বাতিল করল পাক আদালত]
অন্যদিকে, ব্রিটিশ রাজপরিবারের ছোট ছেলে সস্ত্রীক কানাডায় এসে থাকবেন। এই খবর পৌঁছেছে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কাছেও। আসলে কানাডায় মেগান মর্কেলের মা থাকেন। ছেলে আর্চিকে মায়ের কাছে রেখেই বড় করতে চায় মেগান। সেইসূত্রে তাঁর কানাডায় বাস। এবার প্রিন্স হ্যারিও পাকাপাকি বাস শুরু করলে, তাঁর জন্য আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা দরকার। আর তা নিয়েই চিন্তিত কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি জানিয়েছেন যে এ বিষয়ে তাঁর ব্রিটিশ রাজপরিবারের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। সূত্রের খবর, প্রিন্স হ্যারির খরচখরচা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে চান ট্রুডো।
The post মিলল ঠাকুমার অনুমতি, হ্যারি-মেগানের সিদ্ধান্তকে ঢোঁক গিলে সমর্থন ব্রিটিশ রাজপরিবারের appeared first on Sangbad Pratidin.