বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে ও আইনজীবী অনন্ত দেহাদরিকে আইনি নোটিস পাঠালেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সোমবার সামাজিক মাধ্যমে নোটিস পাঠানোর বিষয়টি জানান মহুয়া। সম্প্রতি, দুবের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলের এই সাংসদ। নির্বাচনী হলফনামায় দুবে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি করেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ।
এর পরেই বিতর্কের সূত্রপাত। পালটা এদিন বিজেপি সাংসদ কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরকে চিঠি দিয়ে মহুয়ার বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ, কৃষ্ণনগরের সাংসদ তাঁর পরিচিত ব্যবসায়ী হিরনানদানির গ্রুপকে লোকসভার ওয়েবসাইট ব্যবহারের জন্য শংসাপত্র দিয়েছিলেন। তাই বিষয়টি মন্ত্রক খতিয়ে দেখুক। এর পরেই বিজেপি সাংসদকে আইনি নোটিস পাঠান মহুয়া।
[আরও পড়ুন: আবগারি দুর্নীতি মামলায় এবার দল আপ কাঠগড়ায়! সুপ্রিম কোর্টে কী বলল ইডি-সিবিআই?]
রবিবার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত লোকসভার স্পিকার ওমপ্রকাশ বিড়লার কাছে মহুয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান যে, তৃণমূলের এই সাংসদ অর্থ ও উপহারের বিনিময়ে লোকসভায় আদানিদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছিলেন। পাশাপাশি লোকসভা থেকে আপাতত তাঁকে সাসপেন্ড করার দাবিও তোলেন নিশিকান্ত। একইসঙ্গে তৃণমূলের এই সাংসদের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে সিবিআইকে চিঠি দেন আইনজীবী অনন্ত দেহাদরি। বিজেপি সাংসদের এই অভিযোগের বিরুদ্ধে পালটা সরব হন কৃষ্ণনগরের সাংসদ।
এক্স হ্যান্ডেল তদন্তকে স্বাগত জানিয়ে চ্যালেঞ্জের সুরে মহুয়া (Mahua Moitra) লেখেন, “এই সব ভুয়ো ডিগ্রিওয়ালা এবং বিজেপির তথাকথিত প্রাজ্ঞদের বিরুদ্ধে বহু সুবিধা লঙ্ঘনের অভিযোগের বিচার বাকি আছে। আমার বিরুদ্ধে যে কোনও প্রস্তাব আপনারা সংসদে আনতে পারেন। তবে আশা করব তার আগে মাননীয় স্পিকার এই বকেয়া বিষয়গুলো মেটাবেন।” এর পর সোমবার মহুয়ার বিরুদ্ধে আইটি আইনে তদন্তের দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মন্ত্রীকে চিঠিও দেন নিশিকান্ত দুবে।
[আরও পড়ুন: ‘হৃৎস্পন্দন বন্ধ করব না!’ ২৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বার গর্ভপাতের আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টের]
বিজেপি সাংসদ দাবি করেন, তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাবে। সাংসদদের প্রতি মানুষের আস্থাও প্রশ্নের মুখে দাঁড়াবে। তৃণমূল সাংসদের আচরণকে অনৈতিক, বেআইনি ও দেশের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর বলেও দাবি করেন নিশিকান্ত দুবে। পালটা মহুয়া জানান, তিনি যেহেতু নিশিকান্ত দুবের মিথ্যা হলফনামা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাই বিষয়টি বিজেপি সাংসদকে বিচলিত করেছে। তাই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন মহুয়া। কৃষ্ণনগরের সাংসদের পাঠানো নোটিসে অভিযোগ করা হয়, তাঁকে ঘৃণা ও অশ্লীল ভাষায় বার্তা দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। এমনকী, তাঁর বাড়িতে ঢুকে সারমেয় ও বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী চুরি করা হয়। পরে অবশ্য সারমেয়টি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দ্বারস্ত হন মহুয়া মৈত্র।