সুকুমার সরকার, ঢাকা: পাকিস্তানি দখলদারদের হটিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়তে পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছিলেন বহু মহিলা মুক্তিযোদ্ধারাও। তবে তাঁদের ত্যাগ ও বলিদানকে স্বীকৃতি দিতে নারাজ মৌলবাদীরা। এবার মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যে নারীর মূর্তি নিয়ে বিরোধিতায় সরব তারা।
[শীঘ্রই চালু হতে চলেছে ঢাকা-গুয়াহাটি বিমান পরিষেবা]
নারী পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। এমন একটি ভাবনা দিতেই ‘স্বাধীনতা ৭১ তাড়াইল’ নামের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য গড়ে তুলছিলেন শিল্পী সুষেণ আচার্য্য। কিশোরগঞ্জ জেলার শিল্পীর এই ভাস্কর্য নিয়েই এখন তুঙ্গে বিতর্ক। কারণ তিনজন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে নারীর প্রতিকৃতি বদলে পুরুষের চেহারায দেওয়া হয়েছে। মৌলবাদীদের চাপের মুখেই এই কাজ তাঁকে করতে হয়েছে বলে জানান শিল্পী। উল্লেখ্য, এর আগেও কট্টরপন্থীদের আপত্তির কারণে ঢাকা হাইকোর্ট প্রাঙ্গন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় একটি ভাস্কর্য। ক্ষোভের সঙ্গে শিল্পী সুষেণ আচার্য্য জানান, “পুরো ভাস্কর্যটিই নতুন করে আবার গড়তে হয়েছে। আপত্তি হল সেখানে নারী থাকতে পারবে না। আমি অনেক চেষ্টা করেছি নারীর মূর্তিটি রাখার।” তিনি আরও জানান, শাড়ি পরানো নারী মূর্তিটিকে তাঁকে লুঙ্গি পরা পুরুষে পরিবর্তিত করতে হয়েছে। ফলে শিল্পকর্মটির মাধুর্য নষ্ট হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ভাস্কর্যটির দু’শ গজের মধ্যে একটি পুরোনো মাদ্রাসা ও দুটি মসজিদ রয়েছে। নারী মূর্তি নিয়ে আপত্তি তুলেছে তারাও। দারুল হুদা কাসেমুল উলুম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মৌলানা ফয়েজুদ্দিনের দাবি, ধর্মের দিক থেকে নারী মূর্তি শোভনীয় নয়। মানুষের পরিবর্তে অন্য কিছু গড়া হলে ভাল হত। এই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং শাসকদলের তাড়াইল উপজেলা আওয়ামি লিগের সভাপতি আজিজুল হক ভুইয়া জানান, স্থানীয়ভাবে এ ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় তারা নকশায় কিছুটা পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। যাই হোক না কেন সব মিলিয়ে ধর্মের নাম বাংলাদেশে ক্রমশ অসহিষ্ণুতা বাড়ছে তা স্পষ্ট।
[OBOR প্রকল্পে নয়া বাধা আইএস জঙ্গিরা, প্রবল বেকায়দায় বেজিং]
The post মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যে নারী, মৌলবাদীদের রোষে শিল্পী appeared first on Sangbad Pratidin.