বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ঈশ্বর কি শুধু একজন শিল্পপতির উন্নতি করার নির্দেশ দিয়েছেন? তা না হলে আমাদের 'নন বায়োলজিক্যাল' প্রধানমন্ত্রী শুধু গৌতম আদানির উন্নতির জন্য সারাদিন ব্যয় করেন কেন? সোমবার হরিয়ানায় প্রচারে গিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে বিঁধলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে গরিব মানুষের নাম বাদ দিচ্ছে। সেই সঙ্গে শিক্ষিত বেকারদের সঙ্গে মোদি সরকার প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। কুড়ি লক্ষ সরকারি চাকরির শূন্যপদ থাকলেও নিয়োগ হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী হরিয়ানায় প্রচারে এলেও রাজ্যে মানুষের সমস্যাগুলো এড়িয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন রাহুল গান্ধী।
হরিয়ানায় জয়ের গন্ধ পাচ্ছে কংগ্রেস। দশ বছর পর হাত শিবির উত্তর ভারতের এই রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরতে পারে, বলেছে একাধিক প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষা। আভাসকে বাস্তবে রূপ দিতে পথে নামছেন স্বয়ং রাহুল গান্ধী। বোন তথা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে পাশে নিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা সোমবার থেকে চারদিনের বিজয় সংকল্প যাত্রা শুরু করছেন। আম্বালা ক্যান্টনমেন্টের নারায়ণগড় বিধানসভা এলাকা থেকে যাত্রা শুরু করেন রাহুল। সন্ধ্যায় পৌঁছন কুরুক্ষেত্রে।
হরিয়ানায় বিজেপির জোট সরকারের সংকট ঘনীভূত হতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল পদ্ম শিবিরে অশান্তি তীব্র হচ্ছে। তা তীব্রতর হয় মুখ্যমন্ত্রী বদলকে কেন্দ্র করে। মুখ্যমন্ত্রী না করায় কার্যত বসে গিয়েছেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ। দলীয় কোন্দল এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে রবিবার দলের প্রথম সারির দশ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। শাসক শিবিরের অশান্তি সত্ত্বেও স্বস্তিতে নেই কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার তিন নেতাকে নিয়ে হাত শিবিরও দ্বিধাবিভক্ত। এই পরিস্থিতিতে দলকে ঐক্যবন্ধ করার লক্ষ্যে ময়দানে নামছেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর হরিয়ানা ও জম্মু-কাশ্মীরে প্রথম দলকে জেতানোর চ্যালেঞ্জ রাহুলের কাঁধে।
জম্মু ও কাশ্মীরে ত্রিমুখী লড়াইয়ে কংগ্রেসের ক্ষমতায় ফেরার আশা আছে। অন্যদিকে, হরিয়ানাতেও কংগ্রেস ভালো অবস্থায়। যদিও দলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা, ওয়ার্কিং কমিটির দুই সদস্য রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এবং কুমারী শৈলজা প্রকাশ্যেই হরিয়ানার কুর্সিতে বসার বাসনা ব্যক্ত করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন। হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি রাহুলও। তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সুরজেওয়ালা এবং শৈলজাকে টিকিট না দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। দু’জনেই এখন সাংসদ। শৈলজা লোকসভার, সুরজেওয়ালা রাজ্যসভার। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি জানিয়ে দেয় সাংসদদের বিধানসভায় টিকিট দেওয়া হবে না।