সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অন্দরের বিবাদ প্রকাশ্যে এনে দলের ক্ষতি করবেন না। বরদাস্ত করা হবে না। শনিবার প্রকাশ্যেই দলের নেতাদের সাবধান করে দিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। রাহুলের বক্তব্য, কোনও অভিযোগ থাকলে দলের অভ্যন্তরে তা নিয়ে সরব হওয়া উচিত। প্রকাশ্যে মুখ খুলে দলের সমস্যা বাড়ানোটা সমর্থনযোগ্য নয়।
শনিবার তেলেঙ্গানার এক অনুষ্ঠানে প্রাক্তন কংগ্রেস (Congress) সভাপতি বলেন, “যদি আপনাদের কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে দলের অন্দরে বলুন। কিন্তু কেউ যদি প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমে কিছু বলেন, তাহলে তিনি দলের ক্ষতি করছেন। আর সেটা বরদাস্ত করা হবে না।” দিন কয়েক আগে সোনিয়া গান্ধীও (Sonia Gandhi) একই ধরনের বার্তা দিয়েছিলেন। কংগ্রেস সভানেত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, সবস্তরের কংগ্রেস কর্মীদের এক হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে হবে।
[আরও পড়ুন: ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান লুট’, রান্নার গ্যাসের দামবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রকে একহাত নিলেন মমতা]
আসলে দেশজুড়ে কংগ্রেস বহরে যত সংকুচিত হচ্ছে, ততই বাড়ছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। হেন কোনও রাজ্য নেই, যেখানে দলের একাধিক গোষ্ঠী নেই। সর্বভারতীয় স্তর থেকে শুরু করে একেবারে ব্লকস্তর পর্যন্ত গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আর লবিবাজিতে ক্ষতবিক্ষত কংগ্রেস। সর্বভারতীয় স্তরে যেখানে জি-২৩ গ্রুপের নেতারা দিনরাত গান্ধী পরিবার এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠদের বাপ-বাপান্ত করছেন, রাজ্য ইউনিটগুলিতেও তেমন ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এমন ছোটছোট গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। কোথাও তাঁরা প্রকাশ্যে একে অপরের বিরোধিতা করছেন, কোথাও চলছে ঠান্ডা লড়াই। ছত্তিশগড়ে ভুপেশ বাঘেল বনাম টি এস সিং দেও (TS Singh Deo), রাজস্থানে পাইলট (Sachin Pilot) বনাম গেহলট, কর্ণাটকে সিদ্ধারামাইয়া বনাম ডিকে শিবকুমার, হরিয়ানায় রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা, কুমারী শৈলজা গোষ্ঠী বনাম হুডা গোষ্ঠী, যে তেলেঙ্গানায় রাহুল রয়েছেন সেখানে রাজ্য সভাপতি রেবন্ত বনাম আদি কংগ্রেসিদের গোষ্ঠী, এমন উদাহরণ সব রাজ্যেই কমবেশি পাওয়া যাবে।
[আরও পড়ুন: বাড়ছে রাজনীতিতে যোগের জল্পনা? শাহর সঙ্গে নৈশভোজের পরদিনই এক মঞ্চে সৌরভ-ফিরহাদ]
এই পরিস্থিতিতে রাহুলের এই বার্তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আসলে রাহুল গান্ধী দীর্ঘদিন ধরে আড়াল থেকে কংগ্রেসের সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। অথচ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে রাজি নন তিনি। কংগ্রেস সূত্রের খবর, দলের সভাপতি পদে ফেরার প্রস্তাব বারবার তাঁকে দেওয়া হলেও তিনি তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। তবে শনিবার যেভাবে প্রকাশ্যে রাহুল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রোখার বার্তা দিলেন, তারপর ফের প্রশ্ন ওঠা শুরু করেছে, আগামী দিনে কি ফের সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ভাববেন রাহুল?